প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২১ এএম
বন্য প্রাণীর সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিন
বন্য প্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রকৃতির অপরিহার্য অংশও এ প্রাণিকুল। এরা বিশ্বের খাদ্যশৃঙ্খলে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। উদাহরণ দিয়ে যদি বলি, বাঘের মতো শিকারি প্রাণী যদি বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে গিয়ে বনজ সম্পদের ওপর চাপ তৈরি করত। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নানা কারণে বন্য প্রাণী আজ হুমকির পথে। বন কেটে ফেলা, প্রাণীদের অবৈধ শিকার, পানি, মাটি ও বায়ু দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তন বন্য প্রাণীদের জন্য চরম হুমকি। যে কারণে বহু প্রজাতি এখন বিলুপ্তির পথে। তাই বন্য প্রাণী রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বনভূমি কেটে কৃষিজমি তৈরি, শিল্প স্থাপন এবং অবৈধ শিকার বন্য প্রাণীর সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই বন্য প্রাণী বাঁচাতে নিয়ন্ত্রিত ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
তাই বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য এবং তাদের সুরক্ষার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের সাহায্যে সাধারণ মানুষকে বন্য প্রাণীর গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বনাঞ্চলের নিকটবর্তী মানুষকে বন্য প্রাণী রক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বন ধ্বংস রোধ ও নতুন বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে; যা প্রাণীদের নিরাপদ আবাস নিশ্চিত করবে। এর সঙ্গে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় যে নীতিমাল রয়েছে তা সঠিকভাবে পালন, প্রয়োজনে নতুন আইন তৈরি করে তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা দরকার। আসলে বন্য প্রাণী রক্ষা মানে প্রকৃতির প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সহাবস্থান বজায় রাখতে হলে বন্য প্রাণী সুরক্ষায় এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
গ্যাস সংকট নিরসন করুন
ঢাকা শহরের দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা গ্যাস সংকট; যা সাম্প্রতিক সময়ে আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সকাল ও সন্ধ্যায় গ্যাসের চাপ এতটাই কম থাকে যে, অনেক পরিবারকে চুলা জ্বালানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই বিকল্প হিসেবে বিদ্যুচ্চালিত চুলা বা এলপি গ্যাস ব্যবহার করছেন। কিন্তু সেটাও আর্থিকভাবে অনেকের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেক এলাকায় গভীর রাতে গ্যাস আসে, যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে রাতেই রান্নার কাজ সারছেন। এ ছাড়া শিল্পকারখানার উৎপাদন এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষ করে রাজধানীর মিরপুর, বাসাবো, রামপুরা, খিলগাঁও, বনশ্রী, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, উত্তরাসহ অনেক এলাকায় প্রতিদিনই গ্যাসের অভাব দেখা দিচ্ছে। দিনের বেশিরভাগ সময়ে গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় নগরবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ সংকটের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরোনো সরবরাহ লাইন, চাহিদার তুলনায় কম উৎপাদন এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব। জানা যায়, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩৮০ কোটি ঘনফুট হলেও সরবরাহ মাত্র ২৬০ কোটি ঘনফুট। এ বিশাল ঘাটতির কারণে রাজধানীসহ সারা দেশে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া শীতকালে চাহিদা বৃদ্ধি এবং এলএনজি টার্মিনালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে গ্যাসের সরবরাহ আরও কমে গেছে।
সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি, পুরোনো পাইপলাইন সংস্কার এবং অবৈধ সংযোগ বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। জনগণের এ দুর্ভোগ আমলে নিয়ে বিকল্প জ্বালানি উৎস ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেÑ এ প্রত্যাশা করছি।