× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ডেঙ্গু

সচেতনতা ও প্রতিরোধ দুই-ই জরুরি

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫ ১৫:৪২ পিএম

সচেতনতা ও প্রতিরোধ দুই-ই জরুরি

দেশে মশা নিধন কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। আর এই দুর্বলতার কারণে চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুনে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। মৃত্যুও বেড়েছে ছয়গুণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত দেশে ৯ হাজার ৪৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে জুন মাসেই ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৩৯ জন। অথচ মে মাসে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৭৩ জন। অন্যদিকে এ বছরের শুরু থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। এর মধ্যে জুন মাসেই মারা গেছেন ১৮ জন। 

২৯ জুন প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ‘জুলাই-আগস্টে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জুলাই-আগস্ট মাসে সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। মে মাসের তুলনায় জুনে আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ হওয়ায় বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাইয়ে এ সংখ্যা জ্যামিতিক হারে চার থেকে পাঁচগুণ এবং আগস্টে দশগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। কারণ, যখন এডিস মশা এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীÑ দুটোই একসঙ্গে বাড়তে থাকে তখন রোগটির বিস্তার হয় দ্রুতগতিতে। 

মৌসুমের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বারবার ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে সতর্ক করছেন। তারপরও যথাযথ প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া উদ্বেগজনক। ডেঙ্গু প্রতিরোধে এখনও পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আশাজাগানিয়া কোনো কার্যক্রম আমরা লক্ষ করিনি। পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সেজন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রয়োজন জনসচেতনতাও। সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ কঠিন। মশা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক পদ্ধতি হলো এর বংশবৃদ্ধির পরিবেশ ধ্বংস করা। আমরা জানি, ডেঙ্গু মশা সাধারণত স্থির ও পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। তাই বাড়ির চারপাশে যাতে কোনো জায়গায় পানি জমে না তা দেখার পাশাপাশি বাড়ির আশপাশের ভাঙাপাত্র, ড্রেন, খাল ও নালা বা ডোবাতে পানি জমতে না দেওয়া ও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। মশক নিধনে ওষুধ ছিটানোর ক্ষেত্রে পরিবেশের দিকে লক্ষ রাখাও প্রয়োজন। সেইসঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসুরক্ষার দিকেও নজর দিতে হবে। এডিস মশার কামড় এড়াতে জোর দিতে হবে সকালে ও সন্ধ্যায় পুরো শরীর পোশাকে ঢেকে রাখার দিকে, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহারের ওপর। সেইসঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকেও অবশ্যই সব সময়ে মশারির মধ্যে রাখতে হবে, যাতে মশা তাকে কামড়াতে না পারে।

আমরা মনে করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে মশার লার্ভা ধ্বংস এবং উৎপত্তিস্থল নির্মূলের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক কর্তৃপক্ষ যেখানে ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে শুধু সেই নির্দিষ্ট স্থানগুলোতেই ফগিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। সেইসঙ্গে সাধারণের মধ্যে প্রচারণার মাধ্যমে যেখানে-সেখানে জমে থাকা পানি পরিষ্কার এবং পাত্র উল্টে রাখার মতো কাজগুলো করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ ও সম্পৃক্ত করারও উদ্যোগ নিতে হবে। এডিস মশার উপস্থিতি একসময় শুধু রাজধানীতে থাকলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রায় সব জেলাতেই। তাই জরুরি ভিত্তিতে দেশের সব জেলা, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনকে মশার লার্ভা ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসের প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দিতে হবে। যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়। প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে বাঁচতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। এজন্য প্রত্যেকেরই উচিত মশারির ভেতরে ঘুমানোর অভ্যাস করা। সেইসঙ্গে শুধু সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার ওপর নির্ভর না করে, নিজ উদ্যোগেও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার গুরুত্ব বুঝতে হবে।

ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা আগেও ছিল, এখনও আছে। আমরা একটু সতর্ক হলে, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য সময় থাকতেই ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা যেমন দিন দিন বাড়বে, তেমনি বাড়বে মৃত্যুহারও। তাই আমরা বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা আমলে নেওয়ার জন্য বলি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মশার আবাসস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি বছরজুড়েই মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ছিটানো, মানুষকে সচেতন করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর জন্যও বলি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা