× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভালো উদ্যোগকে বিতর্কিত করছে কারা

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪০ পিএম

মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ফাইল ফটো

মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ফাইল ফটো

ভালো কাজ, ভালো উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, সরকারের উন্নয়ন এবং দূরদর্শী প্রকল্পগুলোকে বিতর্কিত করতেই যেন একশ্রেণির মানুষ অপেক্ষা করে আছে। নিকট অতীতে একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মতো সুদূরপ্রসারী ও উপকারী প্রকল্পগুলোতে অসাধুদের কালোথাবার স্পর্শ পড়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এবার মডেল মসজিদ প্রকল্পকেও বিতর্কিত করে তুলেছে প্রকল্পে নয়ছয়। দেশে যখন জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করে ধর্মের নামে একশ্রেণির অসাধু মানুষ সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, তখনই ইসলামের সম্প্রীতি ও আলোয় জীবনযাপনের জন্য দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা বিকাশের অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন। এজন্য ২০১৭ সালে একনেক সভায় অনুমোদিত হয় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এই মসজিদগুলো ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯-এর ডিসেম্বর মেয়াদে ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের কথা। বিদেশি সহায়তা না আসায়, প্রথমে ২০১৮ সালে এবং পরে ২০২১ সালে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় উভয়ই বাড়ানো হয়। ইতোমধ্যে ২শ মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ শেষে সেগুলো উদ্বোধনও করা হয়েছে। কিন্তু নির্মিত ও নির্মাণাধীন মডেল মসজিদগুলোতে যথাযথভাবে কাজ করা হয়নি- এমন অভিযোগ উঠেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট টেকনিক্যাল কনসালট্যান্টস (প্রা.) লিমিটেডের প্রতিবেদনে। ১ আগস্ট প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত ‘মডেল মসজিদে মডেল অনিয়ম’ শীর্ষক খবর থেকে জানা যায়, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫টি নমুনা মডেল মসজিদ পরিদর্শন করে তাদের নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন দিয়েছে। যাতে উঠে এসেছে মডেল মসজিদ নির্মাণে অনিয়মের ভয়াবহ চিত্র।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোথাও মডেল মসজিদের অধিকাংশ কাঠের দরজাই ত্রুটিপূর্ণ। ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের নিম্নমানের দরজা। শঙ্কা রয়েছে ঝড়-বৃষ্টিতে জানালার গ্লাস খুলে পড়ার। এমনকি মসজিদ ভবনের বৈদ্যুতিক কাজের মানও সন্তোষজনক নয়। আবার কোথাও কোথাও এরই মধ্যে পিলার, দেয়াল ও মিনারে ফাটল ধরার কথাও বলা হয়েছে। এমনকি যে পিলারগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদ, সেগুলোতেও ভয়াবহ ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে কমিটি। কোথাও মানা হয়নি ছাদের ঢালাইয়ে যথাযথ পুরুত্ব। জানালার গ্রিলও নির্ধারিত মানদণ্ডের নয়। এমনকি কোথাও কোথাও গাঁথুনিতে ব্যবহৃত ইটের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শুধু নির্মাণসংক্রান্ত ত্রুটিই নয়, গাফিলতি রয়েছে মসজিদ পরিচালনা নিয়েও। এসব মসজিদের আওতায় শিক্ষার্থীদের কুরআন হেফজ ও হজযাত্রীদের ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করার কথা বলা থাকলেও তা যেমন হয়নি, তেমনি স্থানীয় পর্যায়ে দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রমও পরিচালনা হয় না। অনেক মডেল মসজিদের সঙ্গে নেই সংযোগ সড়ক। অনেক স্থানে রয়েছে পর্যাপ্ত জনবল এবং মনিটরিংয়ের অভাব।

যদিও মডেল মসজিদ প্রকল্পে অনিয়মের বিষয় নাকচ কর প্রকল্প পরিচালক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছেন, ‘প্রকল্পে বড় ধরনের কোনো অনিয়ম হয়নি। ছোটখাটো কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে। সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।’ আবার তিনি নিজেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নির্মিত মডেল মসজিদের পিলারগুলো ভেঙে নতুন করে তৈরির কথা জানিয়েছেন। আমরা বিনীত প্রশ্ন রাখতে চাই, এই যে ভেঙে নতুন করে নির্মাণ, এই বাড়তি ব্যয় কার ঘাড়ে রেখে করা হবে? কেন পিলারগুলো ভাঙতে হচ্ছে?

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ নির্মাণেও অনিয়ম-দুর্নীতি হতে পারেÑ এমন কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা। আমরাও বিস্মিত ও ব্যথিত। সরকারের সুদূরপ্রসারী এবং মহতী এই উদ্যোগকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলি। সেই সঙ্গে রয়ে যাওয়া ত্রুটিগুলো দ্রুত সংশোধন করে মসজিদের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করার উদ্যোগের জন্যও বলি। আমরা মনে করি, সরকারের এমন একটি মহৎ প্রকল্পে যদি সামান্যতমও দুর্নীতি-অনিয়ম হয়ে থাকে, তবে সংশ্লিষ্টদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তযোগ্য ব্যবস্থা নিতে হবে। অতীতে অপরাধীদের ছাড় দেওয়ায়, তাদের দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তি না হওয়ায়, বারবার এ ধরনের অন্যায় ঘটছে। সরকারের সুনাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের নয়ছয় হচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা