প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪২ পিএম
ইস্পাহানি পরিবার বাংলাদেশের প্রাচীনতম বহুমুখী বাণিজ্যিক শিল্পগোষ্ঠী। ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই পরিবারের কয়েক প্রজন্মের সদস্যের বিভিন্ন ব্যবসায় বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। এম. এম. ইস্পাহানি লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর চট্টগ্রামে অবস্থিত।
ইস্পাহানি পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ হাশেম ইস্পাহানি। ১৮২০ সালে পারস্যের ইস্পাহান শহর থেকে ভারতবর্ষের বোম্বে নগরীতে এসে প্রথম ব্যবসা শুরু করেন। উনিশ শতকের তিরিশের দশকে তাঁর ব্যবসা কলকাতাসহ মাদ্রাজ এবং বার্মা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে।
হাজী হাশেমের দৌহিত্র মির্জা মেহেদী ইস্পাহানি ব্যবসায়িক সদর দপ্তর মাদ্রাজে স্থানান্তর করে এক যুগের বেশি সময় ধরে মিশরে ভারতীয় পণ্যের বিশাল ব্যবসা গড়ে তোলেন। তার তিন পুত্র—মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি, মির্জা আবুল হাসান ইস্পাহানি ও মির্জা মাহমুদ ইস্পাহানি ১৯৩৪ সালে এমএম ইস্পাহানি নামে একটি লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৪৭ সালের পর ইস্পাহানি পরিবারের করপোরেট হেড অফিস বন্দরনগরী চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হয়। মির্জা আহমেদ ইস্পাহানির পুত্র মির্জা মেহেদী ইস্পাহানি কোম্পানির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোম্পানির প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৪৭ সালের পর থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও শিল্পায়নে ইস্পাহানি পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও খুলনা অফিসের মাধ্যমে ইস্পাহানি কোম্পানি চা, টেক্সটাইল, পাট, শিপিং প্রভৃতি ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। চা-শিল্পে ইস্পাহানি গ্রুপের রয়েছে ব্যাপক সফলতা। পাকিস্তান আমলেই ইস্পাহানি গ্রুপ ছিল চা-শিল্পে একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। বর্তমানে বাংলাদেশের চা-শিল্পেও ইস্পাহানি গ্রুপের অবস্থান সবার শীর্ষে।
শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়নেও কোম্পানিটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ পর্যন্ত ইস্পাহানি পরিবার বেশ কয়েকটি স্কুল ও কলেজ স্থাপন করেছে। এগুলো হলো, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মির্জা আহমেদ স্মৃতি বিদ্যালয়, সিজেএম হাই স্কুল, ওয়াইসিয়া দারুস্ সুন্না দাখিল মাদ্রাসা, মির্জা আহমেদ হাই স্কুল, ভিক্টরী হাই স্কুল, কুমিল্লা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইস্পাহানি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ (ঢাকা) ও সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ইস্পাহানি পরিবার অসংখ্য দাতব্য-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। যার মধ্যে অন্যতম ঢাকার ফার্মগেটে অবস্থিত ইস্পাহানি চক্ষু হাসপাতাল। হাসপাতালটি বিশ্বখ্যাত চক্ষুপ্রতিষ্ঠান সাইট সেইবার্স ইন্টারন্যাশনাল এবং অরবিসর সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। বহুজাতিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেডের সহায়তায় এই হাসপাতাল বাংলাদেশে অন্ধত্ব দূরীকরণেও নিজস্ব কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।