× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘উত্তপ্ত’ এপ্রিল শেষ হলো তাপমাত্রার রেকর্ডে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪ ১১:০৩ এএম

আপডেট : ০১ মে ২০২৪ ১১:০৭ এএম

চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ। কাজের মাঝে স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছেন কয়েকজন কৃষক। মঙ্গলবার দুপুরে দর্শনা নীমতলা বর্ডারের মাঠ এলাকায়। ছবি : এএফপি

চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ। কাজের মাঝে স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছেন কয়েকজন কৃষক। মঙ্গলবার দুপুরে দর্শনা নীমতলা বর্ডারের মাঠ এলাকায়। ছবি : এএফপি

এ বছরের এপ্রিল মাস শুরু হয়েছিল মৃদু তাপপ্রবাহ দিয়ে, আর তা শেষ হলো অতি তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্য দিয়ে। পুরো মাসে দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ অঞ্চলে মৃদু থেকে সর্বোচ্চ অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে গতকালই যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করে। এদিন দুপুরে যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০০৯ সালে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গায় গতকাল বিকাল ৩টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১২ শতাংশ। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি।

যশোর-চুয়াডাঙ্গায় স্থবির জনজীবন

যশোর প্রতিবেদক জানান, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডের দিনে গতকাল সারা জেলায় স্বাভাবিক জীবনযাপন স্থবির হয়ে পড়ে। অলিউল্লাহ নামে এক রিকশাচালক বলেন, যেন মরুভূমির মতো তাপ লাগছে। ঘরের বাইরে পা দিলেই গায়ে লাগছে আগুনের হলকা। চামড়ায় জ্বালা ধরে যায়। বলতে গেলে সারা দিনই কোনো কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। শহরের সবজি বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের মধ্যে তারা পানি সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের কষ্ট বেশি। টিউবওয়েলগুলোতে ঠিকমতো পানি উঠেছে না। পানির অভাবে গোসল, রান্নাবান্না করা যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিবেদক জানান, এপ্রিলে টানা প্রায় ২০ দিন ধরে এ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে তীব্র গরমে। প্রখর রোদে চামড়া ঝলসে যাওয়ার অবস্থা। লোকজন ঘর থেকে কম বের হচ্ছেন। তাই রাস্তাঘাট দিনের বেলা প্রায় ফাঁকাই থাকছে। রাতেও স্বস্তি মিলছে না ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে। 

হিট স্ট্রোকে মৃত্যু বাড়ছেই

গতকাল দেশের বিভিন্ন জেলায় হিট স্ট্রোকে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। নাটোরে খাইরুল ইসলাম নামে এক প্রবাসী, টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার মনছের আলী সরকার (৯৫) নামে এক বৃদ্ধ, সাতক্ষীরায় ফারুক হোসেন নামে এক শিক্ষক, দিনাজপুরের হিলিতে রহিমা বেগম (৪৭), সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জিল্লুর রহমান (৩৫), মুন্সীগঞ্জ সদরে ওমর আলী ও বাতেন মাঝি এবং বরগুনার বেতাগীতে তিন মাস বয়সি শিশু ওজিহার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গরমের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু ও বৃদ্ধসহ বহু মানুষের অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কুমিল্লার হোমনায় গতকাল হিট স্ট্রোকে চারটি গরু মারা গেছে। কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে খামারের মুরগিও মারা যাচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গাজীপুরের রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় কচুরিপানা দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

কেমন গেল এপ্রিল

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান গতকাল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল। গতকাল ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের আকার ধারণ করেছে। কয়েকটি জেলা বাদে সারা দেশের ওপর দিয়েই তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এখনও তা চলমান। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে। তারপর বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। 

দিনের তাপমাত্রা 

গতকাল যশোর ও চুয়াডাঙ্গার পর সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি, বাগেরহাটের মোংলায় ৪২ দশমিক ৩, সাতক্ষীরায় ৪২ দশমিক ২, খুলনায় ৪১ দশমিক ৫, টাঙ্গাইলে ৪১, গোপালগঞ্জে ৪০ দশমিক ৭, ফরিদপুরে ৪০ দশমিক ৩, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ৩, রাজশাহীতে ৪৩, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে ৪১, বদলগাছীতে ৪০ দশমিক ৫, দিনাজপুরে ৪১, ময়মনসিংহে ৩৯, ঢাকায় ৩৮ দশমিক ৬, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৩৬ দশমিক ৫, বরিশালে ৩৭ দশমিক ৭, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

বৃষ্টিপাতের আভাস

আজ বুধবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সিলেটে গতকাল ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা