× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দিবস

দর্শন জীবনের জন্য

শহিদুল ইসলাম

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৩০ পিএম

দর্শন জীবনের জন্য

পৃথিবীর অস্তিত্ব ও ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষ বরাবরই চিন্তিত। চিন্তার এ অবস্থান দার্শনিক প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু। পদার্থবিজ্ঞান সচরাচর পদার্থের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে চায়। আধিভৌতিক কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকলেও তা নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই। বিজ্ঞানী নিউটন বলেছেন, শক্তির কোনো ধ্বংস নেই। এক শক্তি আর এক শক্তিতে রূপান্তর হয়। জগৎ ধ্বংস হওয়ার পর বিশ্বচরাচর শেষ হবে না। বরং নতুন রূপে তার যাত্রা হবে। দার্শনিক প্রশ্নে মানুষের মন ও সত্তার নৈতিকতার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। দর্শনের মাধ্যমে চিন্তার সঠিক ধারাটি বোঝা সহজ হয়। কিন্তু মানুষ এখনও সত্য ও সহজের পথে না গিয়ে বৈষম্য, নিপীড়ন, শঙ্কার পথ বাছাই করছে। সমাজ যদি মুক্তি না পায় তাহলে ধরে নিতে হবে জ্ঞানটা সত্যের হয়নি। এ সত্য নিয়ে দার্শনিক মহলে ব্যাপক আলোচনা হতে দেখা যায়। হেগেল, ব্রাডলি, বোসাঙ্কো প্রমুখ ভাববাদী মনে করেন, সত্তা হলো পরম সমগ্র।

দার্শনিক সি এস পার্স, উইলিয়াম জেমস, এফ সি এস শিলার ও জন ডিউই সত্যের প্রকৃতি পরীক্ষা হিসেবে প্রয়োগবাদের কথা প্রচার করেছেন। সত্যতা নিয়ে শুধু দার্শনিক মহলে আলোচনা হয় না, জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় এগুলো আলোচ্য বিষয়। বিজ্ঞান, ধর্ম, সাহিত্য ও সাধারণ জীবনযাপনে জ্ঞান ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। বিজ্ঞানের জ্ঞান পরিবর্তনশীল। বিজ্ঞানীদের ভেতর মতপার্থক্য থাকার কারণে ধ্রুব সত্য আবিষ্কার করতে গিয়ে অনেক সময় মিথ্যার আলখাল্লা পরে আপন বিশ্বাসকে উঁচিয়ে তোলা হয় । তখন শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানের ব-ও অবশিষ্ট থাকে না। নিউটন মনে করতেন জড় হলো নিশ্চল। কিন্তু বর্তমানে জড়গতিও শক্তির আধার এবং সদাপরিবর্তনশীল। মানুষের দৈনন্দিন জগতের সত্য ও মিথ্যা, অনেক সময় আংশিক সংশয়পূর্ণ ও অনিশ্চিত বলে প্রমাণিত হয়। তাই দর্শন যে ধ্রুব সত্য খুঁজে বেড়ায় তা খুঁজে পাওয়া কঠিন। টলেমি ভূকেন্দ্রিক মত প্রচার করেছিলেন। তখন মানুষ এ মত সত্য বলে মনে করেছিল। কিন্তু কোপার্নিকাস সৌরকেন্দ্রিক মত প্রচার করলে সেটা সত্য রূপে প্রমাণিত হয়। কিন্তু কোনো কিছু স্থির নয়। মহাকাশে গ্রহ-নক্ষত্রগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে সাঁতার কাটছে। জড়বস্তুর ক্ষুদ্র কণাকে অণু বলা হতো। কিন্তু অণু ভাঙলে পরমাণু পাওয়া যায়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড পরমাণুর বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, পরমাণু মোটেই অবিভাজ্য নয়, স্থিরও নয়। অতি আধুনিককালের গবেষণায় জড়পদার্থের ভেতর ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন ও পজিট্রন নামক বৈদ্যুতিক পদার্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে এই ভাগেরও ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ পাওয়া যাচ্ছে এবং সামনে হয়তো আমরা আরও দেখব।

মানবসভ্যতার ইতিহাসে শান্তি প্রত্যাশায় দার্শনিকদের চিন্তা-চেতনা ও অবদানের কথা স্বীকার করে ইউনেস্কো ২০০২ সালে সর্বপ্রথম ‘বিশ্ব দর্শন দিবস’ ঘোষণা করে। ২০০৫ সাল থেকে নভেম্বরের তৃতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব দর্শন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাই এবার বিশ্ব দর্শন দিবস ১৬ নভেম্বর। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দর্শনের প্রয়োজনীয়তা কম নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষিত করতে গিয়ে দর্শনের ব্যবহারের কথা অনেকেরই জানা। ইয়ুভা নোয়াহ হারিরি তার ‘টোয়েন্টি লেসন্স ফ্রম দি টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি’তে জানিয়েছিলেন, দর্শন ভবিষ্যতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা দর্শন মানুষকে চিন্তার সঠিক কাঠামোর সঙ্গে পরিচিত করুক। মানুষ ভাবুক।

  • প্রভাষক, দর্শন বিভাগ, সরকারি ইস্পাহানী ডিগ্রি কলেজ, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা