× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

ঢাকা শিশু হাসপাতালে অনিয়মকারীদের অনুকম্পা নয়

সম্পাদক

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ০১:১৪ এএম

ঢাকা শিশু হাসপাতালে অনিয়মকারীদের অনুকম্পা নয়

সরকারি কেনাকাটা কিংবা প্রকল্পে অর্থের নয়ছয়ের বিষয়টি নতুন নয় কখনও কখনও এসব বিষয় কেন্দ্র করে এমন কাণ্ড ঘটে যা রূপকথাকেও হার মানায় এরই ফের প্রতিফলন ঘটেছে ১২ এপ্রিল প্রতিদিনের বাংলাদেশ- প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদনে স্বর্ণের ডিমপাড়া হাঁসটিই জবাইশিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের গর্ভে যে তথ্য উঠে এসেছে তা শুধু বিস্ময়করই নয়, যেন প্রবাদের সেইতুঘলকি কাণ্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীর অনুদান নিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে গুরুতর অনিয়মের যে চিত্র ওই প্রতিবেদনে উন্মোচিত হয়েছে, তাতে সংগতই প্রশ্ন দাঁড়ায়Ñ এটাও কি একপর্যায়ে প্রতিকারের প্রতিবিধান নিশ্চিত হওয়ার বদলে আলোচনার বাইরেই চলে যাবে? এসব ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা প্রীতিকর নয়

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দরিদ্র, জন্মগত হৃদরোগী শিশুদের চিকিৎসায় বরাদ্দ মাত্র১০ কোটি টাকা ব্যয় করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে অস্বচ্ছতার প্রমান দিয়েছে তা বিস্ময়কর, যুগপৎ প্রশ্নবোধক অর্থ বিভাগ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল প্রধানমন্ত্রীর ১০ কোটি টাকার অনুদান এফডিআর করে রাখার সেখান থেকে প্রতি বছর প্রাপ্ত মুনাফার টাকায় ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির মাধ্যমে হৃদরোগী শিশুদের মেডিকেল ডিভাইস যন্ত্রপাতি কেনা হবে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সাধারণত দেশে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ শিশুর জন্য ধরনের ডিভাইস প্রয়োজন হয় এক বছর ওই টাকা এফডিআর করে রাখাও হয়েছিল কিন্তু এর পরে বক্র পথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো টাকা ব্যয় করে যন্ত্রপাতি কেনেন আরও বিস্ময়কর হলো, এসব যন্ত্রপাতির পরিমাণ চাহিদার তুলনায় চার-পাঁচ গুণ বেশি এবং এগুলোর ব্যবহার-উপযোগী আয়ু ফুরিয়ে যাবে অব্যবহৃত অবস্থায়ই, দুই বছরের মধ্যে অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের পুরো টাকাই যে পানিতে যাবে নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন আমরা প্রশ্ন রাখতে চাইÑ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন নিয়মনীতির লঙ্ঘন করে কেনাকাটায় এত উৎসাহী হয়ে উঠে প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রয়োজনীয় কাজটি করলেন? একই সঙ্গে প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারি কেনাকাটায় স্বার্থান্বেষীদের মধুপানে যে আগ্রহ দেখা যায়, ক্ষেত্রেও কি এমনটি ঘটেনি? হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন থেকে শুরু করে কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ অর্থ নিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে বাণিজ্যে যে নৈরাজ্যকর চিত্র উঠে এলো, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় শেষ পর্যন্ত শিশুর অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল নৈরাজ্যবাদীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা শুধু নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্রই তুলে ধরেনি, একই সঙ্গে প্রশ্ন দাঁড় করিয়েছেÑ স্বেচ্ছাচারীদের স্বেচ্ছাচারিতার শেষ কোথায়?

আমরা দেখছি, সরকারি কেনাকাটা কিংবা প্রকল্পে ক্ষমতাধর দায়িত্বশীল অসাধুরা নিজের ভোগের আয়োজনের ছক কষে ফেলেন আগে থেকেই আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা নিয়ে নয়ছয়ে যারা যুক্ত, তারা কোনোভাবেই অনুকম্পা পেতে পারেন না আমরা এও দেখছি, সরকারি প্রকল্পে কিংবা কেনাকাটায় গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের যোগসাজশে টেন্ডার থেকে শুরু করে প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার পুরো অধ্যায়ই কদর্যতার ছায়ায় ঢেকে যায় ঢাকা শিশু হাসপাতালের ঘটনা এর ব্যতিক্রম নয় প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জিজ্ঞাসার জবাবে কোনো কোনো দায়িত্বশীল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা খোঁড়া যুক্তি বই কিছু নয় বলে আমরা মনে করি আমরা আরও মনে করি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারেরশূন্য সহিষ্ণুতা যে অঙ্গীকার রয়েছে, তা দুর্নীতিবাজরা থোড়াই আমলে রাখছেন আমরা নৈরাজ্যের অবসান চাই ঢাকা শিশু হাসপাতাল তো বটেই, জনস্বার্থ কিংবা কল্যাণের বিষয়গুলো এবং একই সঙ্গে দেশ-জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্টতার ব্যাঘাত ঘটে এমন অপপ্রক্রিয়ায় যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তযোগ্য ব্যবস্থাই একমাত্র প্রতিবিধান ঢাকা শিশু হাসপাতালের কদর্যতার চিত্র স্বাস্থ্য খাতে সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টার পথে শুধু বিঘ্নই সৃষ্টি করেনি, একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে বিদ্যমান গুরুতর অসুখের চিত্রও ফের সামনে নিয়ে এসেছে আমাদের স্মরণে আছে, গত করোনা দুর্যোগে স্বাস্থ্য খাতে রকম গুরুতর অসুখের আরও কিছু উপসর্গ মিলেছিল আমরা মনে করি, যেকোনো নেতিবাচকতার যদি যথাযথ প্রতিকার নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে পরবর্তীতে অন্ধকারের ছায়া প্রলম্বিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় ঢাকা শিশু হাসপাতালের ঘটনাটি এরও ব্যতিক্রম টাকার অঙ্ক যা- হোক, সরকার তথা জনগণের অর্থের নয়ছয়ের বিষয়গুলো সমান্তরালেরই ওই হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতিসহ স্বেচ্চাচারিতার যে নগ্ন নজির ফের দৃশ্যমান হলো, আমরা দেখতে চাইব এর কী প্রতিবিধান নিশ্চিত হয়

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা