নাজমুল হক তপন
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:২৯ এএম
আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। ক্লাস ওয়ান থেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়েছি গ্রামের স্কুলে। ওই সময় আমাদের স্কুলে প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীই ছিল প্রান্তিক আর মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের। একুশে ফেব্রুয়ারি প্রভাতফেরিতে ফুল দেওয়া শেষে আমরা সব ছাত্র-ছাত্রী ফিরে আসতাম স্কুলে। গ্রামের অনেক বয়স্ক মানুষও যোগ দিতেন ওই সময়। ছাত্র-ছাত্রীদের ভেতর থেকে ৪-৫ জনকে একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে বক্তৃতা করার সুযোগ দেওয়া হতো। এই ৪-৫ জন বক্তার কমপক্ষে তিনজন ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’ এই কবিতার লাইনগুলো দিয়ে শুরু করতেন অথবা শেষে এই লাইনগুলো বলতেন। ক্লাস সিক্স থেকে এসএসসি পর্যন্ত টানা ছয় বছর আমি এটা দেখেছি।
‘আমার সোনার বাংলা’ নিয়ে কেন এই গাত্রদাহ?
১৯০৫ সাল, বঙ্গভঙ্গ, জমিদার, হিন্দু-মুসলিম স্বার্থ আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে লেখা হয়েছে ‘আমার সোনার বাংলা’- এমন লেখা একটা সময়ে একটি পত্রিকার উপসম্পাদকীয়তে মাঝেমধ্যেই দেখতাম। তখন থেকেই আমার একটা সহজ প্রশ্ন, আমার সোনার বাংলা সঙ্গীতটা তো চিরায়ত বাংলার প্রকৃতির রূপ বর্ণনা। এমন গানকে ইংরাজ আমলে হিন্দু-মুসলিম স্বার্থের হানাহানির মধ্যে টেনে আনা কেন? উত্তরটা খুব সহজেই পেয়ে গেলাম আনোয়ার পাশার ‘রাইফেল রোটি আওরাত’ উপন্যাসে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের পাকিস্তান আর্মির গণহত্যার এক মর্মস্পর্শী প্রামাণ্য চিত্র এই উপন্যাসটি। এই উপন্যাসে অনেক জায়গাতেই আছে পাকিস্তানি আর্মি আর তাদের এদেশীয় দোসররা বাংলা ভাষা আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সমার্থক করে সম্বোধন করছে ‘হিন্দুস্তানের চর’ হিসেবে। উপন্যাসে নায়ক সুদীপ্ত শাহীন চাকরির ভাইভা দিচ্ছেন। প্রশ্ন করা হলো- ‘আপনার নাম সুদীপ্ত?’ উত্তর, ‘হ্যাঁ।’ একজন প্রশ্নকর্তার জিজ্ঞাসা ‘সুদীপ্ত শব্দের অর্থ কী?’ নায়কের উত্তর, ‘উত্তমরূপে দীপ্যমান যাহা।’ প্রশ্নকর্তাদের একজন বলে উঠলেন, ‘তাহলে তো বাংলা হয়ে গেল।’ আরেকজন প্রশ্ন করলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ পড়েন?’ নায়কের উত্তর, ‘হ্যাঁ।’ এবার কয়েকজন প্রশ্নকর্তা একযোগে বলে উঠলেন, ‘পাকিস্তানে বাস করে আপনারা সব হিন্দুস্তানের চর আইছেন।’
রবীন্দ্রচর্চা নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তান জান্তা। বাঙালির ভিত্তি রবীন্দ্রসংগীত-সাহিত্য। বাঙালি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই উদ্দেশ্য থেকেই রবীন্দ্রনাথকে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তানি শাসকরা।
বঙ্গভঙ্গ কার স্বার্থে, মুসলমান, হিন্দু না ইংরেজ?
ওপারের হিন্দুরা কতখানি মুসলিম বিদ্বেষী এবং সর্বোপরি মুসলিম সমাজের কতখানি স্বার্থবিরোধী এ নিয়ে নিয়মিতভাবেই উদাহরণ হিসেবে আনা হয় বঙ্গভঙ্গকে। এখন সরলভাবে যদি কেউ প্রশ্ন করে, বঙ্গভঙ্গ তো ইংরেজদের ফর্মুলা। উপমহাদেশে ইংরেজদের স্ট্যাবলিশমেন্টের মূল ভিত্তিই তো হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ জিইয়ে রাখা। বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য আসলে কী ছিল? হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ জিইয়ে রাখা নাকি মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা? ব্রিটিশ রাজত্বে বিংশ শতাব্দীর শুরুর সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটিশ রাজত্ব উৎখাত করতে এই উপমহাদেশে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকায় বাঙালিরা। বিশেষ করে শিক্ষিত বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্ত। বিনয়, বাদল, দীনেশ, ক্ষুদিরাম, মাস্টারদা, প্রীতিলতারা অকাতরে উৎসর্গ করেছেন নিজেদের জীবন। একেক জনকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে মিথ। ওই সময় একটা কথা প্রচলিত ছিল, মেদিনীপুরে কোনো ইংরাজ ম্যাজিস্ট্রেটের পোস্টিং হলে কান্না জুড়ে দিত উনার স্ত্রীসহ স্বজনরা। মেদিনীপুরে ইংরাজ মেজিস্ট্রেটের পোস্টিং হলে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসাটা ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। সোজা কথায়- বাঙালি বিপ্লবীদের ভয়ে সন্ত্রস্ত, তটস্থ ছিল ব্রিটিশ রাজরা। বাঙালি হিন্দু মধ্যবিত্তের এমন বিপ্লবী হয়ে ওঠাটা আকস্মিক কোনো ঘটনা না। এটাও একটা ধারাবাহিকতারই অংশ। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। এখন পাল্টা প্রশ্ন করাই যায় যে, স্বদেশিদের আন্দোলন যেন সংক্রামক আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, বিশেষ করে শিক্ষিত মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে তারই অংশ হিসেবে বঙ্গভঙ্গকে হাজির করেছে কূটকৌশলে দক্ষ খেলুড়ে ব্রিটিশরা?
বাঙালির লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা ও রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর সাধারণ মানুষের নন, রবি ঠাকুরকে ঠিক অসাম্প্রদায়িক বলা যায় না, উপনিবেশ/ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অবস্থান রবি ঠাকুর নেননি এমনি কত যে অভিযোগ আনা হয় তাকে নিয়ে। এসব বলার আগে অভিযোগকারীরা ভুলে যান জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের পর রবি ঠাকুরের নাইট উপাধি পরিত্যাগ করা। উপমহাদেশে ইরেজবিরোধী সবচেয়ে বড় যোদ্ধার নাম সুভাষ বোস। ভারতবর্ষ থেকে ইংরাজদের সমূলে উৎখাত করতে নেতাজী গড়ে তুলেছিলেন বিশাল সেনাবাহিনী। নেতাজির সেনাবাহিনীতে শীর্ষ সেনা কামান্ডারদের একটা বড় অংশ ছিলেন মুসলিম। মেজর জেনারেল শাহনেওয়াজ খান, মেজর জেনারেল মালিকরা ছিলেন সুভাষ বোসের দক্ষিণ হস্ত। সুভাষ বোসকে লেখা রবি ঠাকুরের চিঠিগুলোকে সবাইকে স্মরণ করতে বলি। সুভাষ শর্তাধীনে গৃহবন্দি রয়েছেন এলগিন রোডের বাড়িতে। নেতাজীর হাতে রবি ঠাকুরের চিঠি। সুভাষ বোস লিখছেন আর গাইছেন- ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে’। এই গানের কী প্রবল শক্তি। সুভাষ লিখে যাচ্ছেন তাঁর বই- `Indian Struggle'।
সমর্থন প্রশ্নে বেনিতো মুসোলিনির মুখের উপর না বলার সাহসটা রবি ঠাকুর এমনি এমনি দেখাননি।
রবি ঠাকুর সাধারণের নন, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী নন এমন কথা বলার আগে সবাই ভুলে বসে থাকেন, আফ্রিকা কিংবা ‘ওরা কাজ করে’ সাহিত্যকর্মগুলোর দিকে। ‘সভ্যের বর্বর লোভ নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা। আফ্রিকার মানুষের ওপর সভ্য দাবিদারদের কী তীব্র আক্রমণই না করেছেন কবিগুরু। দেশ বিজয়, বীরত্বগাথা এসব কিছুকে তুচ্ছ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রবি ঠাকুর। একমাত্র সত্যি হিসেবে বর্ণনা করেছেন মেহনতি মানুষকে। এই রবি ঠাকুর লেখেন ‘দুই বিঘা জমি’। সেই কবিতায় উপেনের কথা, ‘রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।’ ‘ওরা কাজ করে’ কবিতায় লেখেন, ‘ওরা টানে দাঁড় ধরে থাকে হাল/ ওরা মাঠে মাঠে বীজ বোনে পাকা ধান কাটে/ শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ ’পরে ওরা কাজ করে।’ ওরা মানে মেহনতি মানুষদের আমরা ঠাঁই দিই না। কিন্তু সভ্যতার বিনির্মাণে ‘আমরা’দের কোনো ভূমিকাই নাই। রবি ঠাকুরের ভাষ্যমতে, সভ্যতার চালিকাশক্তি শ্রমজীবী মানুষ।
ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীদেরকে বঙ্কিমচন্দ্রের সাম্প্রদায়িক লেখা ও মন্তব্যকে এক করে উপস্থাপনের একটা প্রবণতা দেখা যায় অনেকের মধ্যেই। এটা করতে গিয়ে ঐতিহাসিক সত্যগুলোকে কীভাবে পাশ কাটানো হয় সেটা অনুধাবন করার জন্য প্রয়োজন পড়ে না বিশেষজ্ঞ হওয়ার। রাসবিহারী বোস যেমন সব দায়িত্বভার তুলে দেন সুভাষ বোসকে। ইংরেজবিরোধী আন্দোলন এমনি প্রবহমান। উপনিবেশবিরোধী প্রতীক হিসেবে ‘সিরাজউদ্দৌল্লা’ নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। আর কৃষকদের দুরবস্থা নিয়ে যদি সাহিত্যকর্মের কথা বলা হয় তাহলে সবার আগে আসে দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল দর্পণ’। নাটকের শুরুতেই বাড়ির কাজের মেয়ে আদরিণী বলে ওঠে, ‘বাবুরা নাওয়া খাওয়া করবেন না! ভাত শুকিয়ে যে চাল হয়ে গেল।’ নতুন করে নীল চাষের জন্য জমি অধিগ্রহণ চলছে আর ওদিকে নাওয়া খাওয়া মাথায় উঠেছে কৃষকদের। নায়ক নবীন মধাব মঞ্চে এসেই বলেন, ‘জননীর পরিতাপ বিবেচনা করিয়া কি কালসর্প ক্রোড়স্থ শিশুকে দংশন করিতে পিছপা হয়?’ এখানে কালসর্প ইংরেজ, দেশ জননী আর ক্রোড়স্থ শিশু জনগণ।
বাঙালির অসাম্প্রদায়িকতাকে একটা ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে আটকে রাখার চেষ্টা আছে অনেকের মধ্যেই। ১৯৫২-১৯৭১ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাঙালি অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠিত করেছে, ধারাবাহিকতার ছেদ টেনে এমন কথা বলেন অনেকেই। এতে করে অস্বীকার করা হয় নীল দর্পণ, দীনবন্ধু মিত্র, মাস্টার দা, সুভাষ বোসদের। বাংলা ভাষা দুরকমের এমন একটা ধারণা ১৯৫২-এর আগে বেশ দানা বেঁধেছিল। হিন্দুর বাংলা ভাষা আর মুসলমানদের বাংলা ভাষা। এ নিয়ে আবুল মনসুর আহমেদের ‘কালচার’ নামে একটা বই আছে। সেখানে বিষয়গুলো খুব সহজ ভাষায় উদাহরণ দিয়ে লেখা হয়েছে। তমদ্দুন মজলিসের আন্দোলন ঠিক এই জায়গাটাতেই। ১৯৫২ সফল হয়েছে ভাষাকে তমুদ্দনিক করার প্রচেষ্টাকে খারিজ করার মধ্য দিয়েই। ‘ভাষা ও রীতি’ প্রবন্ধে মুনীর চৌধুরী বাতিল করে দেন ভাষাকে তমুদ্দনিক করার প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষা মানেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর তাই ১৯৫২- ১৯৭১ রবীন্দ্রচর্চা হয়ে ওঠে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের সবচেয়ে বড় আক্রোশের জায়গা।
আসলে রবি ঠাকুর কী লেখেননি?
গগন হরকরাকে আবিষ্কার, পৃষ্ঠপোষকতা ও পরিচয় করিয়ে দেওয়া- সবই করেছেন কবিগুরু।
কে এই গগন হরকরা? বলা হচ্ছে, তার সুর চুরি করেছেন রবি ঠাকুর। গ্রামীণ এক দরিদ্র ডাকপিয়নকে নিজ উদ্যোগে সাহিত্যজগতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কবিগুরু না চাইলে এই নামটি হারিয়ে যেত, আদৌ কারও জানাই সম্ভব ছিল না। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের ডাকপিয়ন গগন ছিলেন বাউল গায়ক। ‘প্রবাসী’ পত্রিকার ১৩২২ বাংলার বৈশাখ সংখ্যায় ‘হারমণি’ বিভাগ চালু হলে ‘আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে’ ভাবতত্ত্বের এ গান দিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বিভাগের সূচনা করেন। গগন হরকরা ও তার গানটিকে পরিচয় করিয়ে দেন বিশ্বমাঝে এবং সকলকে জানিয়েই তিনি তার লিখিত গীতিকাব্যে এই সুর সংযোজন করে তা ছড়িয়ে দেন সবার মাঝে।
হিন্দু নন, রবি ঠাকুর ছিলেন ব্রাহ্ম
রবি ঠাকুর বাউল দর্শনের প্রতি প্রভাবিত ছিলেন ব্যাপকভাবে। তার পরমেশ্বরের যে গভীর ভাবতত্ত্ব সেটা নিয়ে আলোচনার যোগ্যতা কিংবা দুঃসাহস কোনোটই আমার নেই। তবে পারিবারিকভাবে তিনি ছিলেন ব্রাহ্মধর্মের। উনিশ শতকের মাঝামাঝি বাঙালি রেনেসাঁর ফসল এই ব্রাহ্ম ধর্ম। ওই সময় বাঙালি উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। ব্রাহ্ম ধর্ম আসাতে সে প্রবণতা কমে আসে বহুলাংশে। প্রাগ্রসর মানুষ গড়ার সূতিকাগার হয়ে ওঠে ব্রাহ্মবাদ।
রবি ঠাকুর একেবারেই ধর্মীয় প্রভাবিত লেখক নন। তারপরও তার সাহিত্যে এসেছে মুসলমানদের সৌন্দর্যবোধ, প্রতিরোধের বিষয়গুলো। তাজমহলের সৃষ্টিশীলতায় মুগ্ধ এই রবি ঠাকুর সাজাহানকে স্মরণ করেন, ‘তোমার কীর্তির চেয়েও তুমি যে মহৎ’। রবি ঠাকুরের অন্যতম ছোটগল্প ‘মুসলমানীর গল্প’। হবির খাঁয়ের মতো দৃঢ়চেতা নারীর প্রতি সংবেদনশীল চরিত্র কত মমতা দিয়েই না তৈরি করেছেন কবিগুরু। কাবুলিওয়ালা গল্পে রহমত আলীর মধ্যে একজন স্নেহবুভুক্ষু পিতাকে আবিষ্কার করার সামর্থ্য বাংলা সাহিত্যে বোধকরি একজনেরই আছে।
রবি ঠাকুরের অখণ্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করতে হলেও মেনে নিতে হয় অখণ্ড রবি ঠাকুরকেই
ধরা যাক বঙ্গবন্ধুর কথাই। স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধু খুব আবেগ ভরে বললেন, রবি ঠাকুর দেখে যান আমরা আজ মানুষ হয়েছি। ‘সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী/ রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।’ বাঙালি বড় কীর্তি গড়বে। বাঙালির অর্জনে সবার আগে মনে পড়তে বাধ্য রবি ঠাকুরকে। এমনকি বাঙালির কাছে যা প্রত্যাশা করেননি সেই দুর্লভ ব্যাপারটিও যদি বাঙালি করতে পারে তারপরও সামনে এসে দাঁড়াবেন রবি ঠাকুর। এ যেন তোর দ্বারা কিছু হবে না- সন্তানের প্রতি মায়ের এমন ভর্ৎসনা। সন্তান ঠিকই কর্মে সফল হলো। এরপর গর্বিত ভঙ্গিতে মায়ের সামনে এসে দাঁড়াল। মা দেখো আমি কিন্তু ঠিকই পেরেছি।
তার কাছ থেকে কারও মুক্তি নাই…
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’।