× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫ ১১:৪১ এএম

প্রবা গ্রাফিক্স

প্রবা গ্রাফিক্স

ঈদের ছুটির আগে ও পরে বেশ কয়েকদিন রাজধানী কার্যত ফাঁকা থাকে। ইট-পাথরের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়েন রাজধানীর লাখ লাখ মানুষ। ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি থাকায় এবারের প্রেক্ষাপট অনেকটাই ভিন্ন। এ সময়ে ঢাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে নগরবাসী। কারণ কর্মময় ও ব্যস্ততায় ভরপুর থাকা রাজধানী তখন কার্যত অরক্ষিত। ছুটির পর আবারও এ শহর ফিরে যাবে তার চিরচেনা রূপে। কিন্তু যতদিন মানুষ না ফেরে ততদিন নানা শঙ্কা নিয়েই কাটাতে হবে অবশিষ্ট নগরবাসীকে। এ সময়টায় চুরি, ছিনতাই, খুন, ডাকাতির মতো অপরাধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি। যেহেতু রাজধানী ফাঁকা তাই অপরাধীরাও সুযোগ পায়। তখন নিরাপত্তায় একমাত্র ভরসা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফাঁকা ঢাকায় সাধারণ সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি কাজ করতে হয় তাদের। এ কারণে পুলিশ, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ২৪ ঘণ্টা তৎপর থাকতে হয়। 

২৭ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ‘ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত ডিএমপি’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটিতে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এ সময় মহানগরে তৎপর থাকবে অন্তত ১৫ হাজার পুলিশ। রাস্তায় তল্লাশিচৌকি বসানোর পাশাপাশি বিপণিবিতান ও আবাসিক এলাকায়ও টহল জোরদার করা হবে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি রোধে ঈদের আগে ও পরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছে ডিএমপি। তাদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় থাকছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও। জানা গেছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে বিভিন্ন বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশনে। পুরান ঢাকা ছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার জুয়েলারি মার্কেটে থাকবে পুলিশের কড়া নজরদারি। বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ফোর্স থাকবে। সাদা পোশাকেও নজরদারি থাকবে বিনোদনকেন্দ্রে। ইতোমধ্যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার, আড়তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে স্পর্শকাতর স্থান, সড়ক, স্থাপনা, মার্কেট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। ডাকাত, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে পুলিশ ও র‌্যাবের বিশেষ টিম সক্রিয় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিও। তিনি বলেছেন, ‘এ বছর দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় মানুষের জানমাল রক্ষায় অন্যবারের চেয়ে অধিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেকোনো ঝামেলা এড়াতে ৯৯৯-এ ফোন দিলে দ্রুত পুলিশের সহায়তা পাওয়া যাবে।’

আসলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এমন শঙ্কার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। বিগত কয়েক মাসে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সংঘর্ষ ছাড়াও প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি দিনদুপুরেও বিভিন্ন যানবাহনে ছিনতাই ও ডাকাতি হয়েছে অভিনব কায়দায়। ছিনতাইকারীরা ব্যবহার করছে দেশি ধারালো অস্ত্র এবং আক্রান্তরা বাধা দিতে গেলে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো তো বটেই, অলিগলিতেও হরদম ছিনতাই হচ্ছে এবং অপকর্ম করছে অপরাধীরা। কয়েক দিন ধর্ষণের ঘটনায়ও আতঙ্কিত ছিল মানুষ। অবস্থা এমন যে নগরবাসী রাস্তায় বেরোলেই সার্বক্ষণিকভাবে ভীতসন্ত্রস্ত থাকতে হয়, কখন তারা সন্ত্রাসের শিকার হয়। বাসাবাড়িতে ঢুকেও অস্ত্রের মুখে টাকা আদায় করার মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটছে অভিজাত এলাকায়ও। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দখলবাজি, চাঁদাবাজির মতো ঘটনাতো আছেই। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় যদিও বা কোথাও কোথাও এসব অপরাধের উপদ্রব কমেছে; কিন্তু সুযোগ পেয়েই তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে। কার্যত ৫ আগস্টের পর থেকেই লক্ষ করা গেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের একাংশ সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে বলে ধারণা করা হয়। এখনও বহু অস্ত্র উদ্ধার কিংবা লুটকারীকে আটক করা যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব এসব অস্ত্র উদ্ধার করে সব অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

ছুটির এ সময়টুকুতে রাজধানীতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতার কথাও বলা হয়েছে। বলা হয়েছে নিরাপত্তাবলয়ের কথাও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিশ্রুতিতে নগরবাসী আস্থা রয়েছে। নগরবাসী বিশ্বাস করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় তাদের জানমাল নিরাপদ থাকবে। তার পরও বলব, জানমালের নিরাপত্তায় নিজস্ব একটা বলয় থাকা জরুরি। বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিসমৃদ্ধ তালা ব্যবহারসহ প্রাথমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিতে হবে। সব নাগরিক নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক হলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে। আমরা চাই, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে রাজধানীর নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা