× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিপ্রেক্ষিত

বন্যাপরবর্তী কৃষি

চয়ন বিকাশ ভদ্র

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৩ এএম

বন্যাপরবর্তী কৃষি

বন্যার পানি সরে যাচ্ছে। টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা পানিতে দেশের ১১ জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। চলমান বন্যায় দেশের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে শাকসবজি, ধানসহ অন্যান্য ফসল। বন্যার পানিতে ভেসে আসা কচুরিপানা, পলি, বালি এবং আবর্জনা যত দ্রুত সম্ভব পরিষ্কার করতে হবে। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর পাঁচ থেকে সাত দিন কাদাযুক্ত ধান গাছ পরিষ্কার পানি দিয়ে প্রয়োজনে স্প্রে মেশিন দ্বারা ধুয়ে দিতে হবে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই সার প্রয়োগ করা ঠিক নয়, এতে ধান গাছ পচে যেতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ১০ দিন পর ধানের চারায় নতুন পাতা গজানো শুরু হলে বিঘাপ্রতি ৮ কেজি ইউরিয়া ও ৮ কেজি পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।

বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও বন্যাপরবর্তী করণীয় বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় ১২টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় আপৎকালীন বীজতলা তৈরি করতে হবে। বাড়ির উঠান বা যেকোনো শুকনো কিংবা কাদাময় সমতল জায়গায় পলিথিন, কাঠ বা কলাগাছের বাকল দিয়ে তৈরি চৌকোনা ঘরের মতো করে প্রতি বর্গমিটারে ২-৩ কেজি অঙ্কুরিত বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া ব্রি উদ্ভাবিত আলোকসংবেদনশীল উফশী জাত যেমন বিআর ৫, ২২, ২৩, ব্রি ধান ৩৪, ৪৬, ৭৫, বিনা ধান ১৭ জাতসমূহ বীজতলায় চারা উৎপাদন করে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোপণ করা যাবে। বিলম্বে রোপণের ফলে দ্রুত কুশি উৎপাদনের জন্য সুপারিশকৃত টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, জিঙ্ক ও ইউরিয়া সারের ৩ ভাগের ২ ভাগ জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট ইউরিয়া রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে। কৃষক পর্যায়েও ধানের চারা ভাসমান পদ্ধতি বা দাপোগ পদ্ধতিতে উৎপাদন সম্ভব; এজন্য দরকার সরকারি সহযোগিতা। তবে কোনোভাবেই যেসব জমি থেকে বন্যার পানি সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেও সরে না যায়, সেসব জমিতে আমন ধান লাগানো ঠিক হবে না।

বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া ধান গাছের যাবতীয় পরিচর্যা যেমন আগাছা দমন, পোকামাকড় ও রোগাক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা, সুষম পরিমাণে সারপ্রয়োগ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। মাষকলাই জাতীয় ফসল নরম মাটিতে বিনা চাষেই করা যেতে পারে। একইভাবে গিমাকলমি, ডাঁটা, পালংশাক ইত্যাদির চাষ করা সম্ভব। অন্যদিকে বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর গবাদি পশুর রোগবালাই বেড়ে যায়। রোগবালাই থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে। যেসব এলাকা পুনরায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম (উঁচু ও মধ্যম উঁচু) সেসব জমিতে অঙ্কুরিত বীজ সরাসরি জমিতে ছিটিয়ে বপন করা যায়। সে ক্ষেত্রে রোপণ পদ্ধতির চেয়ে পাঁচ থেকে সাত দিন আগে ফলন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বন্যার পর চারাগাছ সম্পূর্ণভাবে মাটিতে লেগে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতাপোড়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ৬০ গ্রাম পটাশ সার ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। বন্যার পর ধান গাছে মাজরা, বাদামি ও সাদা পিঠ গাছ ফড়িং, পাতা মোড়ানো এবং পামরি পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য পোকাবিশেষে হাতজাল, পার্চিং এবং প্রয়োজন হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

  • অধ্যাপক, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা