× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বৈষম্যমূলক নীতিমালা থাকবে কেন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৭ এএম

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বৈষম্যমূলক নীতিমালা থাকবে কেন

দেশের আর্থিক খাত তো বটেই অন্য যেকোনো খাতের তুলনামূলক বিচারে ব্যাংক খাত অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং ‍গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখেছি, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শাসনামলে এই খাতে অনাচার-দুরাচার-কদাচারের ছায়া ছড়িয়েছে রাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে। এই প্রেক্ষাপটেই খাতটিতে সৃষ্টি হয় চরম বৈষম্য। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বৈষম্যমূলক নীতিমালায় চরম বিশৃঙ্খলা শিরোনামে ২৭ নভেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি এ থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে ভিন্ন নীতি অনুসরণের কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক যোগ্য কর্মকর্তা। এ নীতির কারণে একই ব্যাচের কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হয়ে যাচ্ছেন আবার যোগ্যতা থাকার পরও কেবল নীতিমালার কারণে জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হতে পারছেন না অনেকে। আর এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে পদায়নের নিয়মের কারণে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়ে যাচ্ছেন অনেক অনুজ কর্মকর্তা।

এই পরিস্থিতি যেখানে বিদ্যমান সেখানে অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়া কিংবা বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা জানি, যেকোনো ক্ষেত্রে সাম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বৈষম্য কেবল বিভেদ-বিভাজনই সৃষ্টি করে না, একই সঙ্গে কর্মপ্রক্রিয়ায়ও অভিঘাত ফেলে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বিদ্যমান নীতিমালার কারণে এমনটিই এখন স্পষ্ট দৃশ্যমান। বৈষম্যমূলক নীতিমালা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মকর্তারা কিন্তু তারপরও এর সমাধান না করেই পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জ্যেষ্ঠ ও দক্ষ কর্মকর্তারা। সরকারি ব্যাংকগুলোর পদোন্নতির বৈষম্য দীর্ঘদিনের এবং এর ফলে যেসব ব্যাংকে দ্রুত পদোন্নতি হয়, কিংবা রুটিনমাফিক এই কাজের বিঘ্ন ঘটে তখন ক্ষুব্ধ ও ন্যায় বা অধিকার বঞ্চিতদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

আমরা মনে করি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বৈষম্যমূলক নীতিমালা রদ না করে কোনোভাবেই পদোন্নতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত নয়। এর ফলে সমস্যা আরও গভীর হবে এবং বিপদগ্রস্ত আর্থিক খাতের অন্যতম এই খাতটি আরও বেশি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের করা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন পদোন্নতি কিংবা পদায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে, এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। যেহেতু ক্ষমতাচ্যুত সরকারের এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অনেক সীমাবদ্ধতা ও অসংগতি রয়েছে সেহেতু ওই নীতিমালা অনুসারে পদোন্নতি কিংবা পদায়নের প্রক্রিয়া বুমেরাং হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় অর্থনীতির ওপর এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টাকেও ব্যাহত করতে পারে।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে বিআরসির (ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটি, বাংলাদেশ ব্যাংক) মাধ্যমে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকে ব্যাপক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একই সঙ্গে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা বিভিন্ন ব্যাংকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। এর ফলে যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে তাতে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এও অভিযোগ আছে, যেসব ব্যাংকে নিচের দিকে বিলম্বে পদোন্নতি হয় সেসব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিজনিত বৈষম্য আরও উস্কে দেবে বিদ্যমান প্রক্রিয়া। আমরা মনে করি, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচিত এখনই এ ব্যাপারে গভীর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালা যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে একই সঙ্গে যে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে তা কোনোভাবেই সুখকর নয়। ব্যক্তি বা মহল বিশেষে সুবিধা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এও অভিযোগ উঠেছে।

পদোন্নতির ক্ষেত্রে মেধা-অভিজ্ঞতা- জ্যেষ্ঠতার মূল্যায়ন লঙ্ঘিত হবে তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর বিষয়টির প্রতি আশু দৃষ্টি দিয়ে এর যথাযথ প্রতিবিধান নিশ্চিত করবেন। আমরা মনে করি, ব্যাংক খাতের জন্য সৃষ্ট জটিল এই সমস্যার আশু সমাধান করা উচিত। এ সমস্যা জিইয়ে থাকলে চূড়ান্ত অর্থে ব্যাংক খাতের জন্য তা কোনো সুফল বয়ে আনবে না। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সহযোগী একটি সংবাদমাধ্যমে সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালায় বৈষম্য আরও বাড়বে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক খাত বিশ্লেষকদের সুপারিশ উপস্থাপন করে তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়াস চালিয়েছিলেন। কিন্তু এর যে কোনো সুফল মেলেনি বিদ্যমান বাস্তবতা এরই সাক্ষ্যবহ। আমরা মনে করি, সময় অনেক গড়িয়েছে তাই এ ব্যাপারে আর উদাসীন থাকা কোনোভাবেই সমীচিন হবে না। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা