× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিব নারায়ণের কর্নিয়ায় দৃষ্টিশক্তি পেলেন দুজন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৪ ১৭:১২ পিএম

আপডেট : ০৬ মে ২০২৪ ১৯:১২ পিএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। প্রবা ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। প্রবা ফটো

চাহিদার বিপরীতে বছরে মাত্র এক থেকে দেড় হাজার কর্নিয়া আসে মরণোত্তর চক্ষু দান থেকে। অথচ ধর্মীয় বিধিনিষেধের কথা সামনে এনে এখনও অনেকে এ মহৎ কাজ থেকে নিরুৎসাহিত হয়ে থাকেন। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ এসেছে।

সোমবার (৬ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা উঠে আসে। এ সময় সেখানে মরণোত্তর চক্ষু দান করা জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাশের পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, দেশের মানুষের চোখের কর্নিয়া দান করার ব্যাপারে কুসংস্কার কাজ করে। মানুষ মনে করে পুরো চোখ উঠিয়ে ফেলবে, চেহারা বিকৃত হবে, যা আত্মীয়স্বজনরা মেনে নিতে পারে না। কিন্তু বিষয়টা এমন নয়। চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করতে চেহারা বিকৃত হয় না। মাত্র ১০ মিনিট সময়ে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়। তবে মানুষ এখন আস্তে আস্তে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে শ্রীলঙ্কা, নেপাল থেকে কর্নিয়া আসে। তবে অনেকসময় কর্নিয়া পাওয়া যায় না। তাই আমাদের জন্য একটা শক্তিশালী ব্যাংক প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সন্ধানী খুবই ভালো কাজ করছে।’

জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাশ 


উপাচার্য বলেন, শিব নারায়ণ দাশ কর্নিয়া দান করে গেছেন। তার দেহও দান করে গেছেন। এক চোখের কর্নিয়া চাঁদপুরের মশিউর রহমানের চোখে প্রতিস্থাপন করেছি। অন্য চোখের কর্নিয়া রংপুরের আবুল কালামের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। শিব নারায়ণকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়ছিল, তখন তিনি খুবই অসুস্থ ছিলেন। ওনাকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যায়ে তাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। মৃত্যুর পর আমরা চোখের কর্নিয়া গ্রহণ করি। এমনকি তার দেহটাও। 

সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিসহ অসংখ্য বড় বড় মানুষ মরণোত্তর চক্ষু দানের জন্য অঙ্গীকার করেছেন। এটা আমাদের জন্য সম্মানের। এতে করে অসংখ্য মানুষ মরণোত্তর চক্ষু দানে উৎসাহিত হবেন। এমনকি কর্নিয়া দান কার্যক্রমও এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই শুরুতে চোখ দানে আগ্রহী হন, পরে যখন আমরা চক্ষু সংগ্রহ করতে যাই, তখন আর তাদের পরিবার দিতে চান না। কিন্তু শিব নারায়ণ দাশের ছেলে নিজ থেকে আমাদের কাছে এসেছেন এবং চক্ষু দানে সহযোগিতা করেছেন। শিব নারায়ণ দাশের মতো এমন ক্ষণজন্মা মানুষের আরও অনেক জন্ম হোক।

দান করা চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করেছেন বিএসএমএমইউর চিকিৎসক রাজশ্রী দাশ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শিব নারায়ণ দেশকে একটি লাল-সবুজের পতাকা দিয়েছেন। মৃত্যুর পর দেহ ও চোখ দুটোও দান করেছেন। মরণোত্তর চক্ষু দানে মহত্ব আছে। ১৯ এপ্রিল মারা যান তিনি। তার কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয় ১৯ এপ্রিল। পরের দিন ২০ এপ্রিল আমরা দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করি। মৃত্যুর ৬ ঘণ্টার মধ্যে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে হয়। কর্নিয়া সংগ্রহ করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগে।

রাজশ্রী দাশ আরও বলেন, দেশে কর্নিয়া দান নিয়ে এখনও ধর্মীয় একটা প্রতিবন্ধকতা আছে। ইরান-সৌদি আরবের ৫ থেকে ৬ হাজার কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ১ থেকে দেড় হাজার পর্যন্ত কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়। এ সংখ্যাটা খুবই কম।

চোখের আলো ফিরে পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন মশিউর রহমান ও আবুল কালাম। মশিউর রহমান বলেন, ‘আগের থেকে ভালো দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখে সমস্যা ছিল জন্ম থেকেই। শিব নারায়ণ দাশের পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই। চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ফিরে পেলে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’

আবুল কালাম বলেন, ‘আমি ছোট বেলা থেকে বাম চোখে দেখতাম না। কর্নিয়া লাগানোর পর এখন দেখতে পাই। আমার ভালো লাগছে খুব। অপারেশনের আগে চোখে নানান সমস্যা ছিল। এখন নেই। সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন হয়েছে আমার।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিব নারায়ণ দাশের স্ত্রী গীতশ্রী চৌধুরী ও তার ছেলে অর্ণব আদিত্য দাশ। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা