× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাজনীতি

গণতন্ত্রের পথ মসৃণ রাখার দায় রাজনীতিকদের

ড. মোহীত উল আলম

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩ ১৪:২৩ পিএম

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

আমার মা আমাদের কোথাও যাওয়া অর্থহীন বা অপ্রয়োজনীয় মনে করলে বলতেন, ওখানে কি কলা পেকেছে? এ কথাটা অনেকটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্চারণের অনুরূপ। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ২৪ মে ২০২৩ ঘোষিত বাংলাদেশের ওপর প্রয়োগকৃত থ্রিসি ভিসানীতির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখেছেন, আমেরিকার ভিসার দরকার নেই, আমেরিকায় না গেলে কী হয়? এই ভিসানীতিতে আছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় যেসব ব্যক্তি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পক্ষে বাধা সৃষ্টি করেছে বা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতীয়মান হবে, সেসব ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বা গমনেচ্ছুক হলে তাদের ভিসা দেবে না।

সংবাধমাধ্যমের পরিবেশনা থেকে বুঝতে পারি, গণতান্ত্রিক পরিবেশে সহমতের পরিসর আগের চেয়ে অনেকটুকু বেড়েছে। তা হলে কী এমন কার্যকারিতাÑ এই মার্কিনি থ্রিসি ভিসার? বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুধু যদি রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকত, যেমন ধরা যাকÑ আফ্রিকার বা দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের শুধুই রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে; তাহলে এ কথাটা মান্য হতো। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক এবং সহজ ও জটিল উভয় মাত্রারই সম্পর্ক। আমাদের বস্ত্র খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন সবচেয়ে বড় ক্রেতা। আরও কিছু পণ্যের জন্য আমরা তাদের ওপর নির্ভরশীল। সম্ভবত ভারতের পরে কিংবা জাপানের পরে আমাদের অর্থনীতির বড় বিনিয়োগকারীরা হলো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা। অভিবাসনের দিক থেকে দেখলে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী বাস করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা ভারতের পরে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পড়তে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। আবার মার্কিনিদেরও বাংলাদেশে অর্থলগ্নি করার বহু সুযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব বিবেচনা যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি মেকারদের মনে কাজ করেছে নিশ্চয়, যখন তারা থ্রিসি ভিসা প্রবর্তন করেন।

তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অবাধ দেখতে চাইলে বাধ্যতামূলকভাবে অর্থনৈতিক স্যাংশন দিতে পারত এবং বলতে পারত তাদের আজ্ঞাবাহী আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ঋণ দেবে না। বলতে পারত, রোহিঙ্গা সমস্যা যাতে আরও বৃদ্ধি পায় আন্তর্জাতিকভাবে সেটা নিয়ে তারা চাপ প্রয়োগ করবে কিংবা বলতে পারত যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না। কিংবা যে রীতিতে তারা ১৯৭৪ সালে সমাজতন্ত্রী দল কিউবায় পাট রপ্তানির দায়ে বাংলাদেশকে শাস্তিস্বরূপ পিএল ৪৮০-এর খপ্পরে ফেলেছিল এবং দুর্ভিক্ষের সময় কোনো একটি দেশ (সম্ভবত কিউবা) থেকে আসা গমের জাহাজও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির চাপে, সেরকম কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা তারা বলেনি। অর্থাৎ যেকোনো কিছুর ওপর তারা স্যাংশন দিতে পারত। কিন্তু তারা শুধু দিল ভিসার ওপর। কতজন বাংলাদেশি প্রতিবছর মার্কিনি ভিসার জন্য আবেদন করেন জানি না, কিন্তু সংখ্যা যাই হোক, ১৮ কোটির জনসংখ্যার দেশে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসানীতি সমুদ্রে লোস্ট্র নিক্ষেপের চেয়ে অকিঞ্চিৎকর। কিন্তু কেন তার পরও তারা এই ভিসানীতির পলিসি নিল?

ড্যানিয়েল লার্নার নামক খুব নামকরা একজন সমাজবিজ্ঞানী এবং প্রাচ্যবিদ ১৯৫৮ সালে একটি চিন্তা উদ্রেককারী বই লিখলেন : ‘দ্য পাসিং অব ট্র্যাডিশনাল সোসাইটি’। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আধুনিকায়ন নিয়ে লিখতে গিয়ে তিনি এই বইতে বললেন, পশ্চিম ইউরোপের শ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো তাদের শারীরিক বলিষ্ঠতা ও উন্নততর বুদ্ধির জন্য পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাম্রাজ্য স্থাপন করতে পেরেছে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও দেশের ওপর। অর্থাৎ লার্নারের মতে, নৃতাত্ত্বিকভাবে পশ্চিম ইউরোপের শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী পৃথিবীর অন্যান্য জনগোষ্ঠীর চেয়ে উন্নততর বলেই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। এই যুক্তিকে সম্পূর্ণ খণ্ডন করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক নব্য ইতিহাসবাদের প্রবর্তক এবং বিশ্বখ্যাত শেকসপিয়ার পণ্ডিত স্টিফেন গ্রিনব্ল্যাট তার ‘দ্য ইম্প্রোভাইজেশন অব পাওয়ার’ (১৯৮০) প্রবন্ধে বললেন, পশ্চিম ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর কর্তৃত্ব কোনো নৃতাত্ত্বিকভাবে নির্ধারিত শারীরিক সবলতার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বরং হয়েছে তাদের প্রত্যুৎপন্নমতিত্বসম্পন্ন বা তাৎক্ষণিক প্রায়োগিক কৌশলের জন্য। তিনি বিশেষ করে দুটি উদাহরণ দিলেন। একটি ইতিহাস থেকে, আরেকটি সাহিত্য থেকে।

ইতিহাস থেকে তিনি বললেন, কলম্বাসের চতুর্থ সমুদ্রযাত্রার কথা। ১৫০৪ সাল। এর মধ্যে নেটিভ ইন্ডিয়ানরা কলম্বাসের চালচলন সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে উঠেছে। তারা মনে করছে, কলম্বাস বোধ হয় তার সহগামী নাবিকদের নিয়ে স্থায়ীভাবে গোড়াপত্তন করবেন। তখন তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, কলম্বাস ও তার লোকদের আর খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হবে না। এদিকে কলম্বাস তার পঞ্জিকা পড়ে জানতে পারলেন যে, কয়েক দিন পর চন্দ্রগ্রহণ হবে, তাই তিনি নেটিভ গোত্রদের প্রধানকে ডেকে নিজের হাতের বাইবেল দেখিয়ে বললেন আমার হাতে যা দেখতে পাচ্ছ, তা ঈশ্বরের পবিত্র গ্রন্থ এবং আমরা হচ্ছি তার লোক। কয়েক দিন পর ঈশ্বর আকাশে একটি চিহ্ন দেখাবে। দলনেতা কিছুই বিশ্বাস না করে ভেংচি কেটে চলে গেলেন। আর তিন দিনের মাথায় ঠিকই চন্দ্রগ্রহণ হলো, তখন তারা ভয় পেয়ে দলে দলে এসে কলম্বাসের কথা খুব মান্য করতে লাগল। কলম্বাস আর তার দলের খাদ্যশস্যের অভাব রইল না। গ্রিনব্ল্যাটের মতে, কলম্বাস এখানে যে চাতুর্যপূর্ণ কাজটি করলেন সেটি হলো তিনি তথ্য সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানভিত্তিক বই পঞ্জিকা থেকে, কিন্তু আদিম লোকগুলোকে আশ্বস্ত করলেন ধর্মগ্রন্থ দেখিয়ে। এটাই হলো মার্কিনি ভিসানীতির সমপর্যায়ের চাল। অর্থাৎ যে তরিকা দিলে এই লোকগুলোকে বশ করা যাবে।

বলাবাহুল্য এই ধারার রাজনৈতিক কূটচালের অন্যতম ব্যাখ্যাদানকারী ম্যাকিয়াভেলির অনুসরণে গ্রিনব্ল্যাট এবার সাহিত্য থেকে একটি উদাহরণ টানলেন। শেকসপিয়ারের ‘ওথেলো’ নাটকে মধবয়সি কৃষ্ণাঙ্গ ওথেলো বিয়ে করে বসল শ্বেতাঙ্গ অনূঢ়া রমণী ভেনিস নিবাসী ডেসডিমোনাকে। এদিকে ইয়াগোকে চাকরিতে পদোন্নতি না দেওয়ায় এবং তার অধস্তন ক্যাসিওকে তার ওপরে পদোন্নতি দেওয়ায়, ইয়াগো পণ করলÑ সে এ বিয়েটা ভাঙবেই। তখন গ্রিনব্ল্যাটের মতে, শ্বেতাঙ্গ ইয়াগো একটা প্রত্যুৎপন্নমতিত্বসম্পন্ন চাল দিল। অর্থাৎ সে ততক্ষণাৎ ভেবে বের করল যে, এই বিয়েটাকে সে ধ্বংস করতে পারে দ্বিতীয় বাছাইয়ের চাল চেলে। দ্বিতীয় বাছাইটা কী? ইয়াগো ওথেলোর একান্ত বিশ্বাসভাজন হয়ে তার কানে ফুসলিয়ে বলল, যে লক্ষ্মী কিশোরী ডেসডিমোনা এতগুলো ভেনিসীয় যুবকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তার বাপকে ত্যাগ করে, তার নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি ত্যাগ করে ওথেলোর মতো কালো, বয়স্ক, পেটমোটাওয়ালা লোককে বিয়ে করতে পারে, সে সহসা তার ভুল বুঝতে পারবে এবং দ্বিতীয় বাছাই বা দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণের দিকে যাবে।

ম্যাকিয়াভেলির সূত্র অনুযায়ী ইয়াগো নতুন যে ত্রিকোণি ভালোবাসার সম্পর্কটা দাঁড় করাল, তাতে এক দিকে রইল ওথেলো, অন্যদিকে রইল ডেসডিমোনা এবং তৃতীয় পয়েন্টে দাঁড় করাল ক্যাসিওকে। ওথেলোকে বোঝাল, মাই লর্ড, আপনি তো ভেনিসে বহিরাগত, আপনি আমাদের মেয়েদের চেনেন না। এরা ঈশ্বরকে ভয় পায় না, কিন্তু স্বামীকে ভয় পায়। গ্রিনব্ল্যাটের মতে, ইয়াগো তার প্রত্যুৎপন্ন বুদ্ধি দিয়ে যে কাজটি সমাধা করল, সেটি হলোÑ সে ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে একটি অপ্রচলিত গোঁড়া ধারণা ঢুকিয়ে দিল। ইয়াগো এই তত্ত্বটিই ওথেলোর মনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। অর্থাৎ ওথেলোকে শেষ করতে চাইলে তার স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সে সন্দেহের বীজ সফলভাবে ঢুকিয়ে দেয়। অন্য কোনো চাল না ভেবে দাবার মোক্ষম চালটি ইয়াগো তৈরি করল একটা চিরন্তন সাহিত্যিক উপাদান দিয়ে : পুরুষ মানুষের ঈর্ষাকাতর বোধ। ইয়াগোর হাতে ওথেলোর পতন প্রতীকী অর্থে লর্ড ক্লাইভের কাছে নবাব সিরাজদ্দৌল্লার পতন, ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের পরাধীন হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন থ্রিসি ভিসানীতির ফলে বাংলাদেশে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠা। কারণ কী?

রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা এ মুহূর্তে অনেক রাজনীতিকের কাছেই পরিষ্কার নয়, কাকে যে কখন দেশ ছাড়তে হতে পারে এবং আমেরিকায় দৌড়াতে হতে পারে। এ জন্যই এই উৎকণ্ঠা। এই উৎকণ্ঠাকে পুঁজি করেই যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসানীতির প্রবর্তন। এটিই এদের প্রত্যুৎপন্নমতিত্বসম্পন্ন চাল।

দাবা খেলার ভাষায়, দ্য মেইটিং মুভ। আমি নিতান্তই অরাজনৈতিক লোক। তবে একটা ধারণা অনেকে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় প্রকাশ করছেন, যেটি আমার কাছে একটা সলিউশনের মতো মনে হয়। সেটা হলো, নির্বাচনকালীন সময়ে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে মন্ত্রিসভায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে আনুপাতিক হারে কিছু মন্ত্রিত্ব বিরোধী দলগুলোর হাতে ছেড়ে দেওয়া। তা হলে সংবিধান অক্ষুণ্ন রইল আর মন্ত্রিসভার মধ্যে মিকশ্চার হলে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পথও পরিষ্কার হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের থ্রিসি ভিসা নিয়েও কাউকে টেনশন করতে হবে না।

আপাতদৃষ্টিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সমাধান মনে হলেও, এটি মলমের প্রলেপের মতো। এই ব্যবস্থা স্থায়ী সমাধান আনতে পারবে না, যেহেতু তা অনির্বাচিত সরকার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। আর উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে এটি গণতন্ত্রের বিকাশকে দীর্ঘদিনের জন্য হুমকির মুখে ফেলবে। নানা কৌশলে স্বার্থসিদ্ধির ছক কষা চলছে। গণতন্ত্রের পথ মসৃন রাখার দায়  রাজনীতিকদের , এই কথাটি ভুলে না গেলেই মঙ্গল । নিজেদের ব্যাপারে অন্যদের নাক গলানোর সুযোগ না দেওয়াই উচিত। আমাদের রাজনীতির অর্জন তো কম নয়। তবে  এর বিসর্জনও কম ঘটেনি কারো কারোর ভুল বা হীনস্বার্থের কারণে।  


  • শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক 
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা