× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা কি প্রতিকারহীন থাকবে?

সম্পাদক

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৪:৩২ এএম

আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৪:৩৯ এএম

অলঙ্করন : প্রবা

অলঙ্করন : প্রবা

সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে কম কথা হয়নি। আলাপ-আলোচনায় সড়ক নিরাপদ করার সমাধানসূত্রও মিলেছে। কিন্তু দিনকে দিন সড়কের মৃত্যুফাঁদ হয়ে ওঠা ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বাড়ছে সড়কে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুহার। বাড়ি থেকে বেরুনোর মানুষটির জন্য ঘরের মানুষের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কারণ, যে সুস্থ মানুষটি সকালে কাজের জন্য পথে বেরুল, সে নিরাপদে ঘরে ফিরবেÑ তার নিশ্চয়তা নেই। অবস্থা দেখে মনে হয়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বোধহয় গোড়াতেই রয়ে গেছে গলদ। সড়কে যানবাহন চলাচলের আইন আছে, পথচারীদের জন্যও আছে আইন। কিন্তু তার পরও আমাদের রাস্তায় ফিটনেসবিহীন যানবাহনের দৌরাত্ম্য, ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে গাড়ি চালানোর সনদ নেই অধিকাংশ চালকের, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের সংখ্যাও কম নয়। এমনকি নিয়ন্ত্রণে আসেনি সড়ক-মহাসড়কের দুপাশের হাটবাজার, দোকানপাট সাজিয়ে বসাও। ফুটপাথে সুযোগ নেই পথচারীদের চলাচলের। সেখানেও পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। ফলে সড়কের বিশৃঙ্খলাই যেন হয়ে উঠেছে অলিখিত নিয়ম।

গড়ে দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ৫৫ ব্যক্তি, এ তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)। আর বাংলাদেশ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, দেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন গড়ে ১২ হাজার মানুষ। গত এক বছরে দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৭ হাজার ২৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছেÑ এ তথ্য নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের। যদিও আগের বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯৮৩টি। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে ২০২২ সালে। স্বাভাবিকভাবেই এ পরিসংখ্যানগুলো উদ্বেগজনক এবং একই সঙ্গে আতঙ্কেরও। এই উদ্বেগ আরও বাড়ে যখন জানা যায়, সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব নির্দেশনা বিভিন্ন সময়ে দিয়েছিলেন, সেগুলোও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ২৯ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। যার মাঝে দূরের পথে চালকদের যেন পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাতে না হয় সে জন্য বিকল্প চালক রাখা, মহাসড়কের পাশে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি, চালকদের প্রশিক্ষণ, নিয়োগপত্র দেওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি, কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কেন বাস্তবায়িত হয়নি? আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে আগেও প্রশ্ন রেখেছি, সড়কে বিশৃঙ্খলা কিংবা নিরাপত্তাহীনতার কারণগুলো যেহেতু স্পষ্ট, তাহলে এর প্রতিকার এবং প্রতিবিধান কেন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না?

ক্লান্ত শরীরে বাস চালানোর ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আমাদের স্মরণে আছে, চলতি মাসেই পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়েতে এক দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৯ জন। সে দুর্ঘটনার পেছনেও ছিল অতিরিক্ত গতি এবং চালকের ক্লান্তি। ইমাদ পরিবহন নামের যাত্রীবাহী বাসটির দুর্ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অতিরিক্ত গতি ও চালকের ক্লান্তির কারণেই পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনা। এই যে দুর্ঘটনা, এর পেছনে শুধুই কি চালক দায়ী? তাও তো নয়। আমাদের সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ১০৬ (১) ও (২) ধারায় মালিকপক্ষের অপরাধের বিষয় ও দণ্ডের কথা বলা হয়েছে। আইনের যেকোনো ধারায় অপরাধে মালিকদের সংশ্লিষ্টতা থাকলেই তাকে অভিযুক্ত করার বিধান রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণিত হওয়ার সাজা মৃত্যুদণ্ড। আর এই দায় শুধু চালকেরই নয়, এর দায় গাড়ির মালিক এবং কোম্পানির কর্মকর্তাদেরও। অথচ এক্ষেত্রে আইনটি যেন কাজীর গরু, কেতাবে আছে গোয়ালে নয়। কারণ, দুর্ঘটনার বিচারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাজা পান চালক ও হেলপার। কিন্তু দায়ী পরিবহনের মালিক ও কোম্পানি অন্তরালেই থেকে যায়। পরিবহন মালিকদের পার পেয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের যথাযথ প্রতিকার যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হবে, সড়কে মৃত্যু বন্ধ করতে হবেÑ এ দাবির পক্ষে সোচ্চার প্রতিটি মানুষ। তার পরও কেন সড়কে মৃত্যুর মিছিল প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে, সেদিকটি ভেবে দেখতে হবে। সেই সঙ্গে দায়িত্বশীলদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা সত্যিকার অর্থেই সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে চান কি না? যদি চান, তা হলে সেই দাবিপূরণের জন্য নির্ধারিত কাজগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের দায়িত্বও তাদের। অপরাধের সঙ্গে যুক্ত কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আইনের যথাযথ প্রয়োগের বিকল্প নেই।



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা