× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৬ মার্চ ১৯৭১

ইয়াহিয়ার ভাষণ তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে

আমিরুল আবেদিন

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৩ ১৫:০৩ পিএম

অলঙ্করন : প্রবা

অলঙ্করন : প্রবা

মার্চের শুরু থেকেই উত্তপ্ত বাংলা। সভা-সমাবেশ, মিটিং-মিছিল চলছে। অচল হয়ে আছে নানা প্রতিষ্ঠান। ৫ মার্চ সারাদেশে মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেকে নিহত হওয়ার পর স্বাধীনতার সব প্রস্তুতির কথাই সবাই ভাবতে শুরু করেন। এদিকে রাতে খবর পাওয়া গেল, ভুট্টোর সঙ্গে ইয়াহিয়া খান ৫ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক শেষ করেছেন। পশ্চিমারা যে কোনোভাবেই আপস করবে না তা স্পষ্ট। পরদিন অর্থাৎ ৬ মার্চ দুপুরে ইয়াহিয়া খানের তরফে এরই ঘোষণা পাওয়া গেল।

একাত্তরের ৬ মার্চ দিনটিও কম ঘটনাবহুল নয়। বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট ভেঙে ৩৪১ জন কয়েদি পালিয়ে যান। পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হন। রাজশাহীতে মিছিলকারীদের ওপর গুলি চলে, সেখানে ১ জন নিহত হন। খুলনায় সংঘর্ষ আর গুলিতে ১৮ জন নিহত, ৮৬ জন আহত হন। ছাত্রলীগ ও ডাকসু নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে সরাসরি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাংলাদেশের সব বেতারকেন্দ্র থেকে রিলে করার দাবি জানান। দুপুরে এক বেতার ভাষণে প্রথমেই দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানান। পূর্ব বাংলায় আন্দোলনকারীদের ইয়াহিয়া দুষ্কৃতকারী বলে অভিহিত করে বলেন, কতিপয় দুষ্কৃতকারী মিলে দেশে অরাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করছে। একই সঙ্গে তিনি ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন।

ইয়াহিয়া খানের বেতার ভাষণ জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এদিন ফের তীব্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঢাকার বাতাস। উত্তেজিত জনতা চিৎকার করে বলতে থাকে- ‘রক্ত চাও নেবে, তবু স্বাধিকার দিতেই হবে।‘ সারাদিন ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত হরতাল ছিল। রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি হলো। সশস্ত্র বাহিনীর ট্রাক আর অ্যাম্বুলেন্স ঘন ঘন যাতায়াত করছিল। কিন্তু বন্ধ ছিল না মুক্তিকামী বাঙালির মিছিল, মিটিং। স্লোগান উঠেÑ ‘জয় সর্বহারার জয়, জয় বিদ্রোহী বাংলার জয়, জয় নিপীড়িত মানুষের জয়’। একটি স্লোগান সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হতে থাকলÑ ‘ভুট্টোর মুখে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’

এদিন লাহোরে কাউন্সিল মুসলিম লীগ নেতা এয়ার মার্শাল নূর খান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ শাসনের বৈধ অধিকার রয়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের সব বাধা অবিলম্বে দূর করতে হবে। প্রেসিডেন্টের বেতার ভাষণে পরিস্থিতি অবনতির জন্য শেখ মুজিবকে দোষারোপ করায় নূর খান দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে সবই এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে চলে। এ সম্পর্কে অনুমান করাটা বেশ কঠিনই। জানা গেল প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত করেছেন। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো তা ঠিক বোধগম্য হয়নি। বাংলার মানুষের মনে তখন মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। কি হতে চলেছে ওইদিন তা জানার আকাঙ্ক্ষাই যেন প্রবল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জানান, ৭ মার্চ যা বলার বলবেন। সেখানেই জনতার পরবর্তী নির্দেশনা সম্পর্কে জানানো হবে। বাংলার মুক্তিকামী জনতা তখন অধীর আগ্রহে বঙ্গবন্ধুর কথা শোনার অপেক্ষায়। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির নেতা কি বলবেন, তা জানার অধীর আগ্রহ নিয়ে আরও একটি দিন অপেক্ষা করে বাংলার মানুষ।

 


 

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা