× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সীমানা পেরিয়ে

আরব-আফ্রিকা সামিট

দিয়া এদিন সাইদ বামাখরামা

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০০:২৬ এএম

ছবি: প্রবা

ছবি: প্রবা

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলতি সপ্তাহে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সভা আয়োজিত হলো। আরব-আফ্রিকান সামিট ও সৌদি-আফ্রিকান সামিট। দুই অঞ্চলের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এই দুটি সামিট আয়োজিত হয়েছে। এই দুই সামিটের মাধ্যমে দুই অঞ্চলের নানা সমস্যা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সমাধান করা সম্ভব হবে। দুই অঞ্চলের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কম নয়। সৌদি আরবের প্রায় অর্ধেক মানুষই আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। অন্যদিকে আফ্রিকার এক তৃতীয়াংশই আরব। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আরব উপদ্বীপ একসময় আফ্রিকার অংশ ছিল। পরে ভৌগোলিক বিভাজনের পর দুই অঞ্চল আলাদা হয়ে যায়। আরব চিন্তাবিদ ড. আলী আল মাজরুইয়ের মতে, ‘আরব ও আফ্রিকান অঞ্চল একসময় একই মহাদেশীয় অঞ্চলে ছিল। পরে উনিশ শতকে সুয়েজ খাল খননের পর লোহিত সাগর সৃষ্টির পর দুই অঞ্চল আলাদা হয়ে যায়।

আল মাজরুই এফ্রাবিয়া নামে একটি মডেলের মাধ্যমে এই ভৌগোলিক সম্পর্ক দেখিয়েছেন। মডেলটি একাধিক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল তার মধ্যে এশিয়া অঞ্চলে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত বাসিন্দাদের গণনা করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, আফ্রিকা নামটি বর্বর ভাষা থেকে উদ্ভূত। আধুনিক তিউনিসিয়া অঞ্চলের ভাষা এটি। অর্থাৎ অতীত সূত্র ধরে এই মহাদেশের নাম আফ্রিকার আরব বাসিন্দা ধারণার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আল মাজরুই ইতিহাসের বিভিন্ন সময় আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপের অভিবাসনের চিত্রও দেখিয়েছেন।

আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে আরবি ভাষার ব্যবহার দুই অঞ্চলের নিবিড় সম্পর্কের ঘনিষ্ঠ প্রমাণ। আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে সোয়াহিলি ভাষা বেশি ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমে ব্যবহৃত হয় হাওসা। এই দুটি ভাষার সঙ্গে আরব ও ইসলামের যোগসূত্র রয়েছে। আফ্রিকার সঙ্গে আরব উপদ্বীপের ভাষাগত সম্পর্ক ইসলামেরও বহু আগ থেকে রয়েছে। ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, সেমিটিক ভাষা প্রথমে আফ্রিকায় পৌঁছার পর আরব উপদ্বীপে পৌঁছেছিল কি না।

আল মাজরুই মূলত ভৌগোলিক, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন থেকে এই দুই অঞ্চলের নতুন সম্পর্ককে বিচার করতে চেয়েছেন। তার ধারণা, নতুন সম্পর্কের মাধ্যমে পৃথিবীতে ভিন্ন পথে চালনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আরব-আফ্রিকান সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ে ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। ১৯৬০ সালে আরব-আফ্রিকান সম্মিলিতভাবে উপনিবেশিক শক্তির সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছিল। তবে পরে এই সম্পর্কের অবনতিও ঘটেছে। মূলত রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ এই অবনতির জন্য দায়ী। আরব অঞ্চলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের মধ্যে দূরদৃষ্টির অভাব থাকায় দুই অঞ্চলের মধ্যে সম্পর্কের ক্রমান্বয়ে অবনতি ঘটেছে। বিগত ৩৬ বছরে দুই অঞ্চলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত না হওয়া এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ১৯৭৭ সালে আরব-আফ্রিকান সামিটের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আরব লিগ ও অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিটি তখন ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের সহানুভূতি ও সমর্থন জানিয়েছিল। ২০১০ সালে লিবিয়ায় দ্বিতীয় সামিট আয়োজিত হয়।

সৌদি আরবের সঙ্গে আফ্রিকার সম্পর্ক বহু পুরোনো। সৌদি রাজ ফয়সাল ১৯৬০-৭০-এর দিকে একাধিক সফর করেছিলেন। আর প্রচেষ্টায় সেখানে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও কেএসরিলিফ প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই অঞ্চলের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে এবং কূটনৈতিক উদ্যোগ রয়েছে। আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের ভূমিকা অপরিসীম। দুই বছর আগে তারা সোমালিয়া, মালি, জিবুতির সঙ্গে পারস্পরিক আদান-প্রদানমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সৌদি আরব ইতোমধ্যে আফ্রিকান অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের কাজে এগিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ইসলামি সংস্থার ভূমিকাও রয়েছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন ফয়সালের ভিশন ২০৩০ শুধু আঞ্চলিক নয়। এর বৈশ্বিক পরিধিও রয়েছে। এর লক্ষ্যও আলাদা। সারা বিশ্বকে সংযুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে এখানে। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় জিবুতি আরব উপদ্বীপ এবং আফ্রিকা অঞ্চলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না, জিবুতিতে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্যিক অঞ্চল রয়েছে। এই বাণিজ্যিক অঞ্চল ব্যবহারে সৌদি বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন প্রকল্প সহজে স্থানান্তর করা যাবে। আরব-আফ্রিকান সামিট এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ।


  • সৌদি আরবে নিযুক্ত জিবুতির রাষ্ট্রদূত

আরব নিউজ থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ : আমিরুল আবেদিন

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা