× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

ভাঙা সেতুতে ভোগান্তির পাঁচ বছর!

সম্পাদক

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৪৭ এএম

ভাঙা সেতুতে ভোগান্তির পাঁচ বছর!

যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করার প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে গঠিত সংযোগই সেতু। একটি সেতুর মাধ্যমে সাধারণত সংযোগ ঘটানো হয় নদনদী, খালবিলের দুই পাড়ের। সেতুর বহুমুখী ব্যবহারে পাল্টে যায় নির্দিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থান। সেতু শুধু স্থানিক সংযোগই ঘটায় না, স্থানীয় অর্থনীতিতেও গতি সঞ্চার করে। ফলে আপাতদৃষ্টে সেতু শুধু একটি সংযোগকাঠামো হলেও এর গুরুত্ব অনেক। কিন্তু সেই গুরুত্বকেই কখনও কখনও খুবই অবহেলার দৃষ্টিতে দেখার নজিরও রয়েছে। তেমনই একটি উদাহরণ তৈরি হয়েছে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায়। ২৮ নভেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ এলাকার গুনারিতলা-ভেলামারি খালের ওপর নির্মিত সেতুটি পাঁচ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে। সেতুটির দুই পাশ ও নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিনেও সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় এর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন আশপাশের অন্তত পাঁচ গ্রামের বাসিন্দারা।

পাঁচ বছর ধরে একটি সেতু ভেঙে পড়ে আছে! খবরটিই বিস্ময়ের। কারণ বর্তমান সরকার যেখানে সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে উদারহস্ত, অনেক বৃহৎ প্রকল্পসহ কয়েক হাজার সেতু নির্মিত হয়েছে এ সরকারের আমলে; সেখানে এরকম একটি সেতুর দীর্ঘদিন ভেঙে পড়ে থাকার খবর বেদনাদায়ক। কারণ স্থানীয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হলে সেতু সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের জন্য এত দীর্ঘ সময় লাগার কথা নয়। যদিও প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদকের কাছে উপজেলা প্রকৌশলী বলেছেন, ‘নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ঢাকা এলজিইডিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ কিন্তু সেই প্রস্তাবটি যে যথাসময়ে পাঠানো হয়নি, তা স্পষ্ট দীর্ঘদিনেও সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করায়। একটি জনপদের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু সংস্কারে পাঁচ বছর অনেক লম্বা সময়। অথচ এ লম্বা সময় পেরোলেও সেতুটি সংস্কারের মুখ দেখেনি। এ ভাঙা সেতুর কারণে নানাভাবে দুর্ভোগে পড়ছে স্থানীয় মানুষ। যার প্রভাব পড়েছে তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানের অর্থনীতিও। অথচ সেতুটি সংস্কারে উদ্যোগ নেই, পুরোটা ভেঙে নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগও গত পাঁচ বছরে নজরে আসেনি স্থানীয় প্রশাসনের। বিষয়টি দুঃখজনক ও পীড়াদায়ক।

১৯৯১-১৯৯২ অর্থবছরে উপজেলার গুনারিতলা-ভেলামারি খালের ওপর ৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০১৯ সালের বন্যায় সেতুটির দুই পাশ ও নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে মাঝখানে ৫-৬ ফুট দেবে যায়। এর পর থেকে এটি চলাচলের অনুপযোগী। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় গুনারিতলা, ভেলামারি, কুলচুরি, জটিয়ারপাড়া, জোড়খালিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ১৫-২০ হাজার মানুষকে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দুই পারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এতে এলাকার নানা অংশের মানুষ যেমন অসুবিধায় পড়েছে, তেমনই চরম বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। প্রবীণ ও রোগীদের হাসপাতালে নিতেও এলাকাবাসীকে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। সেতুটির পশ্চিমপাড়ের মানুষের বেশিরভাগ ফসলি জমি পূর্বপাড়ে। ফলে আবাদকৃত ফসল বাড়ি নিয়ে আসতে তাদের দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে। সেতুটি দেবে যাওয়ায় পানির স্বাভাবিক গতিও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আগে যেখানে সেতু ব্যবহার করে মানুষ উপজেলা সদরে ২০-২৫ মিনিটে পৌঁছে যেত, এখন তাদের যেতে হচ্ছে অনেক ঘুরপথে। এতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে। গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে, সেখানে সেতুটি দ্রুততম সময়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়াই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবি ও আবেদন কোনো কাজেই আসেনি। এমন দুরবস্থার নেপথ্যে স্থানীয় প্রশাসনের ঢিলেমি আর অনীহাকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি।

সেতু ছাড়া এপার-ওপার হওয়া মানুষের জন্য কষ্টকর। এলাকার এ সেতুটিই সবাই ব্যবহার করে। সেতু ব্যবহারের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ অনেক অল্প সময়ে শহরে যেতে পারত। এ সেতুটির ওপর বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সেই সেতুটি পাঁচ বছরে ধরে ভেঙে পড়ে আছে। স্বাভাবিকভাবেই এলাকাবাসী দ্রুত সেতুটি অপসারণ ও পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছে। আমরাও তাদের দাবির প্রতি সহমত পোষণ করি। অবিলম্বে সেতুটি সংস্কারের যে দাবি এলাকাবাসী তুলেছে, আমরা সে দাবি যথার্থ মনে করি। আর সেতুটি সংস্কার সম্ভব না হলে দ্রুততম সময়ে পুনর্নির্মাণের দাবি জানাই। সেই সঙ্গে প্রত্যাশা করি, এলজিইডিতে পাঠানো প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদন হবে এবং অনুমোদিত প্রকল্পের কাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা