× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মন্ত্রী-এমপির স্বজন নিয়ে কঠোর সরকার ও ইসি

দীপক দেব

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪ ০৯:০১ এএম

আপডেট : ০৫ মে ২০২৪ ১১:১৭ এএম

মন্ত্রী-এমপির স্বজন নিয়ে কঠোর সরকার ও ইসি

উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে চায় সরকার। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে দলীয় প্রতীক না দিয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। শুধু দলীয় সভাতেই নয়, নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে কঠোর অবস্থানে সরকার। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ও হস্তক্ষেপ বন্ধে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে চায় তার সরকার। এ ছাড়া সংসদীয় দলের সভায় নিজ দলের এমপিদেরও তিনি স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন- মন্ত্রী-এমপিদের উচিত নয় স্ত্রী ও সন্তানদের প্রার্থী করা। সবাইকে সুযোগ করে না দিয়ে দলকে পরিবারকেন্দ্রিক করলে ভবিষ্যতে পরিবার নিয়েই থাকতে হবে- এমন কথাও বলেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা ও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ কথা জানিয়েছেন। 

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাস্তবতা থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড এবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া থেকে সরে আসে। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা ও ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে এই পন্থা অবলম্বন করে দলটির হাইকমান্ড। কিন্তু দলের এই নতুন কৌশলের সুযোগ নিতে চাচ্ছেন মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি সামনে আসার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না করার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা না করলেও দলের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। মূলত সংশ্লিষ্টদের কিছুটা সময় দিয়ে পরিস্থিত পর্যবেক্ষণ করতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। তবে দলীয় সভায় আলোচনা না করলেও গত ২ মে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি এমপি-মন্ত্রীদের স্ত্রী ও সন্তানদের প্রার্থী করার বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘এক জায়গায় বউকে দিল, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিল, এগুলো ঠিক না। কর্মীদের মূল্যায়ন করা উচিত।’

একই দিন জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সভাতেও দলীয় এমপিদের সতর্ক করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দলকে কুক্ষিগত না করে সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। এমপিদের উচিত তাদের সন্তান-স্ত্রীদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না করা। পরিবারকেন্দ্রিক করলে চলবে না। এখন দলকে পরিবারকেন্দ্রিক করলে ভবিষ্যতে পরিবার নিয়েই থাকতে হবে। এবার ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টিতে চার ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৪৬ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী ও সন্তানদের প্রার্থিতার বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত বৃহস্পতিবার তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যাদের স্ত্রী ও সন্তান প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে দলীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। তারা (সাংগঠনিক সম্পাদক) কাজ শুরু করেছেন। দলের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সময়মতো সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এরই মধ্যে নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপিদের প্রভাব ও হস্তক্ষেপ বন্ধে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে ইসি। গত ২ মে এমন তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘মন্ত্রী কিংবা রাজনৈতিক দলের এমপি যে-ই হোক না কেন, প্রভাব খাটালে তা আমলে না নিতে মাঠ কর্মকর্তাদেরও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ একই দিন আরেক কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘নির্বাচনী আইন যারা মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আইনি ব্যবস্থা নেবে। প্রভাবশালীরা নির্বাচনে কোনোরকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি এমপি-মন্ত্রী যে-ই হোক, নির্বাচন কমিশন কিন্তু এত দুর্বল নয়।’ 

নির্বাচন আচরণবিধি অনুসারে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে। জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেই এ বিধান রয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। তার আগে ইসি গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার কারণে ভোটের আগের দিন এ সিটির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আজিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করে। 

কিন্তু এ বিধান প্রয়োগ খুব সহজসাধ্য নয় বলেই মনে করছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এলে প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানার হুঁশিয়ারিতে কতটা কাজ হতে পারেÑ এ প্রশ্নে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এতে প্রমাণ ও তদন্তের বিষয় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ শাস্তি প্রয়োগ করলেও তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের সময় এ ধরনের শাস্তির কার্যকরিতা পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত হয়ে যায় এবং প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। আর এ ধরনের অভিযোগের তদন্ত সাধারণত ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের দিয়ে করানো হয়। কোনো সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী যদি কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব সৃষ্টি করেন বা বিশেষ সুবিধা দেন, আর সেই ঘটনার তদন্তের পরও তো সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী স্বপদে বহাল থাকবেন। তদন্তকারী ডিসি, এসপি, ইউএনওরা কি চাইবেন নিজেদের পদ হারানোর ঝুঁকি নিতে?’ সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র আর গণতন্ত্র দেখানো দুটো আলাদা বিষয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্র দেখাতে চাইলে এ ধরনের হুঁশিয়ারি দিতেই পারে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলের পক্ষ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হলেও এখনও পর্যন্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্যরা মাঠে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। অনেক মন্ত্রী-এমপি তাদের আত্মীয়স্বজনকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন। সেই তালিকায় সন্তান, আপন ভাই, চাচাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, খালাতো ভাই, চাচা, শ্যালকসহ নানা ধরনের আত্মীয়স্বজন রয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরা টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর সদর উপজেলার প্রার্থী হিসেবে বহাল রয়েছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বরিশাল-১ আসনের এমপি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ আগৈলঝাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। 

বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের চারজন সদস্যের স্বজনরা এখনও মাঠে রয়েছেন। তারা হলেনÑ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছোট ভাই নজরুল মজিদ মাহমুদ নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিমের আপন চাচাতো ভাই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হাকিম চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদের ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই জামিল হাসান (দুর্জয়) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

এ ছাড়া নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইসরাক শাবাব চৌধুরী সুবর্ণচরে প্রার্থী হয়েছেন। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী। এখানে এমপির স্ত্রী দুইবারের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌসও ‘ডামি’ প্রার্থী ছিলেন। তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণে ছেলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লা-২ আসনের এমপি অধ্যাপক আবদুল মজিদের স্ত্রী বর্তমান চেয়ারম্যান রেহেনা মজিদ এবারও প্রার্থী হয়েছেন।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন ও পাশের সোনাতলায় তার ভাই মিনহাদুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এরই মধ্যে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দুজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা হলেন- ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম এবং আশিক আহম্মেদ। গতকাল শনিবার সকালে সারিয়াকান্দি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এ ঘোষণা দেন। এ সময় তারা দুজনই এমপির ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজলের পক্ষে সমর্থন জানান। 

এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে এরই মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার। তিনি কুমিল্লা-১০ আসনের সংসদ সদস্য এবং সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের আপন ছোট ভাই। 

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইসরাফিল হোসেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক স্বপনের আপন ফুফাতো ভাই। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় এবারও প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিছুজ্জামান। তিনি মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান এমপি ফয়সাল বিপ্লবের আপন চাচা। নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন ঘোড়াশাল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মো. শরীফুল হক। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দীলিপের স্ত্রীর বড় ভাই। 

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকারের চাচাতো ভাই মো. আনোয়ারুল হক সরকার এবং ভাতিজা মো. ফেরদৌস পারভেজ প্রার্থী হয়েছেন। পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মকবুল হোসেনের বড় ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হচ্ছেন। 

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের চাচাতো ভাইপো হাবিব উল্লাহ মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দারের ভাতিজা নঈম হাসান জোয়ার্দার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের ছোট ভাই আলী মুনছুর বাবু দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। 

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিনের ভাগনে সোয়েব আহমদ নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে শুক্রবারও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের ছোট ভাই উপজেলা নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন।

এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার করেছেন চার স্বজন : এদিকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। নাটোরের সিংড়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলকের শ্যালক লুত্ফুল হাবিব গত রবিবার সরে দাঁড়িয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলামের ভাগনে কাজী জাহিদ আল রহমান নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। তিনি উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত শুক্রবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার এক দিন পর চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ কবীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মুরাদ কবীর গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ভাতিজা। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীরপ্রতীক) ছেলে গোলাম মূর্তজা পাপ্পা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা