× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

নৈরাজ্য থামাতেই হবে

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪২ এএম

নৈরাজ্য থামাতেই হবে

গত দুই-তিন দিন ধরে রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও মাতুয়াইলের ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশেষ করে ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সংঘাত-সংঘর্ষের চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে তা যেকোনো শান্তিপ্রিয় মানুষকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না। ২৬ নভেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ১৬ নভেম্বর সকালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হালদারের মৃত্যু ঘটে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর ঘটনাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি দাবি করে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা ২০ ও ২১ নভেম্বর হাসপাতালটি অবরোধ করে রাখে। একই সঙ্গে তাদের দাবি, ওই দুই দিন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ নিয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা মোল্লা কলেজের ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, বিভিন্ন নাম দিয়ে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে সব পক্ষের শিক্ষার্থীরাই সহিংসতা চালিয়েছে। গত দুই-তিন দিনে তাদের সহিংস কর্মকাণ্ডে সাধারন মানুষসহ উভয়পক্ষেরই অনেকে আহত হন। কোনো কোনো কলেজের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগও উঠেছে।

আমরা দেখছি, যেকোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধরা সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছেন, সড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি প্রকট করে তুলছেন এবং একই সঙ্গে জননিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার উৎসে নজর দেওয়ারও দাবি জানাই। গত কয়েক দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ভিন্ন ভিন্নভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন। আমরা মনে করি, সবার আগে জননিরাপত্তা। যেকোনো ঘটনার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিংবা সমাজব্যবস্থায় সিদ্ধ হলেও তা যাতে কোনোভাবেই জনদুর্ভোগ কিংবা সহিংসতায় রূপ না নেয়, তাও স্বীকৃত। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, সম্প্রতি যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামের অংশীজনরা এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে চলেছেন। গত কয়েক দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নামে যা ঘটেছে তা এর বাইরে কিছু নয়। কথায় কথায় দাবি নিয়ে কিংবা প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে এসে বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্য সৃষ্টির অশুভ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতঃপূর্বে ঢাকা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীর স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় রূপ নেয়। তাতে জনদুর্ভোগ বাড়ার পাশাপাশি জননিরাপত্তায় অভিঘাত লাগে। ওই ঘটনায়ও শিশু-নারীসহ অনেকেই আহত হন।

এ ধরনের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ না হয়ে পারি না। আমরা মনে করি, কোনোভাবেই এমনটি বাঞ্ছনীয় নয়। আন্দোলনের নামে যেকোনো ধরনের নৈরাজ্য বন্ধ করতেই হবে। কোনো গোষ্ঠী বা মহল বিশেষের দাবি-দাওয়া কিংবা প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত যে সহিংস রূপ ধারণ করেছে এবং এর ফলে জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশের নিত্য বিড়ম্বনার চিত্র সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তা কোনোভাবেই স্বস্তির নয়। ইতঃপূর্বে এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই বলেছি, উগ্রতা-হিংস্রতা কিংবা সাধারণ মানুষের অধিকারে অভিঘাত লাগে এমন কিছুই আমরা সমর্থন করি না। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আন্দোলনকারীদের অন্যের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে আমলে রাখা উচিত। সম্প্রতি তৈরি পোশাক শিল্প-কারখানার শ্রমিকরা গাজীপুর, আশুলিয়া ও টঙ্গী এলাকায় লাগাতার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনের নামে মানুষের অধিকারের পথে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন তা-ও কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার নয়। আমরা মনে করি, প্রতিটি ঘটনার উৎসে নজর দেওয়া জরুরি।

সরকারের দায়িত্বশীল কেউ কেউ বলছেন, উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে। আমরা মনে করি, এরও উৎস সন্ধানের দায়িত্ব এবং দায় সরকারেরই। বিদ্যমান সমস্যাগুলোর দিকে সরকারকে আরও গভীরে নজর দিতে হবে এবং একই সঙ্গে সবার আগে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাঞ্ছনীয়। জনদুর্ভোগ ও সহিংসতার ছায়া সরিয়ে স্বস্তির আবহ সৃষ্টির দায়ও সরকারেরই। আমরা শান্তির পক্ষে, কোনোরকম বিশৃঙ্খলা কিংবা অধিকার আদায় ও প্রতিবাদের নামে কোনোভাবেই সহিংসতার অবকাশ নেই। আমরা আরও মনে করি, এসব ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজর আরও গভীর করা জরুরি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা