পরিপার্শ্ব
কবিরুল ইসলাম
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৮ এএম
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে কর্মরত একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান অ্যাসিস্ট্যান্স ফর ব্লাইন্ড চিলড্রেন (এবিসি)।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে কর্মরত একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান অ্যাসিস্ট্যান্স ফর ব্লাইন্ড চিলড্রেন (এবিসি)। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং ১৯৮০ সালে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোয় নিবন্ধিত। এবিসির মূলমন্ত্রÑ যাদের দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব তাদের চিকিৎসার মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ফেরানো। আর যাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় তাদের শিক্ষা এবং সামাজিক পুনর্বাসনের আওতায় এনে সমাজের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে মর্যাদাপূর্ণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা। এবিসি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ দীর্ঘ যাত্রায় এবিসিকে সাইটসেভার্স ইন্টারন্যাশানাল সংস্থাটি ২৭ বছর এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাড়ে তিন বছর সমাজভিত্তিক পুনর্বাসন (সিবিআর) প্রকল্পের মাধ্যমে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে।
বর্তমানে উন্নত
চক্ষুসেবা দানের জন্য এবিসির দুটি আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের
বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের জন্য সাত জেলায় সাতটি আবাসিক হোস্টেল রয়েছে। এসব হোস্টেলে
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের থাকাখাওয়া, পড়াশোনা ও কোচিং, চিকিৎসাসহ সব দায়িত্ব
বহন করছে এবিসি। এবিসি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক পুনর্বাসনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আর সে দায়বদ্ধতা থেকেই এবিসি গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের
সহায়তা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২৭ আগস্ট এবিসির প্রেসিডেন্ট মো. আখতারুল
আলম এবং ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট মিসেস মুনিরা খান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের
চিকিৎসা কার্যক্রম সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেন ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট
ও হাসপাতালে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসারত চোখে আঘাতপ্রাপ্ত রোগী এবং তাদের স্বজনদের
সঙ্গে কথা বলেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সরকারি খরচে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোগীদের বারবার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসার যে আর্থিক খরচ তা অনেকের পক্ষেই বহন করা সম্ভব নয়। ফলে হাসপাতালে ভর্তি চোখে আঘাতপ্রাপ্ত আহতদের শুধু সমবেদনা জ্ঞাপনই নয়, এবিসি তাদের চিকিৎসার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়। চোখে আঘাতপ্রাপ্ত অসচ্ছল রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য এবিসির নির্বাহী কমিটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম দফায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার সময় অসচ্ছল ৫০ রোগীর প্রতি জনকে ৫ হাজার করে মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় দফায় যেসব রোগী দুই চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের মধ্য থেকে অসচ্ছল ২৮ জনকে বাছাই করে প্রতিজনকে ৯ হাজার করে মোট ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। দুই দফায় মোট ৭৮ জন চোখে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে সর্বমোট ৫ লাখ ২ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ বাছাই প্রক্রিয়ায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উক্ত হাসপাতালে প্রশিক্ষণরত এবিসির সিনিয়র মেডিকেল অফিসারকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করে। এবিসির প্রেসিডেন্ট মো. আখতারুল আলমের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন এবিসির নির্বাহী পরিচালক সঞ্জয় রঞ্জন কর।