পরিপ্রেক্ষিত
মো. খসরু চৌধুরী
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩ ১১:২৯ এএম
রাজধানীতে গাড়ি
ছুটবে অন্তত ৮০ কিলোমিটার গতিতে। স্বপ্ন নয়, সত্যি হতে যাচ্ছে। খুলে যাচ্ছে ঢাকা
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে ফার্মগেট
অংশ। প্রকল্পটি রাজধানীর যানজট কমাতে ভূমিকা রাখবে। কোনো সিগন্যাল ছাড়াই দিনে
অন্তত চলাচল করবে ৮০ হাজার যানবাহন। সময়ের সঙ্গে বাঁচবে কর্মঘণ্টাও। কমবে পণ্য
পরিবহন খরচ; যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে। বর্তমান সরকারের
যোগাযোগব্যবস্থায় উন্নয়নের আরেকটি মাইলফলক ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালসড়ক)। পুরো
অংশের নির্মাণ সম্পন্ন হলে মাত্র ২০ মিনিটে উত্তরা থেকে কুতুবখালী দিয়ে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওঠা যাবে।
রাজধানীর আলাদা
বৈশিষ্ট্য থাকে। রাজধানীতে নাগরিকসুবিধা থাকে সুবিস্তৃত ও বহুমুখী।
যোগাযোগব্যবস্থা হতে হয় বহুমাত্রিক। আবার শহর থেকে শহরের উপকণ্ঠ ও শহরতলিতে নিত্য
যাতায়াতের সুবিধাও থাকতে হয়। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে
রাজধানী ঢাকার রূপবদল ঘটেছে। হয়েছে উড়ালসড়ক, যুগান্তকারী মেট্রোরেল। এখন উদ্বোধন হতে
চলেছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীতে যত সমস্যা, তার মধ্যে যানজট সবচেয়ে
ভোগান্তিকর। রাজধানীর অসহনীয় যানজটে কেবল জনদুর্ভোগই বাড়ছে না, দেশও
অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে বর্তমান
সরকারের শাসনামলে ঢাকায় একেকটি উড়ালসড়ক হয়েছে আর ঢাকাবাসীর চলাচলের চিত্রও
পাল্টেছে। যাতায়াত এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ।
আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে বঙ্গবন্ধুর
স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকার
ক্ষমতাগ্রহণের আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা অনেক আগেই পূরণ করেছে। গুণগত ও
সংখ্যাগত দুই দিক থেকেই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা
প্রশংসার দাবি রাখে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে, আমরা বাইরে রপ্তানিও করতে
পারি। দেশে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়েছে। আইটি
সেক্টর আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এসব ইতিবাচক পরিবর্তন অব্যাহত রাখতে
পারলে অচিরেই সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
শিক্ষায়
বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বছরের প্রথম দিনেই বিনামূল্যে সব পাঠ্যবই পাচ্ছে
শিক্ষার্থীরা। আগে মেয়েরা পড়াশোনায় অনগ্রসর ছিল, এখন উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রণোদনার
কারণে মেয়েদের শিক্ষিত করার ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতনতা বেড়েছে এবং মেয়েরাও
শিক্ষাগ্রহণে আগ্রহী হয়েছে। দেশপ্রেমী প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের কষ্ঠার্জিত
উপার্জন দেশে পাঠাচ্ছে। বাড়ছে রেমিট্যান্স, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ হচ্ছে সুনিশ্চিত।
মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। একসময় বাংলাদেশ
এলডিসিভুক্ত ছিল। বলা হতো অনুন্নত দেশ, তারপর বলা হতো উন্নয়নকামী দেশ। নিম্ন বা
গরিব দেশ থেকে এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে বর্তমান
সরকারের বড় অবদান রয়েছে। আমরা যদি দক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে পারি তাহলে রেমিট্যান্স
আরও বাড়বে। গ্যাস-বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারলে শিল্পকারখানা আরও গড়ে উঠবে,
বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ দৃশ্যমান।
একসময় বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলত, আজ তারাই দেশের উন্নয়ন নিয়ে প্রশংসা
করে। এটাই আওয়ামী লীগের অর্জন। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক
রেখে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে যে স্বপ্ন দেশের মানুষকে
দেখিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ লাভ করেছে।