× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১৩ মার্চ, ১৯৭১

স্বাধীনতার অগ্নিশপথে দৃপ্ত

মামুন রশীদ

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:২৭ পিএম

অলঙ্করন : প্রবা

অলঙ্করন : প্রবা

অগ্নিঝরা মার্চখ্যাত ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের উত্তাল দিনগুলো যত গড়াতে থাকে, উত্তেজনার পারদ তত বাড়তে থাকে। বাঙালির মনে ধীরে ধীরে দৃঢ় হতে থাকে স্বাধীনতার স্পৃহা। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন’ এই স্লোগান তখন বাঙালির হৃদয়ে। স্বাধীনতার অগ্নিশপথে দৃপ্ত বাঙালির প্রাণ। একদিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে বাঙালির উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠা; অন্যদিকে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র- এই দ্বিমুখী সময়ের মধ্যে পেরিয়ে যেতে থাকে মার্চের দিনগুলো। মার্চের ১৩ তারিখে এসেও অব্যাহত থাকে বাঙালির অসহযোগ আন্দোলন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজপথে স্লোগানে, মিছিলে বাঙালির অবস্থান। বাঙালির কাছে এ সংগ্রাম তার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে সেদিন বাংলার প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে।

নিজের নিজের অবস্থান থেকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, জনতা। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাঙালিদের অসহযোগ আন্দোলন নস্যাৎ করতে এদিন এক আদেশ করে। ১১৫নং সামরিক আদেশে ১৫ মার্চ সকাল ১০টায় প্রতিরক্ষা বিভাগের সব বেসামরিক কর্মচারীদের কাজে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশে সামরিক কর্তৃপক্ষ হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে যোগদানে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত ও পলাতক ঘোষণা করে সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।’ এই সামরিক নির্দেশে আরও বলা হয়, ‘যেসব কর্মচারী নির্দেশ অমান্য করে কাজে যোগ না দেবে, তাদেরকে নির্দেশ অমান্যকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হবে।’ সামরিক কর্তৃপক্ষের এই দমননীতিমূলক নির্দেশনা জারির পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যখন আমরা সামরিক শাসন প্রত্যাহারের জন্য বাংলার জনগণের প্রচণ্ড দাবির কথা ঘোষণা করেছি, ঠিক তখন নতুন করে এ ধরনের সামরিক নির্দেশ জারি পক্ষান্তরে জনসাধারণকে উসকানি দেওয়ার শামিল।’

বঙ্গবন্ধুর ডাক দেওয়া অসহযোগ আন্দোলনে সাড়া দিয়ে শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সব  শ্রেণি- পেশার মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল হাকিম তাদেরকে দেওয়া পাকিস্তান সরকার প্রদত্ত খেতাব ও পদক বর্জনের ঘোষণা দেন। ১৩ মার্চ সকালে পাকিস্তানের করাচি থেকে ঢাকায় উড়ে আসেন ন্যাপের সভাপতি খান আবদুল ওয়ালী খান ও ন্যাপনেতা গাউস বক্স বেজেঞ্জো। পরিস্থিতির তীব্রতা এবং আগামীর সংকট মোকাবিলার উদ্যোগ হিসেবে ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ন্যাপপ্রধান বলেন, ‘আমি খোলামনে ঢাকা এসেছি, বর্তমান সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনার জন্য।’ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সামরিক শাসন প্রত্যাহারের বিষয়েও ন্যাপ সভাপতি নিজের মত প্রকাশ করেন। এদিকে পরিস্থিতির অগ্রগতি না হওয়া এবং ক্রমশ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায়, এদিন ঢাকাস্থ জাতিসংঘ ও পশ্চিম জার্মান দূতাবাসের কর্মচারী ও তাদের পরিবারসহ ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ২৬৫ জন নাগরিক বিশেষ বিমানে পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করেন।

পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবেশ এবং জনগণের বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে ওঠা, পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনে পাকিস্তানিদের কর্তৃত্ব হারানোতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন পশ্চিম পাকিস্তানের গণতন্ত্রকামী নেতৃবৃন্দও। পাকিস্তানের অনিবার্য হয়ে ওঠা ভাঙন তারা টের পেয়ে একটি জরুরি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি ও কাইয়ুমপন্থি মুসলিম লীগ ছাড়া অন্য সব বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকেন। বৈঠক শেষে নেতৃবৃন্দ পাকিস্তানের ভাঙন রোধে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা