× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জঙ্গিবাদ

বিচ্ছিন্ন হলেও উগ্রপন্থিরা নিষ্ক্রিয় নয়

ড. নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩ ০০:১৫ এএম

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

হলি আর্টিজানে হামলার সাত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজও সেই বীভৎস হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্য শেষ হয়নি স্পর্শকাতর ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি মেনে নেওয়ার নয় দেশে কঠোর আইন থাকার পরও বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি যেন একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল পক্ষ, যাদের দায়দায়িত্ব মামলার অভিযোগপত্র গঠন প্রক্রিয়ায় ঢিলেমির কারণে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদেউক্তিটির আরেকটি উদাহরণ হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্যের বিলম্ব প্রক্রিয়া রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ওই হত্যাকাণ্ডে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনের প্রাণহানি বাংলাদেশকে এক গভীর সংকটে ফেলে আমাদের প্রত্যাশা ছিল দ্রুততম সময়ে ওই হত্যাকাণ্ডের অনুকরণীয় বিচার সমাধা হবে

জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অতীতে কিছু দুর্বলতা ছিল বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়ার পর এই সমস্যা অনেকাংশে দূর হয় এজন্য এখন জঙ্গিরা খুব বেশি তৎপর হতে পারছে না সত্য বটে, কিন্তু হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া গতিশীল করার জন্য মামলার গঠনসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিযুক্ত দায়িত্বশীলদের দক্ষতার অভাব রয়েছে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, জঙ্গি হত্যাকাণ্ডের যেসব মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে তারমধ্যে ৯১ শতাংশ অভিযুক্তই ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে অভিযোগ গঠনে দুর্বলতার কারণে শতাংশ অভিযুক্তের সাজা নিশ্চিত হচ্ছে মামলা গঠন প্রক্রিয়ার এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আমাদের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হবে, তেমনি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে আদালত বিচার করবেন যথাযথভাবে অভিযোগ গঠনসহ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ওই দায়িত্ব যাদের অর্থাৎ মামলা সাজানোর ভার যাদের ওপর, তাদের দক্ষতা-স্বচ্ছতা-দায়বদ্ধতা-জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি আদালত তো উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ ব্যতিরেকে বিচার করতে পারবেন না

আগেই বলেছি, বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়ায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জঙ্গি তৎপরতার রাশ টানতে অনেকটাই সফলতা দেখিয়েছেন তারপরও জঙ্গিদের নানা সময়ে সংঘবদ্ধ হয়ে সুযোগ সন্ধানের চেষ্টা করতে দেখা যায় জুলাই প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারামুক্ত জঙ্গিরা আবার নতুন করে সংগঠিত হতে শুরু করেছে সম্প্রতি পাহাড়ি জনপদের উগ্রবাদীদের সঙ্গে আঁতাত করে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার আত্মপ্রকাশের খবরও আমাদের অজানা নয় বিশ্বের সবখানেই কোনো না কোনো উগ্রবাদী সংগঠন রয়েছে উগ্রবাদী সংগঠনগুলোকে সমূলে উৎপাটনের সাফল্যও কমবেশি অনেক দেশেরই আছে জঙ্গিদের নির্মূল করতে হলে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক চাপ জরুরি কিন্তু এর নেতিবাচক দিকও আছে এক্ষেত্রে সিরিয়ার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে একসময় সিরিয়ায় আইএসের ব্যাপক তৎপরতা নানামুখী কার্যক্রম ছিল আইএসের আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে পশ্চিমা বিশ্ব নানা চাপ সৃষ্টি করে ফলে সিরিয়ার অর্থনীতি সমাজব্যবস্থায় অভিঘাত লাগে বাস্তবতা হলো, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক চাপের ফলে আইএসের প্রভাব কমেছে কিন্তু আইএস পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, তা বলা যাবে না এখনও আইএস কিংবা আল-কায়েদার নামে বিভিন্ন দেশে জঙ্গি অভিযান পরিচালিত হয় নতুন নামে গঠিত সংগঠনগুলো অভিযান পরিচালনা করলেও জঙ্গি তৎপরতার দায় স্বীকার করে নেয় তারা যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীলরা প্রায়ই বলেন জঙ্গি নির্মূল হয়ে গেছে, কিন্তু তাদের এই দাবি সর্বাশেং সত্য নয় বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে আল-কায়েদা কিংবা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের অংশ হিসেবে অনেকে জঙ্গি তৎপরতার দাবি করেছে যে নামেই হোক এখনও জঙ্গি সংগঠনগুলো সক্রিয়

জঙ্গি তৎপরতা কিছুটা কমেছে সত্য, কিন্তু তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে বলা যাবে না সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে উগ্রবাদীদের তৎপরতা বাড়তে শুরু করে আমরা দেখেছি, কুমিল্লা থেকে কয়েক তরুণ নিখোঁজ হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত তদন্তে নামেন তারা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, এই তরুণদের পার্বত্য অঞ্চলে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় অনেক জঙ্গি আত্মসমর্পণও করেছে মূলত পার্বত্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন যেমন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের মতো সংগঠনকে অর্থ অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠনগুলো নিজেদের স্বার্থ সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেÑ অভিযোগ অমূলক নয় বলেই মনে করি তারা নতুন জঙ্গি সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য পার্বত্য অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর সাহায্য নিচ্ছে জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ আমাদের সমাজে এখনও রয়েছে এবং যেকোনো সময় এই বীজ গজিয়ে উঠতে পারে

সংবাদমাধ্যমে এও বলা হয়েছে, হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তদের অনেকেই অনলাইনে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে আধুনিক বিশ্বে যোগাযোগ এবং যেকোনো ধরনের আদান-প্রদান ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজ বিধায় জঙ্গিরা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে এই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে বড় সুবিধা, ব্যবহারকারীকে পুরোপুরি ট্রেস করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না অনলাইন মাধ্যমে জঙ্গিদের তৎপরতা বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এক্ষেত্রে যথেষ্ট তৎপরও আছেন, তাও অসত্য নয় কিন্তু এই প্ল্যাটফর্ম এতটাই বিস্তৃত যে, তাদের ছড়িয়ে পড়ার প্রচেষ্টা পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে আরও সতর্কতা নতুন কৌশল দরকার জঙ্গিদের বিষয়টি অনেকটা পুরাণের হাইড্রার মতো একটা মাথা কাটলে দুটো মাথা বের হবে ওই দুটোও কেটে দিন আরও চারটি মাথা বের হয়ে যাবে এই চলমান প্রক্রিয়া বাধা দেওয়া খুব কঠিন একটি কাজ এটি বড় চ্যালেঞ্জও বটে আমি মনে করি, যথাযথ ব্যবস্থার পথ মসৃণ করা গেলে জঙ্গি তৎপরতা অনেকাংশে কমে আসত

অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা চালাতে গিয়ে অনেকে ডিজিটাল আইনের আওতায় গ্রেপ্তারও হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সাক্ষী উপস্থিত করতে না পারায় অনেক জঙ্গি মুক্তি পেয়ে যায়, এমন নজিরও আছে কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি সুবিধা, ডিজিটাল কন্টেন্টকে উপযুক্ত সাক্ষ্য হিসেবে দেখানো যায় কাজেই এই সুবিধাকে যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি তাহলে অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধের অবকাশ ক্ষীণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যারা জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে তাদের প্রচারণার জন্য ব্যবহৃত কন্টেন্টই বিচারের জন্য উপযুক্ত সাক্ষী মনে হয় এই কন্টেন্টগুলো প্রচলিত আইনের আওতায় এনে যদি আমরা জঙ্গিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে অনলাইনেও তাদের সক্রিয় হওয়ার সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাবে আইন প্রয়োগের সঠিক পদ্ধতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আরও আয়ত্তে নিতে হবে বিচারালয়ে যদি আমরা উপযুক্ত প্রমাণ সাক্ষী হাজির করার পদ্ধতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হই, তাহলে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অভিযুক্তরা সহজেই ছাড় পেয়ে যাবে যদি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে এর বহুমুখী বিরূপ প্রভাব পড়বে সমাজকাঠামোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল মনিটরিং বা প্যাট্রলিংয়ের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে দক্ষ করে তুলতে না পারলে জঙ্গি তৎপরতার পথ রুদ্ধ করা কঠিন এক্ষেত্রে সরকারকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে

জঙ্গি তৎপরতায় গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তদের ৯১ শতাংশ উপযুক্ত সাক্ষীসাবুদের অভাবে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে, তা আগেই বলেছি এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে প্রথমত, কোথাও জঙ্গি তৎপরতার আলামত পাওয়া গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তদন্তকার্যে প্রচলিত অপরাধ অনুসন্ধানের পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন আমার অভিমত, এই ভাবনা থেকে বের হতে হবে প্রশিক্ষিত একজন জঙ্গি যেভাবে কাজ করে সেভাবে একজন ছিনতাইকারী ছিনতাই করে না তাই অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে জঙ্গি তৎপরতাকে প্রচলিত অপরাধের কাতারে ফেলার ভাবনা দূর করতে হবে এক্ষেত্রে ঘটনাস্থলের আলামত পরীক্ষা পর্যবেক্ষণে গাফিলতির অবকাশ নেই তবে এই আলামত সংগ্রহের জন্য প্রশিক্ষিত সদস্য প্রয়োজন

আমরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখেছি, জঙ্গি তৎপরতা যেখানে ঘটে সেখানকার আলামত সংগ্রহ করেন পুলিশের সাধারণ সদস্যরা অনেক ক্ষেত্রেই জঙ্গি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও অভিযুক্তদের জঙ্গি প্রমাণের ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ায় তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে আরেকটি দুর্বলতা হলো, সরকারপক্ষের আইনজীবীরা সংগৃহীত আলামতকে কীভাবে বিচারালয়ে উপস্থাপন করবেন এর একটি বড় ভূমিকা থাকে জঙ্গিদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতকরণের জন্য সরকারপক্ষের আইনজীবীদের কারও কারও আন্তরিকতার অভাব রয়েছেÑ অভিযোগও আছে তা ছাড়া তাদের অনেকেরই ধরনের মামলা পরিচালনার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়নি অন্য দুর্বলতা বিচারসংশ্লিষ্ট মামলার আলামত সংগ্রহের পর আরেকটি স্তরে সেই আলামত উপস্থাপন করার পর বিচারক একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থাকেন তিনিই সিদ্ধান্ত নেন কীভাবে মামলা তিনি পরিচালনা করবেন তাই এমন ধরনের বিচারকাজে যারা যুক্ত থাকবেন তাদেরও প্রশিক্ষণ দরকার

অর্থাৎ দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে আমাদের এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে প্রথম পর্যায়ে যারা আলামত সংগ্রহ করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে যারা সেই আলামত উপস্থাপন করবেন তাদেরও প্রশিক্ষণ জরুরি সবশেষে যারা এই আলামত যাচাই করবেন তাদেরও জঙ্গি তৎপরতা মামলার ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণের বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে জঙ্গি তৎপরতা অনেকাংশে নির্মূল সম্ভব বলে মনে করি


  • অবসরপ্রাপ্ত মেজর  নিরাপত্তা বিশ্লেষক
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা