সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২ ১০:১০ এএম
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২২ ১২:৩৪ পিএম
তাড়াশে অবস্থিত স্মৃতিসৌধ। প্রবা ফটো
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গণহত্যা দিবস আজ রবিবার (১৩ নভেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিন একের পর এক যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পরাজিত পাকিস্তানি বাহিনী সাধারণ গ্রামবাসীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। জ্বালিয়ে দেয় আমবাড়িয়া গ্রাম। ১৩ জন সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করে পাক হানাদাররা।
শহীদরা হলেন আমবাড়িয়া গ্রামের ইয়ার মোহাম্মাদ, মেহের মন্ডল, সুলতান সেখ, সফিজ উদ্দিন সেখ, দেছের আলী, ফয়েজ উদ্দিন, মোক্তার হোসেন, ওসমান আলী, মজিবর রহমান, কিয়ামত আলী, জুব্বার ফকির, আমিন উদ্দিন, আব্দুর রহমান। তাদের ১৩টি কবর এক সারিতে দেওয়া আছে। ওই দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন মাওলানা তাজ উদ্দিন ও দেছের আলী প্রাংও।
আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে আমবাড়িয়া গণকবরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান সাজু জানান, ‘৭১-এর ১১ নভেম্বর তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয় পাকবাহিনী। ওই যুদ্ধে প্রায় এক কোম্পানি পাকসেনা ও অর্ধশতাধিক রাজাকার নিহত হয়। নওগাঁ যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার দুদিন পর প্রতিশোধ নিতেই পার্শ্ববর্তী আমবাড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় হানাদার বাহিনী। নির্বিচারে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে গ্রামের তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী ১০ যুবককে।
মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, প্রতি বছর ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরে আমবাড়িয়ায় কর্মসূচি পালন করা হলেও ১৩ নভেম্বর গণহত্যা দিবসে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় না। বিগত তিন বছর ধরে হাদিউল হৃদয় নামে এক স্থানীয় সাংবাদিক দিবসটি পালন করে আসছেন।
এদিকে তরুণ কবি ও সাংবাদিক হাদিউল হৃদয় বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তাড়াশের আমবাড়িয়া গণকবরের স্বীকৃতি মেলেনি। তবে নিহতদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও সরকারিভাবে পালন হচ্ছে না দিবসটি। তাই এ বছরও তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমবাড়িয়া গণহত্যা দিবস পালন করবেন। একই সঙ্গে তিনি সরকারিভাবে দিবসটি পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাক-হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী আমবাড়িয়া গণকবর। এ দিন গণহত্যা দিবস পালনে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়।