প্রেক্ষাপট
আর কে চৌধুরী
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪ ১৫:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৪ ১৬:০৫ পিএম
সারা দেশে চলছে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি। কোরবানিতে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। উপলব্ধি করতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অনুষঙ্গ। কোরবানির ক্ষেত্রে পরিবেশ যাতে নোংরা না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কোরবানি ঈদে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ পশু জবাইয়ের পর রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার। যদিও প্রতি বছর এ কাজ নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা থাকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। তাই বলে নিজের দায়িত্বে অবহেলা করলে চলবে না। সবারই উচিত ময়লা-আবর্জনা সঠিক স্থানে ফেলা ও নিজ বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা। অনেকেই কোরবানির পরে পশুর বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে রাখেন। ফলে ওই স্থান ও আশপাশে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু ছড়ায়। তাই সবারই উচিত যৌথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অংশ নেওয়া। কোরবানি হয়ে যাওয়ার পরে যে বর্জ্যগুলো তৈরি হবে সেগুলোয় সঙ্গে সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার ও অন্যান্য পরিষ্কারক দ্রব্য ব্যবহার করে পরিষ্কার করা উচিত। এ ছাড়া নির্দিষ্ট স্থানে রাখা উচিত বর্জ্যগুলো।
কোরবানির পর রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কারের সহজ উপায় হচ্ছে যারা নিজ বাড়িতে বা লনে কোরবানি করবেন, তাদের অবশ্যই নিজ দায়িত্বে বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে। এককভাবে কোরবানি না করে মহল্লাভিত্তিক একটি নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করা যেতে পারে। এতে নির্দিষ্ট এক স্থান থেকেই সম্মিলিতভাবে বর্জ্য অপসারণও সহজ হয়। কোরবানির পর একই ভবনের বেশ কয়েকটি পরিবার একসঙ্গে মিলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এতে বর্জ্য অপসারণ দ্রুততর হয় বলে পরিবেশের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না। জবাইকৃত পশুর গোবর ও উচ্ছিষ্ট আলাদা করে কোনো পলিথিনে মুখবন্ধ অবস্থায় রাখুন। কখনও এগুলো খোলা রাখবেন না, তাহলে দ্রুত রোগজীবাণু ছড়াবে।
পশু জবাইয়ের স্থানে কোরবানির পর পশুর রক্ত জীবাণুনাশক পানি দ্বারা ধুয়ে দিয়ে ব্লিচিং ছিটিয়ে দিন। এতে দুর্গন্ধ বা জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পারতে পারবে না। কোরবানির পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুর চামড়া বিক্রি কিংবা দান করতে হবে। না হলে গন্ধ ছড়াবে। কোরবানির আগেই নিকটবর্তী মাঠ কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় একটা গর্ত তৈরি করে রাখা উচিত। পশুর মলমূত্র, রক্ত, আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। কোরবানির শেষে পশুর মাংস রাখা পাটি পুড়িয়ে ফেলা উচিত। না হলে এখান থেকে মশার উপদ্রব হতে পারে। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি এ সময় ঘরের ভেতরও পরিষ্কার রাখতে হবে। মাংস ঘরে আনার পর তা কাটা ও বাছাইয়ের জন্য অনেকেই ডাইনিং রুম ব্যবহার করেন। যে স্থানে মাংস কাটা হবে অবশ্যই সেখানে পলিথিন বিছিয়ে নিন। তার ওপর মাংস কাটা ও ভাগ করা হয়ে গেলে বেছানো শিট বা পাটি উঠিয়ে নিয়ে ওই জায়গা প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। পরে গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে তা দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।
ঈদ-পার্বণে নতুন করে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। ঈদুল আজহা এলেই আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যাই। নিজেদের আনন্দে অন্যান্যের শরিক করা ঈদুল আজহার শিক্ষা। কোরবানিকৃত পশুর গোশত তিন অংশে ভাগ করে এক অংশ নিজের জন্য সংরক্ষণ, দ্বিতীয় অংশ আত্মীয়স্বজনকে প্রদান এবং তৃতীয় অংশ সমাজের অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া ইসলামের বিধান। আল্লাহতায়ালা কোরবানির পশুর গোশতের একটি অংশ দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষকে দান করার নির্দেশ দিয়েছেন।