× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দিবস

মহাকাশযাত্রায় সফল হলো মানুষ

লোপা মমতাজ

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:০১ এএম

অলঙ্করন : প্রবা

অলঙ্করন : প্রবা

১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল। পৃথিবীতে ঘটে যায় এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। এই দিনে ইউরি গ্যাগারিনকে মহাকাশে পাঠানোর মধ্য দিয়ে মানুষের মহাকাশযাত্রার সূচনা হয়। সোভিয়েত নভোযান ভোস্টকে চড়ে গ্যাগারিনের উড্ডয়নটি ১০৮ মিনিট দীর্ঘ ছিল এবং পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করেছিল। ইউরি গ্যাগারিন ইতিহাসের এক অভাবনীয় মুহূর্তের একমাত্র সাক্ষী। এই পৃথিবীকে মহাশূন্য থেকে কেমন লাগে তা প্রথম দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন গ্যাগারিন। সেদিনের অনুভূতি কেমন ছিল তা সোভিয়েত ইউনিয়নের কর্ণধার নিকিতা ক্রুশ্চেভের সঙ্গে তার ফোনালাপে উঠে এসেছিল :

ক্রুশ্চেভ : তোমার কণ্ঠ শুনতে পেরে খুবই ভালো লাগছে গ্যাগারিন অ্যালেক্সিয়েভিচ।

গ্যাগারিন : নিকিতা সের্গেইভিচ, আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে মহাকাশে প্রথম মানব মিশন "দি সফল হয়েছে।

ক্রুশ্চেভ : বল দেখি ফ্লাইটের সময় কেমন লাগল? মহাশূন্য কেমন? কী কী দেখলে?

গ্যাগারিন : এমনিতে ভালোই ছিলাম। অনেক বেশি উঁচু থেকে বিশ্ব দেখলাম। সাগর, পর্বত, বড় শহর, নদী, বন সব দেখা যাচ্ছিল।

সেদিন যে নভোযানটি চড়ে তিনি মহাশূন্যে যাত্রা করেছিলেন সেটি আকারে খুব ছোট ছিল। সেটির ব্যাসার্ধ ছিল মাত্র দুই মিটার। সে সময়তে নভোযানে যাত্রীর তেমন কোনো ভূমিকা থাকত না। কারণ, নভোযানের ভেতরের সকল যন্ত্রপাতি গ্রাউন্ড থেকে কন্ট্রোল করা হতো। সেদিন ভূমি থেকে নভোযানটি যারা নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, তাদের সঙ্গে গ্যাগারিনের বার্তালাপ থেকে জানা যায় যে, ক্যাপসুলের মতো ছোট ওই নভোযানের জানালা দিয়ে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ভূপৃষ্ঠের ওপর মেঘের ছায়া দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। যে রকেট তার নভোযানটিকে মহাশূন্যে নিক্ষেপ করেছিল, সেটি তার আগে বহুবার ব্যর্থ হয়েছিল। ফলে এই অভিযানটি নিয়েও ছিল নানা শঙ্কা। অনেকেই ধরে নিয়েছিল মহাকাশ যানটি ঠিকঠাকমতো শুন্যে উড়াল দিতে পারলেও গ্যাগারিনকে নিয়ে মাটিতে ফিরে আসতে হয়তো পারবে না। ওই সময় রকেট থেকে শুরু করে নভোযান এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে কেউই ১০০% নিশ্চিত ছিলেন না। এমনকি মহাশূন্যে পৌঁছতে পারলেও ভেতরের মানুষটি বাঁচবে কি না, তাও ছিল অজানা। এই অভিযানের প্রায় ৫০ বছর পর রুশ প্রকৌশলী বরিস চেরটক তার লেখা 'রকেট অ্যান্ড পিপল' বইতে লিখেছেন- 'এখনকার বিজ্ঞানীদের সামনে যদি ভোস্টক নামের ওই নভোযানটিকে রাখা হতো, কেউই সেটিকে মহাশূন্যে পাঠানোর পক্ষে মতো দিতেন না।' তার আগের ঘটনা ১৯৬০ সালের মে মাসে, গ্যাগারিনের অভিযানের এক বছরেরও কম সময় আগে আরও একটি নভোযান পাঠানো হয় মহাকাশে। নভোযানটি পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছতে পারলেও সেটিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করেনি। কয়েক মাস পর ১৯ আগস্ট দুটো কুকুর বেলকা এবং স্ট্রেলকা- মহাশূন্যে গিয়ে প্রাণ নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে।

১৯৬০ সালে সেটাই ছিল প্রথম মহাকাশে পুরোপুরি সফল একটি যাত্রা। কিন্তু তার পরের আরও কিছু চেষ্টায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ছোটখাটো কিছু যান্ত্রিক ঝামেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষের বিজ্ঞানীদের কপালে ফেলেছিল। যেমন- ভোস্টকে এক সপ্তাহ চলার মতো অক্সিজেন, খাবার এবং পানি ছিল, কিন্তু উঁচুতে চলে যাওয়ায় পৃথিবীতে ফিরতে সময় বেশি লেগে যেতে পারত। ফলে অক্সিজেন বা খাবারের অভাবে গ্যাগারিনের মৃত্যু হতে পারত। কিন্তু ভাগ্য ভালো যে, নভোযানের ভেতর পাইলটের জন্য ফিট করা ব্রেকটি কাজ করেছিল এবং ব্রেক চেপে গ্যাগারিন নভোযানটির উঁচুতে ওঠা থামাতে পেরেছিলেন। সেদিন ক্যাপসুলটি নিয়ে ভূপৃষ্ঠে অবতরণের সময় আরও কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন গ্যাগরিন। সবকিছু অতিক্রম করে তিনি পৃথিবীতে অবতরণ করলেন। আর এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ইতিহাসে রচিত হলো এক বিরল ঘটনা। মহাকাশ ভ্রমণ করে এলেন পৃথিবীর প্রথম কোনো মানুষ !


  • সাংবাদিক ও লেখক
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা