× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রেক্ষাপট

শব্দদূষণের ক্ষত

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ০৯:২৪ এএম

শব্দদূষণের ক্ষত

সম্প্রতি বিশ্বের ৫০টি শহরের প্রায় দুই লাখ মানুষের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করে একটি তালিকা তৈরি করে বার্লিনের কোম্পানি ‘মিমি হিয়ারিং টেকনোলজিস’। শব্দদূষণ সবচেয়ে বেশি হয় চীনের শহর গুয়াংজুতে। চীনের এই শহরে শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বলে এক জরিপে জানা গেছে। তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শব্দদূষণের শিকারের শহর হিসেবে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লির নাম। ভারতেরই আরেক শহর মুম্বাই আছে চতুর্থ অবস্থানে। মিমি হিয়ারিং টেকনোলজিস তাদের পাওয়া তথ্যের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও নরওয়ের একটি গবেষণা সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড হিয়ারিং ইন্ডেক্স’ নামের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেখানে সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার ১০টি শহরের মধ্যে ইউরোপের দুটি শহর আছে। সেগুলো হচ্ছেÑ বার্সেলোনা (৭) আর প্যারিস (৯)। সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে কম। এর পরেই আছে ভিয়েনা, অসলো, মিউনিখ ও স্টকহোম। অর্থাৎ সবচেয়ে কম শব্দদূষণ হওয়া পাঁচটি শহরই ইউরোপের। শব্দদূষণ হওয়া শহরের তালিকায় ঢাকার অন্তর্ভুক্তিও হয়তো আমরা সামনে দেখতে পাব।

শব্দদূষণের ক্ষতের সামাজিক প্রভাব অনেক। স্কুল, কলেজ বা হাসপাতালের পাশে শব্দ হলে তা মানুষের জন্য বিঘ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে ক্ষুধামন্দা, হৃদরোগ হচ্ছে শব্দদূষণের কারণে। শব্দ মানুষের মস্তিষ্কে সরাসরি আঘাত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ ডেসিবেল শব্দে সাময়িকভাবে শ্রবণশক্তি নষ্ট আর ১০০ ডেসিবেলে চিরতরে তা হারাতে হতে পারে। অথচ রাজধানী ঢাকার অনেক জায়গাতেই শব্দ ১০৭ ডেসিবেল পর্যন্ত ওঠে। যদিও শব্দদূষণের ফলে আমাদের কতটা ক্ষতি হয় এ বিষয়ে কোনো গবেষণা দেশে নেই। বিশেষ করে, কলকারখানাগুলোয় অসম্ভব শব্দ হয়। সেখানে শ্রমিকরা যে কাজ করেন, তাদের জন্য ‘সাউন্ড প্রুফ রুম’ বা ‘লো ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড’ থাকার কথা, সেটা কখনোই দেখা যায় না। তাই শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষ বধির হয়ে যাচ্ছে। একজন মানুষ যখন বধির হয়ে যায়, তখন সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। শব্দদূষণের ফলে কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হলে তার জন্য আলাদা ক্ষতিপূরণ বা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অভাবও রয়েছে।

উন্নত বিশ্বে শব্দদূষণ এড়ানোর বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হয়। সেখানে শব্দদূষণের কারণে কারও চাকরি ছাড়তে হলে সে ক্ষতিপূরণটা নিশ্চিতভাবে পায়। দেশে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ এতে ক্ষতির দিকটা কিন্তু ব্যাপক। শব্দদূষণের ভয়াবহতা কতটা ব্যাপক, এ বিষয়ে এখনও সুষ্ঠু কোনো গবেষণা করা যায়নি। তবে বিদ্যমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া এ বিষয়ে পর্যাপ্ত সচেতনতারও অভাব রয়েছে। শব্দদূষণ প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের সঠিক বাস্তবায়নের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ নানা মহলের। সড়কে-মহাসড়কে শব্দদূষণ কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে ঢাকা নগরী তো বটেই, দেশের অনেক স্থানই বাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। শব্দদূষণের বাজে প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি নেওয়া হলেও শব্দদূষণ রোধে আইনের বাস্তবায়নের অভাব রয়েছে। এ বিষয়গুলো আমলে রেখে আমাদের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।  

  • অধ্যাপক, ইএনটি অ্যান্ড হেড-নেক সার্জারি, স্যার সলিমুল্লাহ্ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা