৯ মার্চ ১৯৭১
০৯ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫১ পিএম
অলঙ্করন : প্রবা
মার্চ এমনই এক মাস, যা ইতিহাসের পাতায় অক্ষয়-অমলিন হয়ে থাকবে চিরকাল।
১৯৭১ সালের মার্চের প্রতিটি দিন বাঙালির জন্য এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। মার্চ এলে এ মাসের
প্রতিটি ঘটনা পত্রিকার পাতায় মঞ্চস্থ হতে থাকে। যা পাঠ করে নতুন প্রজন্ম বুঝতে পারে
কতটা আত্মত্যাগের ফসল আমাদের স্বাধীনতা।
১৯৪৭ সালে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় পাকিস্তান
রাষ্ট্র। পাকিস্তান রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর চলতে থাকে নতুন মাত্রার
শোষণ। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরু থেকেই বিস্ময়করভাবে জেগে ওঠে পূর্ব বাংলা। ১ মার্চ
আকস্মিকভাবে পাকিস্তান জাতীয় সংসদের বৈঠক স্থগিত করেন সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান।
ফলে গোটা পূর্ব পাকিস্তান বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ভবনের
সামনে ছাত্রসমাজ বাংলাদেশের নতুন পতাকা উত্তোলন করে। গোটা বাংলা মিছিলে মিছিলে ভরে
ওঠে। ৩ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে পাঠ করা হয় স্বাধীনতার ইশতেহার।
এর পর আসে জাতীয় ইতিহাসের অগ্নিঝরা মার্চের ৭, যেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দী
উদ্যান, সেদিনের রমনা রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক এক ভাষণে জাতির সামনে উপস্থাপন করেন
স্বাধীনতার চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা।
৯ মার্চ ১৯৭১। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের
ভাষণের পর এদিনে ঢাকার ঐতিহাসিক পলটন ময়দানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন মজলুম জননেতা
মওলানা আব্দুল হমিদ খান ভাসানী। তুমুল করতালির মধ্যে তিনি বলেন, ‘মুজিবের নির্দেশমতো
আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল
আন্দোলন গড়ে তুলব।’
পল্টনে সেই বিশাল জনসভায় মজলুম জননেতা
দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘অচিরেই পূর্ব বাংলা স্বাধীন হবে।’ বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি
একাত্মতা প্রকাশ করে মওলানা ভাসানী তাঁর দরাজ কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, ‘হে বাঙালিরা, আপনারা মুজিবের ওপর বিশ্বাস রাখেন, তাকে খামোকা কেউ অবিশ্বাস করবেন
না। কারণ মুজিবকে আমি ভালোভাবে চিনি।’
এই দিন তিনি তাঁর ভাষণের সঙ্গে ১৪ দফা দাবিও পেশ করেন। একইভাবে ভাসানী
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশে বলেন, ‘অনেক হয়েছে আর নয়, তিক্ততা বাড়িয়ে
লাভ নেই। “‘লা-কুম দিনিকুম অলিয়া দ্বীন’; অর্থাৎ তোমার
ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার; পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নাও। সাড়ে সাত কোটি
বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।”
সেদিন ভাষণে মওলানা ভাসানী এই বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। দুই প্রধান নেতার একই সিদ্ধান্তে চলে আসার একটি উদাহরণ স্থাপিত হলো সেদিন। তেমনি স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে দেশের মানুষ আরও একধাপ এগিয়ে গেল। তার পর চূড়ান্ত স্বাধীনতার লক্ষ্যে মুজিবের আলোচনা আর ভাসানীর সভা, সমাবেশ, জ্বালাও-পোড়াও-ঘেরাও আন্দোলনের চাপ অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের নামে নিরীহ বাঙালিদের ওপর শুরু করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ। ২৬ মার্চ শুরু হয়ে যায় স্বাধীনতা যুদ্ধ।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.