× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অপরাধের উৎসে নজর দিতে হবে

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০৯ পিএম

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:১০ পিএম

অপরাধের উৎসে নজর দিতে হবে

২০২৪ সাল বিদায় নিতে যাচ্ছে। কিন্তু বিদায়ি বছর ও আগামী বছর সামনে রেখে সংবাদমাধ্যম, সচেতন জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিদায়ি পরিস্থিতি বিশ্লেষণের অগ্রভাগে আসে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের গত এক বছরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিংবা অপরাধের মাত্রা অনুসন্ধানে প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ৩০ ডিসেম্বর যে চিত্র উঠে এসেছে তা স্বস্তির নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের নথি থেকে ২০২৪-এ ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের খণ্ডচিত্রের পাশাপাশি বেশ কিছু ঘটনা আলোচনায় এসেছে। প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৭৬৯টি। একই সময়ে ডাকাতি ঘটেছে ৪১৯টি, ছিনতাই বা দস্যুতা ১ হাজার ২৫৩টি এবং চুরি ৭ হাজার ৯২৬টি। উল্লেখ্য, সব ঘটনাই যে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে কিংবা পুলিশের নথিভুক্ত হয় তা-ও কিন্তু নয়।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সৃষ্ট ছাত্র আন্দোলন থেকে শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। ৫ আগস্টের পূর্বাপর জননিরাপত্তা কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়ে এবং কয়েক মাস অন্তিমে এখন পর্যন্তও এ থেকে উত্তরণ ঘটেনি। আমরা দেখছি, সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেই চলেছে এবং এর কোনোটিই স্বাভাবিক মাপের নয়। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই আশঙ্কা, ভবিষ্যতে জননিরাপত্তায় আরও অভিঘাত লাগতে পারে। বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে নানানরকম পদক্ষেপ বিশেষ করে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও আমরা দেখছি, এ অভিযানেও সমাজবিরোধীদের দুষ্কর্ম থেকে নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। আমরা জানি, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কিংবা অপরাধের লাগাম টানতে পুলিশের ভূমিকা মুখ্য। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পুলিশের ক্ষেত্রে যে ভঙ্গুরতা দৃশ্যমান হয় সরকারের নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও এখনও পুলিশের কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গতিশীল করা যায়নি। সমাজবিরোধী চক্র এরও যে সুযোগ নিয়েছে তাতে সন্দেহের কারণ আছে।

ইতঃপূর্বে এ সম্পাদকীয় স্তম্ভেই আমরা বলেছি, জননিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে মানবাধিকারে অভিঘাত লাগে। মানবাধিকারের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো জননিরাপত্তা। আমরা এও দেখেছি, সংবাদমাধ্যমেই প্রশ্ন উঠেছেÑ গুরুতর অপরাধীদের অনেককেই কারামুক্ত করে দেওয়ার বিরূপ প্রভাব সমাজের নানা ক্ষেত্রে পড়েছে। আগামী দিনের জননিরাপত্তা নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণক্রমে যে সুপারিশ বা প্রস্তাব সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে তা আমলে নিয়ে আগামীর নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা সাজানো বাঞ্ছনীয় বলেও আমরা মনে করি। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে কিংবা অপরাধের উৎসমুখ বন্ধ করতে না পারলে এর বহুমাত্রিক অভিঘাত নাগরিক সমাজ ও সরকারের জন্য অস্বস্তি আরও বাড়াবে।

দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আমরা এও দেখছি, সম্প্রতি হঠাৎ করে সংস্কার ও নির্বাচন কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এর বিরূপ ফলও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিংবা জননিরাপত্তায় বৈরী ছায়া ফেলছে। অপরাধের উৎস বহুমাত্রিক। রাজনৈতিক অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক ঢিলেঢালা ভাব, মূল্যবোধ চর্চার অভাব, সংস্কৃতিচর্চার পথে অন্তরায়ের বিষয়গুলোও অপরাধের মাত্রা বাড়ায় কিংবা জননিরাপত্তার হানি ঘটায়। আমরা মনে করি, অতীতের দৃশ্যপটগুলো পর্যালোচনা করে আগামীর পথরেখাগুলো সৃজন করা বাঞ্ছনীয়। বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এবং কয়েকটি সংস্কার কমিশনও ইতোমধ্যে গঠন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ বাহিনীর সংস্কারের বিষয়টিও। আমরা মনে করি, অপরাধের উৎস নির্মূলে কিংবা জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী যাতে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে সরকারের করণীয় কাজগুলো দ্রুত সম্পাদন করা জরুরি।

সবার আগে জননিরাপত্তা। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গেলে অপরাধের উৎস সন্ধানের পাশাপাশি সমাজবিরোধীদেরও চিহ্নিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে একটি বাদ দিয়ে অন্যটি সম্ভব নয়। আমাদের মতো সমাজে কী করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় কিংবা এর নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের ব্যর্থতা কেন পরিলক্ষিত হয় এর কারণগুলোও সচেতন মানুষ মাত্রেরই কমবেশি জানা। আমরা মনে করি, স্থিতিশীল কিংবা শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উল্লিখিত সব বিষয়ের দিকেই সমগুরুত্বে নজর গভীর করা জরুরি। জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট এ ব্যাপারে ‍উদাসীনতার যেমন বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই তেমন প্রতিটি অপরাধের হোতাদের সন্ধান করে আইনের আওতায় এনে দণ্ড নিশ্চিত করা জরুরি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা