× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

আবরার হত্যার রায় দ্রুত কার্যকর হোক

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫ ১১:৪১ এএম

প্রবা গ্রাফিক্স

প্রবা গ্রাফিক্স

বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ রায়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালতও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষেই রায় দিলেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আরবারের পরিবার। তবে রায় দ্রুত কার্যকরের প্রত্যাশা আবরারের পরিবারের। রায় প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজ বার্তা গেল যে আপনি যত শক্তিশালী হোন না কেন, আপনার পেছনে যত শক্তি থাকুক না কেন, সত্য এবং ন্যায়বিচার একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই। ঘটনার প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা । ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর এই মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের রায় দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতাকর্মী ও সমর্থক। জানা গেছে, সমাজমাধ্যমে একটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকটি চুক্তির সমালোচনা করায় আসামিরা ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে; যা মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।

১৭ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ আবরার হত্যা মামলায় ‘২০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে জানা যায়, রবিবার আবরার হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণা করেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা শুরু হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রায় পাঠ করে শোনান। জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি শুরু হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। গত বছরের অক্টোবরে এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ৬ হাজার ৬২৭ পৃষ্ঠার ডেথ রেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। এরপর আসামিরা দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ফৌজদারি ও জেল আপিল করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। 

আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিই বলছে, আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে টানা কয়েক ঘণ্টা বেধড়ক পেটানো হয়েছিল। ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের কোন অনুশোচনাও ছিল না। আমরা মনে করি, হাইকোর্টের বহুলপ্রত্যাশিত এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ হলো। হাইকোর্টের রায়ে আপাতত সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত এক ধরনের শঙ্কার কথা কেউ কেউ বলছেন। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির কিছু স্তর এখনও বাকি। অতীতে এই মামলাটি সঠিক পথ থেকে ফেরাতে কথকতা শোনা গেছে। আবরারের পরিবারই নানা সময়ে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ জন শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। গত বছরের ৬ আগস্ট এ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি রাষ্ট্রীয় হেফাজত থেকে পালিয়ে যান, যা দেশবাসী জানতে পারেন সম্প্রতি। যার সন্ধান এখনও মেলেনি। এ আসামিসহ পলাতকের সংখ্যা এখন ৪। তবে মামলাটি যেহেতু ব্যাপক আলোচিত তাই হাইকোর্টের এ রায় সমাজব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতেও সহায়ক হবে।

বুয়েটের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে শুধু মেধাবীরাই শিক্ষালাভের সুযোগ পান, সেখানে এমন নিষ্ঠুর কলুষিত অধ্যায় সূচিত হোক কারও কাম্য ছিল না। অবাক করা বিষয়, হত্যাকারী সবাই মেধাবী শিক্ষার্থী। এ মেধাবী ছাত্ররাই রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে, তাদের সতীর্থকে যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তা এক কথায় বর্বরতা। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির চর্চা হওয়া উচিত কল্যাণের। এ ঘটনার শিক্ষা নিয়ে এখন থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। অভিভাবকরা চান না, তাদের সন্তান অপরাজনীতির ঘেরাটোপে জীবন দিক। আবরার হত্যার মতো নিষ্ঠুরতা কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা