× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

রেলের টিকিট হোক কালোবাজারিমুক্ত

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৫ ১১:০৮ এএম

প্রবা গ্রাফিক্স

প্রবা গ্রাফিক্স

রেলের টিকিট সংগ্রহে নাগরিকের বিড়ম্বনার খবর পুরোনো। নানা কৌশল অবলম্বন করেও অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা দূর করা যায়নি। টিকিট সংগ্রহে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় জনদুর্ভোগ কমবে, এমন ধারণাও ছিল রেল কর্তৃপক্ষের। সেটা নিয়ে আত্মতৃপ্তিও লক্ষ করা গেছে। এতে কার্যত কোনো সুফল আসেনি। স্বচ্ছতার জন্য এখন অনলাইনেই বেশিরভাগ টিকিট বিক্রি হয়। কালোবাজারির মাধ্যমে প্রতারণা বন্ধ তথা যিনি টিকিট কিনেছেন তিনিই ভ্রমণকারী কি না, তা নিশ্চিত করতেই এ নিয়ম চালু করা হয়েছে। সাদা চোখে টিকিট কেনার প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ মনে হলেও সংকট একই তিমিরে ঘুরপাক খাচ্ছে। বরং বিড়ম্বনার পরিধি আরও প্রসারিত হয়েছে। এখন অভিনব কায়দায় সমাজমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট, গ্রুপ, পেজ খুলে একটি সংঘবদ্ধ চক্র চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সমাজমাধ্যমে ট্রেনের টিকিট বিক্রির কার্যক্রম বেড়েছে। এ চক্রটি সুযোগ পেয়ে রেলওয়ের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ বেশি দামে টিকিট বিক্রি করছে। শুধু তা-ই নয়, একই টিকিট একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে। এতে রেলযাত্রা অনেকটা অনিরাপদ হয়ে উঠছে। ফলে প্রতিদিনই কোনো-না কোনো যাত্রী প্রতারিত হচ্ছেন।

২১ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে রেলের টিকিট বাণিজ্য’ শিরোনামের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ প্রতারণার চিত্র। প্রতিবেদনের তথ্যমতে ফেসবুকে রেলওয়ে-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপে ঈদের আগে বিভিন্ন গন্তব্যের টিকিট বিক্রির পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তারা ২৩, ২৪ ও ২৫ তারিখের ঢাকা থেকে যেকোনো রুটের এসি, নন-এসি ও কেবিনের টিকিট বিক্রি করছে। শতভাগ নিরাপত্তায় যাত্রীর নিজস্ব আইডি দিয়ে টিকিট কনফার্ম করার কথাও বলা হচ্ছে। প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদক প্রতিবেদনের জন্য পোস্টে সংযুক্ত ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার টিকিট কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। জবাবে তাকে বলা হয়, এসি সিঙ্গেল টিকিটের দাম ১ হাজার ২০০ এবং এসি সিট টিকিটের দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী, ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত এসি সিঙ্গেল টিকিটের দাম ৯৪৯ এবং এসি সিট টিকিটের ১ হাজার ১৩৯ টাকা। দরকষাকষির একপর্যায়ে তিনি দাম ১০০ টাকা কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রতিবেদক সরাসরি টিকিট নেওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি শুক্রবার সকাল ১০টায় কমলাপুর স্টেশনে আসার কথা বলেন। টিকিট কিনে প্রতারিত হয়েছেন এমন একজন ‘ট্রেন টিকিট বায় অ্যান্ড সেলিং’ নামক ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, এক প্রতারক তিস্তা ট্রেনের টিকিট দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার টাকা নিয়ে ফেসবুকে তাকে ব্লক করে দিয়েছে। তিনি প্রতারকের বিকাশ নম্বরও শেয়ার করেছেন।

অভিনব প্রতারণার আরেকটি চিত্র, ফেসবুকে টিকিটের বিজ্ঞাপন দেখে অসাধু চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সোহরাব নামে একজন যাত্রী। দরদাম কষাকষির পর টিকিট মূল্য কিছুটা কম রাখার আশ্বাস দেওয়া হলে তাদের দেওয়া ঠিকানায় যান। তার বর্ণনা অনুযায়ী, অসাধু চক্রটি বিক্রির সময় তাদের নিজস্ব অ্যাপের মাধ্যমে টিকিটের গায়ে থাকা আগের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর মুছে তার তথ্য যুক্ত করে দেয়। 

নানা প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করেও রেলের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করা যায়নি, বরং বেড়েছে। উন্নত বিশ্বে রেলের টিকিট কালোবাজারি হয় না। সেখানে যাত্রী ট্রেনে ওঠার আগে যাত্রীর পরিচয়পত্র ঠিকভাবে যাচাই ও প্রযুক্তিগত দিকটি খতিয়ে দেখা হয়। আমাদের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, যথেষ্ট লোকবলের অভাবে এ যাচাইপ্রক্রিয়া ঠিকভাবে কার্যকর করা যায় না। ভাষ্যের যুক্তি গ্রহণযোগ্য হলেও দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। এতে প্রতারক চক্রই সুবিধা পাবে। যাত্রীদের অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেখানেই। 

আমরা মনে করি, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি রোধ করতে হলে এ সমস্যার অবশ্যই সমাধান করতে হবে। টিকেটিং পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, যারা বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম পরিচালনা করে, তারা মূলত টিকেটিং ব্যবস্থা তদারক করে থাকে। এক কথায়, রেল টিকেটিং ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করে অনলাইন টিকেটিং পরিষেবা দেওয়াই তাদের মূল কাজ। তারা যেহেতু কারিগরি দিক এবং ই-টিকেটিং সিস্টেম তদারক করেন তাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি। প্রয়োজনে টিকিট কেনার জন্য অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ছাড়া অন্য কোনোভাবে রেলসেবা অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকে পেমেন্ট সম্পন্ন করা যায় না সে পথ খুঁজতে হবে। রেলব্যবস্থা অতি পুরোনো এবং জনপ্রিয় নিরাপদ পরিবহনসেবা। এ সেক্টরটি টিকিট কালোবাজারি চক্রমুক্ত হোক এটাই কাম্য।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা