× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

সামুদ্রিক মাছ রপ্তানিতে প্রতিবন্ধকতা দূর করুন

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৩ এএম

সামুদ্রিক মাছ রপ্তানিতে প্রতিবন্ধকতা দূর করুন

আমাদের রপ্তানি পণ্যের তালিকা দীর্ঘ নয়। এর মধ্যে যদি কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কোনো পণ্য রপ্তানিতে ব্যাঘাত ঘটে, তাহলে তা অর্থনীতির জন্য নিশ্চয়ই শুভবার্তা নয়। এমনই একটি রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার চিত্র ৬ অক্টোবর প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। জাতীয় স্বার্থে সেদিকে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহলগুলোর নজর গভীর করতে হবে। প্রতিবেদনে হিমায়িত সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি কমার তিন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। একদিকে হিমায়িত সামুদ্রিক মাছের চাহিদা বিশ্ববাজারে বাড়ছে, অন্যদিকে দেশে সামুদ্রিক মাছ আহরণ কমার পাশাপাশি কমপ্লায়েন্সে কড়াকড়ির কারণে রপ্তানির পারদ ক্রমেই নিম্নগামী হচ্ছে। প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, এক বছরের ব্যবধানে সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি থেকে দেশের আয় কমেছে অন্তত ৬৪ কোটি টাকা, শতাংশের হারে যার পরিমাণ এগারো শতাংশ। মাছ রপ্তানি বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বটে, কিন্তু এর সুফল এখনও দৃশ্যমান হয়নি।

জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করা হয়। বিশ্বের প্রায় ৫২টি দেশে হিমায়িত মিঠা পানির ও সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করে যে আয় হয়, তা নিতান্ত কম নয়। দেশের বাজারেও সামুদ্রিক মাছের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে উৎপাদন বাড়েনি। এর ফলে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিরূপ ধাক্কা লেগেছে। সমুদ্রকেন্দ্রিক সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনার ব্যাপারে অর্থনীতিবিদের তরফে যে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ পাওয়া গেছে সেই নিরিখে এর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা-পর্যালোচনা ও সেমিনার-সিম্পোজিয়াম কম হয়নি। কিন্তু এর পরও সমুদ্র অর্থনীতির তেমন কোনো সুফল আমরা ঘরে তুলতে পারিনি। মূলত মৎস্য আহরণের মধ্যেই সমুদ্রসম্পদ আহরণের বিষয়টি সীমাবদ্ধ এবং এখন সেই আহরণেও ভাটা পড়ছে।

সম্প্রতি সামুদ্রিক মাছের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিতে চীন আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনরত চীনের রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আগ্রহের কথা জানান। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। ইতঃপূর্বে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশে বেসকারি পর্যায়ে রপ্তানিকারকরা সামুদ্রিক মাছ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন। যেসব দেশে বাংলাদেশ মিঠাপানি ও সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করে এর মধ্যে চীন বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ নিতে আগ্রহী। এই তালিকা নিশ্চয় আরও দীর্ঘ করা সম্ভব। দেশে বর্তমানে মাছের বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের যে উৎপাদন রয়েছে তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করি। কারণ, আমাদের সমুদ্রসীমা অনেক বেড়েছে এবং সামুদ্রিক মাছ আহরণের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই তা কাজে লাগানো অসম্ভব নয়। দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানির পরিসর বাড়ানোর সুযোগও বিদ্যমান। সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ করে উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে নিশ্চয়ই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

২০২০-২১ অর্থবছরে সামুদ্রিক মাছের রপ্তানি বাড়লেও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়নি। এর আগে মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার কারণে কোনো কোনো আমদানিকারক দেশ আপত্তি তুলেছিল, এই অভিযোগও আছে। রপ্তানিকারকরা যেসব কারণে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে অনাগ্রহী হয়ে উঠছেন, এর পেছনের কারণগুলো সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কোনো মহলেরই অজানা নয়। আমরা মনে করি, জিইয়ে থাকা কারণগুলোর নিরসন করে রপ্তানির পথ সুগম করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জরুরি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সুনীল অর্থনীতির বিকাশে তা অত্যন্ত অপরিহার্য। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ সহযোগিতা দিতে হবে এবং মাছ রপ্তানি বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে যে উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে এর বাস্তবায়নেও মনোযোগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও আহরণে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমাদের মৎস্যভান্ডার স্ফীত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চয় দৃশ্যমান হবে। অনেক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ আহরণের সুযোগ যেহেতু আমাদের রয়েছে, সেহেতু তা কাজে লাগানো প্রয়োজন। সাগর থেকে মাছ আহরণ শেষে প্রক্রিয়াকরণ একটি বড় বিষয় এবং এর জন্য যথোপযুক্ত কারখানা গড়ে তোলাও আবশ্যক। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা