× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

পোশাকশিল্প খাতে স্বস্তি স্থায়ী হোক

সম্পাদক

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৩৭ পিএম

পোশাকশিল্প খাতে স্বস্তি স্থায়ী হোক

মজুরি-বঞ্চনার অভিযোগ উত্থাপন করে বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের কাজে যোগদানের বিষয়টি স্বস্তির। আমরা জানি, নতুন মজুরি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মজুরি নিয়েও আন্দোলনকারীদের কোনো কোনো অংশ প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার বিজিএমইএর সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের সাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে সব পক্ষের জন্যই ইতিবাচক বার্তা বহন করে। সাম্প্রতিক শ্রমিক আন্দোলনে হতাহতের মতো মর্মন্তুদ ঘটনা আমাদের ব্যথিত না করে পারে না। একই সঙ্গে কারখানায় ভাঙচুরসহ কিছু জায়গায় আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্তও আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারেনি। কিন্তু সব শেষে উৎপাদনের চাকা গতিশীল করার গুরুত্ব অনুধাবন করে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আমরা শ্রমিকদের অভিনন্দিত করি। সব পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্কের ইতিবাচক ধারাই কেবল সংশ্লিষ্ট সবার স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত তিন দশকে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৪ গুণ। কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি সেই হারে কতটা বেড়েছে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যাদের শ্রমে-ঘামে শিল্পটি বিকশিত হয়েছে, তাদের মনে কোনো বঞ্চনা কিংবা অসন্তোষের আগুন জ্বলুক এমনটি শুভবোধসম্পন্ন কারোরই কাম্য হতে পারে না। আমরা জানি, দেশের পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক উন্নত। পরিবেশবান্ধব উৎপাদনব্যবস্থার জন্য বিশ্বস্বীকৃত সবুজ কারখানার সনদ পেয়েছে দুইশটি তৈরি পোশাকশিল্প কারখানা। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ টেকসই কারখানা নির্মাণের প্রচেষ্টায় বড় এক মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এই অর্জন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়া এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের প্রচেষ্টায় নিঃসন্দেহে বড় মাইলফলক। আমরা এ-ও জানি, গ্রিন কারখানা অর্থাৎ সবুজ কারখানার সনদ অর্জন করতে হলে সংশ্লিষ্ট কারখানাকে কার্বন নিঃসরণ কমানো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার সীমিতকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কারখানার অভ্যন্তরীণ পরিবেশ উন্নত করাসহ বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে হয়। এক্ষেত্রে মূলত শিল্পমালিকদেরই দায়বদ্ধতা বেশি। অনেকেই এক্ষেত্রে সফল হয়েছেন এবং অন্যদের প্রচেষ্টাও অব্যাহত আছে, এ-ও শিল্পের জন্য সুখকর বার্তা।

সন্দেহ নেই আমাদের তৈরি পোশাকশিল্প খাতের শুরুটা গৌরবময়। তারপর পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তৈরি পোশাক খাতের অর্জনগুলো দৃশ্যমান হয়েছে। যেকোনো দেশে যখন শিল্পের বিকাশ হতে থাকে তখন সরকারের তরফে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ নীতি ঠিক করে দেওয়া হয়। আমরা জানি, তৈরি পোশাকশিল্প খাতে ভিয়েতনামের যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এর পেছনে মুখ্যত ভূমিকা রেখেছে নীতিকাঠামো। বিদ্যমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে আমাদেরও নীতিকাঠামোর ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। শিল্পমালিকরা যেমন বায়ারদের কাছ থেকে কারখানাগুলোর মান উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে পণ্যের উপযুক্ত দাম নেবেন তেমনি শিল্পমালিকরাও যাদের শ্রমে-ঘামের শিল্পের বিকাশ ঘটাচ্ছেন কিংবা লাভের খতিয়ান স্ফীত করছেন, তাদের ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে। সরকারকেও দিতে হবে যথাযথ সহযোগিতা। কারণ আমাদের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস এই শিল্প খাত। কাজেই শিল্পের বিকাশ কিংবা এগিয়ে চলার পথ মসৃণ রাখতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই পালন করতে হবে দায়িত্বশীল ভূমিকা।

আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, অতীতে তৈরি পোশাক খাতের অসন্তোষ পুঁজি করে কোনো কোনো মহল নিজেদের ফায়দা লুটতে চেয়েছে। আমরা মনে করি, সরকারকে এ ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগী থাকা বাঞ্ছনীয়। একই সঙ্গে শ্রমিকদেরও তাদের দায়িত্বশীলতার কথাটি স্মরণে রাখতে হবে। দেশে কর্মসংস্থানের বিশেষ করে নারীর কর্মক্ষেত্রের পরিসর এই শিল্পের মাধ্যমে অনেক বিস্তৃত হয়েছে। কাজেই সর্বাবস্থায় শিল্পের সুরক্ষার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শিল্পের সুরক্ষাতেই সব পক্ষের স্বার্থরক্ষা। আমরা নিকট অতীতেও এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে এ কথা বলেছি। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি এবং সুচারু ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোনো শিল্প খাতই টেকসই হতে পারে না। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করার দায় বর্তায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট শিল্পমালিকদের ওপর। আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই কমবেশি জানা। স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রত্যেকের যথাযথ দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়েই বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাক খাতে প্রতিযোগিতা ক্রমাগত বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটেই তৈরি পোশাকশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে দূরদর্শী পরিকল্পনার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করি। স্বস্তি নিশ্চিত করতে মালিক-শ্রমিক পক্ষের হৃদ্যতা সর্বাগ্রে জরুরি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা