প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪ ১৫:৪১ পিএম
আপডেট : ০৭ মে ২০২৪ ১৭:৩৬ পিএম
গণভবনে আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ। ছবি : ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন উৎস থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য আরও তহবিল সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু (বাংলাদেশে) মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য তহবিল কমে গেছে, আইওএমের উচিত এ উদ্দেশ্যে আরও তহবিল সংগ্রহের জন্য নতুন অংশীদারদের খুঁজে বের করা।’
মঙ্গলবার (মে ৭) সকালে প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবন গণভবনে আইওএম’র মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করতে আইওএমকে সহায়তা করার জন্যও বলেছেন। কারণ এখানে ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা এবং কর্মসংস্থানসহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরে এ পর্যন্ত ৩০-৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বৈঠকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে আইওএম মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর কাছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের নিরাপদ অবস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দল ও উপগোষ্ঠীতে বিভক্ত এবং তারা অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন এখন তাদের এলাকায় সংখ্যালঘু হয়ে গেছে।
অ্যামি পোপ স্বাগতিক দেশের চাহিদা অনুযায়ী তাদের দক্ষতা বাড়াতে ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর অভিবাসীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপর জোর দেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার অন্য দেশের কাউকে বোঝার জন্য পেশা ও ভাষার ওপর যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দক্ষ জনসংখ্যা তৈরিতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তারা সারা দেশে ১১২টি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র তৈরি করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অভিবাসন একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘কিন্তু, দারিদ্র্য কমলে অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’
সরকার প্রধান বলেন, তার সরকার অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে, যার মধ্যে কোনো জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আয়োজক ও উৎস দেশ উভয়েরই অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে, যেহেতু তারা উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির জন্য কাজ করছেন।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অভ্যন্তরীণভাবেও মানুষ স্থানান্তরিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি এবং নদীভাঙন, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার কক্সবাজারের খুরুশকূলে ৪ হাজারের বেশি জলবায়ু উদ্বাস্তুকে বাড়ি দিয়েছে।
তিনি বলেন, তার সরকার জলবায়ু সহিষ্ণু বাড়ি এবং বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য ভাসমান বাড়ি নির্মাণ করছে এবং গৃহহীনদের মাঝে বিনামূল্যে বাড়ি দিয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস