× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঢাকায় প্রথম মোবাইল কংগ্রেস : বড় স্বপ্ন, অনেক প্রত্যাশা

রাশেদ মেহেদী

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৫৫ পিএম

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:৩৭ পিএম

ঢাকায় প্রথম মোবাইল কংগ্রেস : বড় স্বপ্ন, অনেক প্রত্যাশা

বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের অধিকাংশেরই মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের (এমডব্লিউসি) সঙ্গে পরিচয় আছে। প্রতি বছরই বাংলাদেশ থেকে বড় একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ব ফুটবলের রাজধানী হিসেবে খ্যাত স্পেনের বার্সেলোনায় যান এমডব্লিউসিতে অংশ নেওয়ার জন্য। এই প্রতিনিধিদলে সরকারের মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মোবাইল অপারেটর, ভেন্ডরসহ টেলিযোগাযোগ খাতের অন্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরাও থাকেন।

টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে কাজ করা স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিকরাও মাঝেমধ্যে বেসরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এই আয়োজনে অংশ নিয়ে থাকেন। যারা এখানে গেছেন তারা নিশ্চিতভাবেই একমত হবেন, এমডব্লিউসির আয়োজন থেকে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার নতুন উদ্ভাবন, গবেষণা এবং অদূর ভবিষ্যতে কী ধরনের বিস্ময় অপেক্ষা করছে সে সম্পর্কে নিজেকে যতটা সমৃদ্ধ করা যায়, অন্য কোনো আয়োজন থেকে তা করা যায় না। মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন ‘জিএসএমএ’ এই মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের আয়োজক। 

বার্সেলোনার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে এবং চীনেও জিএসএমএ’র আয়োজনে অপেক্ষাকৃত ছোট আকারে মোবাইল কংগ্রেস হয়ে থাকে প্রতি বছরই। বার্সেলোনায় এমডব্লিউসি অনুষ্ঠিত হয় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কিংবা মার্চের প্রথম সপ্তাহে। চীনের সাংহাইতে অনুষ্ঠিত হয় জুন মাসে এবং যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে। এ মাসের ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে নর্থ আমেরিকা মোবাইল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। তবে নতুন এবং চমকপ্রদ খবরটি হচ্ছে এ বছর লাস ভেগাসের যেদিন মোবাইল কংগ্রেস শেষ হবে, সেই দিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় প্রথম ‘মোবাইল কংগ্রেস বাংলাদেশে’র (এমসিবি) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে টানা ২ অক্টোবর পর্যন্ত এটি চলবে। 

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন ‘অ্যামটব’ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘রেডকার্পেট৩৬৫লিমিটেড’ বাংলাদেশে এই মোবাইল কংগ্রেসের আয়োজন করছে। যদিও ‘এমসিবি’ জিএসএমএ মোবাইল কংগ্রেস হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, কিন্তু তারপরও এই আয়োজনে জিএসএমএ’র সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকছে। জিএসএমএ’র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান জুলিয়ান গরম্যান অংশ নিচ্ছেন। এর বাইরে মালয়েশিয়ার যোগাযোগ উপমন্ত্রী এবং দেশটির সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান নির্বাহী, ভারতের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের প্রধান এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া এই আয়োজনে দেশের সব মোবাইল অপারেটরসহ টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রায় সব সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানই অংশ নিচ্ছে। স্থানীয়ভাবে সেবা দেওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক প্রধানরাও অংশ নিচ্ছেন। তবে এ খাতের আন্তর্জাতিক প্লাটফরমগুলো থেকে ঠিক কতজন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন, তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এমসিবির ওয়েবসাইটে চার দিনের যে অনুষ্ঠানসূচি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বড় প্লাটফরমগুলো কিংবা খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞদের নাম দেখা যায়নি। এ ধরনের আয়োজনে সাধারণত আরও আগে থেকেই প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয়। যেমন লাস ভেগাসে এমডব্লিউসিতে প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য আছে। 

বাংলাদেশে যেহেতু টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন সে কারণে আন্তর্জাতিক প্লাটফরমগুলোর প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ কাম্য। যেমন এমডব্লিউসিগুলোতে আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেমন গুগল, ফেসবুক, টিকটক, টুইটারসহ প্রধান প্লাটফরমগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বিশ্ব ই-কমার্সের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান যেমন অ্যামাজন, আলীবাবার প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে যেহেতু বিব্রতর অভিজ্ঞতা আছে এবং কোনো আন্তর্জাতিক প্লাটফরমের সঙ্গেই বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের যোগাযোগের ব্যবস্থাও এখন পর্যন্ত দুর্বল, সে কারণে এসব প্লাটফরমের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত ছিল। কারণ এ ধরনের আয়োজন আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলোর সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ গড়ে তোলার একটা বড় সুযোগ করে দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক প্লাটফরমের কারও উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হয়তো মূল আয়োজনে তাদের অনেককে দেখা যেতেও পারে। অ্যামটব নিশ্চিতভাবেই জিএসএমএ’র মতো বড় সংগঠনও নয়। 

সবকিছুর পরও বাংলাদেশে এ ধরনের একটি আয়োজনকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে। কারণ এ ধরনের একটি আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্ভাবনার অনেক বড় দ্বার খুলে যেতে পারে। তবে সেই দ্বার খোলার জন্য এই আয়োজনে যত বেশি সম্ভব বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশেষ করে তরুণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে নিয়ে আসতে হবে। তবে আয়োজনের সূচিতে যেসব সেমিনার এবং সেশনের কথা বলা আছে, সেখানকার তালিকায় সরকারি পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের বাইরে খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, গবেষকদের দেখা যায়নি। তরুণদের জন্য বিশেষ কোনো আয়োজনের কিছুও এই ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় না। আয়োজন শুরুর আর মাত্র আড়াই সপ্তাহ বাকি। কিন্তু এই আয়োজন নিয়ে তেমন কোনো প্রচারও লক্ষ করা যাচ্ছে না। আয়োজনে অংশ নিতে হলে নিবন্ধন করতে হবে। ওয়েবসাইটে সেই নিবন্ধনের জন্য একটি ফরমও আছে। কিন্তু ওয়েবসাইটটির বিষয়েই এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ মানুষ জানেন না। অতএব এই আয়োজন সম্পর্কে মানুষকে জানানোর উদ্যোগ এখনই নিতে হবে। 

তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে বাংলাদেশে এর আগেও বড় আয়োজন হয়েছে। তবে সেগুলোর পরিসর এমসিবির মতো এত বড় ছিল না। যদি এই এমিসিবিকে সার্থক করা যায় এবং নিয়মিত আয়োজনে পরিণত করা যায়, তাহলে জিএসএমএ’র এমিডব্লিউসির মতো এই আয়োজনও বাংলাদেশকে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যতম ‘মিলনমেলা’ হিসেবে পরিচিত করবে। এই আয়োজন থেকেই বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন অনেক উদ্ভাবনের বার্তা যাবে। বাংলাদেশের তরুণ নতুন স্বপ্ন এবং উদ্ভাবনের আলোয় সমৃদ্ধ হবে। বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে এই আয়োজনের দিকে। যারা আয়োজন করছেন, যারা আয়োজনের অংশীদার তাদের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে একেবারে শিক্ষানবিশ কর্মকর্তারাও একাধিকবার বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে অংশ নিয়েছেন। অনেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মোবাইল কংগ্রেসেও গেছেন। অতএব তারা নিশ্চিতভাবেই একটি সফল আয়োজন করার ব্যাপারে সমৃদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী। আর বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আয়োজকের কাছে আমাদের সবারই চাওয়া, দেশে প্রথমবারের মতো এত বড় একটি আয়োজন সর্বাঙ্গীণ সফল হোক। প্রথম আয়োজনের সফলতা ডিজিটাল অগ্রগতির পথে বাংলাদেশকে আরও বড় স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাবে, এটাই প্রত্যাশা। 

টেকনোলজি এডিটর, প্রতিদিনের বাংলাদেশ

১১.০৯.২০২২

/এমজে/ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা