× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জলবায়ু পরিবর্তন ও লিঙ্গ সমতা

ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:২১ এএম

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

অলঙ্করন : জয়ন্ত জন

গত ১৪ নভেম্বর জলবায়ু সম্মেলনের অষ্টম দিনটি জেন্ডার এবং পানি দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা এবং টেকসই পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য। তাই এদিন সম্মেলনে মূলত জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় নারীদের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ, বিশ্বজুড়ে এক্ষেত্রে তাদের সফলতা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে নারীর ভূমিকা,বিশ্বজুড়ে পানিসম্পদের ঘাটতি, বন্যা, খরা, আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা এবং দুর্যোগের পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নতি আলোচনায় গুরুত্ব পায়।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য। সারা বিশ্বে নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব দীর্ঘদিন ধরে বহন করে চলছে কিন্তু এই প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আলোচনায়, বাস্তবায়নে, এমনকি সিদ্ধান্তগ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ খুবই অপ্রতুল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা অগ্রগতি হলেও এখনও জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলার কার্যক্রমে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার জন্য অনেক বেশি কাজ করতে হবে। কপ-২৭ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বৈশ্বিক পদক্ষেপগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বাঁচা-মরার মুহূর্ত। পৃথিবী এই মুহূর্তে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার মতো অবস্থায় নেই। আর গত বছরের প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর পরে এই বাস্তবতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং বিভিন্ন দুর্যোগের আকারে জলবায়ু পরিবর্তনের বাড়তি প্রভাবের ফলে জলবায়ুতে কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে আনাসহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য বিশাল বাধা সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় প্যারিস চুক্তিটি অপ্রাসঙ্গিকতার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। একটি সফল কপ-২৭ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অপরিহার্য।

জলবায়ু পরিবর্তনের যে লিঙ্গগত প্রভাব রয়েছে তা এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও খরার মতো দুর্যোগগুলোতে প্রতিবছর অসংখ্য পরিবার আর্থিক দুর্দশার কবলে পড়ে। আর পরিবারের এই আর্থিক দুর্দশার বলি হয় নারীরা। দারিদ্র্যের কারণে মেয়ে শিশুরাই প্রথমে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। এ ছাড়া ভরণপোষণ করতে না পেরে ‘সহজ সমাধান’ হিসেবে মেয়ে শিশুদের বিয়ে দিয়ে দেয় পরিবারগুলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান অ্যাকশনএইডইউকের নতুন এক গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কেনিয়া, রুয়ান্ডা, জাম্বিয়া ও নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলোতে লিঙ্গগত সহিংসতা বেড়েই চলেছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য। শুধু তাই নয়, বৈশি^ক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। এখানেও সেই নারী ও শিশুরাই সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।

সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পুরুষদের চেয়ে নারীর ওপর বেশি পড়ে। এমনিতেই বেশিরভাগ সামাজিক পরিস্থিতিতে নারীরা পুরুষের তুলনায় অরক্ষিত অবস্থায় থাকেন। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোনো দুর্যোগ নারীকে আরও বেশি বিপদে ফেলে দেয়। যেমন, আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলের রোজমেরির কথাই ধরা যাক। একসময় কৃষিকাজ করতেন রোজমেরি। কিন্তু এখন তার আর কৃষিকাজের ব্যস্ততা নেই। দিনের বেশিরভাগ সময় তার চলে যায় পানীয় জলের খোঁজে। পরিবারের পানির চাহিদা পূরণে তাকেই বাইরে বের হতে হয়। হাঁটতে হয় কয়েক মাইল বন্ধুর পথ। উত্তর কেনিয়ায় রোজমেরির এলাকায় বহুদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে পানীয় জলের ৯০ ভাগ উৎসই শুকিয়ে গেছে। তীব্র খরায় ধুঁকছে পুরো অঞ্চল। শুধু রোজমেরি নয়, তার মতোই বিপাকে পড়েছে ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ নারী। দীর্ঘমেয়াদি খরা আর পঙ্গপালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ উত্তর কেনিয়ার অধিবাসীরা। একসময় রোজমেরির জীবিকার প্রধান উপায় ছিল কৃষিখামার। কিন্তু পঙ্গপালের আক্রমণে তা বারবার ধ্বংস হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে এখন পশুপালন করেন তিনি। কিন্তু এখানে সেই জলবায়ু পরিবর্তনের অবর্ণনীয় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে। পানীয় জল ও চারণভূমির অভাবে সম্প্রতি তার দুটো গরু মারা গেছে। যা তাকে আর্থিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু রোজমেরির নয়, খরার কারণে তার এলাকার সব কৃষকেরই আয় কমে গেছে। ফলে কৃষি পরিবারগুলোতে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের বাল্যবিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের এমন অনিশ্চিত সময়ে পরিবারগুলোতে মেয়েদের বাল্যবিয়ের সম্ভাবনা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। যা নারীদের শিক্ষা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ ও বিরূপ প্রভাবের শিকার হয়েও রোজমেরির মতো নারীরা বসে নেই। তারা জানে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু তাই নয়, পরিবেশ ও প্রকৃতির ইতিবাচক বদলের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ট তারাই। যেমন, রোজমেরি উত্তর কেনিয়ায় স্থায়ীয় অধিকার সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। স্থানীয় নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করে তার সংগঠন। সেই সঙ্গে মানবাধিকার নিয়ে নারীদের নানাভাবে সচেতন করছে।

স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব মোকাবিলায় নারীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোজমেরির মতো নারীরা নিজ সমাজ ও সম্প্রদায়কে নতুন করে গড়ে তুলতে সক্ষম। তবে এক্ষেত্রে তাদের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে প্রয়োজন একটু সুযোগ ও সহযোগিতা। কিন্তু বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই এসব নারী চরমভাবে অবহেলিত। যেমনি নিজ দেশে, ঠিক তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও। এসব নারী খুব কমই সংবাদপত্রের শিরোনাম হন। রাজধানীর বড় কোনো হলে তাদের কণ্ঠ শোনা যায় না। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যেখানে বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সেখানে তাদের প্রবেশাধিকার নেই বললেই চলে। এমনকি মিসরে চলমান জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৭-এ তার ব্যতিক্রম কিছু দেখা যায়নি।

সম্মেলনের অষ্টম দিনে জেন্ডার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর মোট সাতটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা হয়েছে। প্রথম অধিবেশনে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু নিয়ে কাজ করা নেতৃস্থানীয় নারীদের একত্রিত করে জলবায়ু নিয়ে আলোচনা এবং বাস্তবায়নে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করা হয়, দ্বিতীয় অধিবেশনে ইউএনএফসিসিসির সকল সদস্য দেশের নারীদের কাছ থেকে ডব্লিউইসিসির বাস্তবায়ন এবং ইউএনএফসিসিসির উদ্দেশ্যসমূহের গ্যাপ নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা শোনা হয়। তৃতীয় অধিবেশনে নারীদের বিভিন্ন বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থায়নে অন্তর্ভুক্তিকরণের ওপর আলোচনা হয়। চতুর্থ অধিবেশনের আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং পলিসি নিয়ে আফ্রিকান নারীদের অভিজ্ঞতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। পঞ্চম অধিবেশনে নারীর ওপর কোভিড-১৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং এই প্রভাব থেকে উত্তরণের জন্য সর্বোত্তম উপায় বের করার জন্য পলিসি পরিকল্পনার ওপর আলোচনা হয়। ষষ্ঠ অধিবেশনে বিভিন্ন এলাকা যেমন, শহর, গ্রাম এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী নারীদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তাদের সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। শেষ অধিবেশনে জেন্ডার দিবসের সব অধিবেশনের সুপারিশগুলো সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এ ছাড়াও শিশু ও নারীর লিঙ্গ সমতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

পানি জীবন ও জীবিকার উৎস। পানিসম্পদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতোমধ্যেই আইপিসিসিসহ অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তাই কপ-২৭ সম্মেলনে অ্যাওয়ার নামের একটি উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়, যার লক্ষ্য হচ্ছে কীভাবে পানিসম্পদের ক্ষতি হ্রাস করা, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ উন্নত করা, পানি ও জলবায়ুকর্মের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ককে উন্নতি করা যায়। এ ছাড়া পানিসম্পদ সেক্টরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাসে প্রাথমিক সতর্কতা এবং প্রাথমিক অভিযোজন কর্মকাণ্ড, নদীর অববাহিকা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য রিমোট সেনসিং প্রযুক্তির গুরুত্ব, পানিসম্পদের নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়ন, আফ্রিকায় পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় জলবায়ু অভিযোজন প্রক্রিয়া, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব ও সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া কপ-২৭-এর প্রেসিডেন্ট সামেহ শুকরির নেতৃত্বে কপ-২৬ গ্লাসগো সম্মেলনে ২০৩০ সালের পূর্বে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমিত করার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তার ওপর মন্ত্রীপর্যায়ের একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গোলটেবিল বৈঠকে বৈশি^ক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে সবার একসঙ্গে কাজ করার এবং ইতোমধ্যে নেওয়া এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য। সারা বিশ্বে নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব দীর্ঘদিন ধরে বহন করে চলছে। কিন্তু এই প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আলোচনায়, বাস্তবায়নে এমনকি সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ খুবই অপ্রতুল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা অগ্রগতি হলেও এখনও জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলার কার্যক্রমে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার জন্য অনেক বেশি কাজ করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।


লেখক : বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ; ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ; যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর চেয়ারম্যান





শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা