× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নৌপথে আয়ের সন্ধানে ফেরিপথের নতুন নকশা হচ্ছে

ফসিহ উদ্দীন মাহতাব

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪০ এএম

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

নৌপথ আগের মতো লাভজনক করতে আয়ের সন্ধানে জোর চেষ্টায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। ইতোমধ্যে নদীর ৭টি এলাকায় বিকল্প নৌপথ, ফেরিপথ বা জোন সৃষ্টি করতে নকশাপথ প্রস্তুত করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি দুই সংস্থা যৌথ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ফেরি রুটগুলোর জেটি, ঘাট, পন্টুন, অ্যাপ্রোচ রোড ও অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি বছরেই যাতে চালু করা যায় সেজন্য বিআইডব্লিউটিসিকে নির্দেশনা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। 

সম্প্রতি (গত রবিবার) নৌ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় একজন যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ- এর একজন করে প্রতিনিধি রয়েছে। গঠিত কমিটি নতুন এই পথনকশা নিয়ে সমীক্ষা করে প্রতিবেদন দেবেন। এরপর নতুন পথ চালু হবে। কারণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই নৌরুটে ফেরি চলাচল সংকুচিত হয়েছে। তাই আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নানা সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখ পড়েছে সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এই সংস্থার যত কাজ রয়েছে, তার মধ্যে একমাত্র লাভজনক খাত ফেরি সার্ভিস। এই খাত থেকে এখন বার্ষিক আয় হয় তিনশ দশ থেকে তিনশ পনেরো কোটি টাকা। যার মধ্যে ব্যয় হয় আড়াইশ কোটি টাকা। আয় আরও বেশি হতো কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর বড় রুটটি মৃত প্রায়। ফলে বড় লভ্যাংশ থেকে সংস্থা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ফেরি সার্ভিসগুলো দেশের আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু রুটে চালু করতে একটা সমীক্ষা চালিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নতুন ৭টি রুট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রবিবার মন্ত্রণালয়ে এই রুটগুলো নিয়ে আলোচনার পর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সবগুলো সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতি হিসাব কষে একটি প্রতিবেদন দেবে। এর আলোকে নতুন রুটে চলতি বছরের মধ্যে চালু করতে সচেষ্ট থাকবে।

মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের আয়ের উৎসের মধ্যে বাণিজ্যিক ও সহায়ক নৌযান রয়েছে। ইউনিট ভিত্তিক নৌযানের বাণিজ্যিক নৌযান ১৭৪টি ও সহায়ক নৌযান ৫৬টিসহ মোট ১৮০টি। ফেরি সার্ভিসের মধ্যে ৫৯টি ও ২৭টি পন্টুনসহ মোট ৮৬টি ও টাগ রয়েছে ১১টি। প্যাসেঞ্জার সার্ভিস ইউনিটের মধ্যে প্যাটেল স্টিমার ৪টি, ইনল্যান্ড মোটর ভেসেল ৩টি, কোস্টাল ভেসেল ৬টি, সি-ট্রাক ১১টি ও ওয়াটার বাস ১৩টি। এর বাইরে কার্গো সার্ভিস ১৭টি ও জাহাজ মেরামত ইউনিট ১৫টি। এ ছাড়াও বিআইডব্লিউটিসির যতগুলো আয়ের উৎস রয়েছে তার মধ্যে ফেরি থেকে বার্ষিক আয় আসে ৩১০ থেকে ৩১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর্মকর্তাদের বেতন ও সেবা সার্ভিসসহ আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয় হয়। প্রতি বছর এই খাতে উদ্বৃত্ত থাকে ৬৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ৭টি রুটে চলাচল করছে ৫৩টি ফেরি। এর মধ্যে সচল রয়েছে ৪০টি ফেরি। দুর্ঘটনাসহ ১২টি ফেরি মেরামত ও ডকিং সার্ভে সম্পন্নের জন্য ডকইয়ার্ডে রয়েছে। এ ছাড়া ৩৫টি জলযান নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ৬টি নতুন ইমপ্রুভ মিডিয়াম ফেরি শিগগিরই বহরে যুক্ত হবে। তখন ফেরির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫৯টি।

সংশ্লিষ্টদের মতে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ফেরি থেকে আয় হতো প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরও বিআইডব্লিউটিসি আশা করেছিল ফেরির আয় কমবে না। মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে নানা ধরনের যানবাহন ফেরি ধরে নদীর এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে যাওয়া-আসা করবে। এজন্য  মোটরসাইকেল সেতুতে চলাচল নিষিদ্ধ করা ও মালবাহী ট্রাক ফেরি ব্যবহার করে চলাচলের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সময় বাঁচানোর জন্য ফেরি ব্যবহার না করে সবাই পদ্মা সেতু ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়েছে। এজন্য নৌমন্ত্রণালয়ের নেওয়া সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আয়ের উৎসেও বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়। পরবর্তীতে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন রুটের সন্ধানে সমীক্ষায় নামে বিআইডব্লিউটিসি। সম্ভাব্য ৭টি নতুন রুট খুঁজে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষে মাঠে নামে সংস্থাটি।

রুটগুলো হলো : বামনা-বদনিখালা (বরগুনা), বগীবাজার-চালিতাতলী (বরগুনা জেলা), চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ-সীতাকুন্ড ফেরিঘাট (বাকখালী-গাছুয়া-সন্দ্বীপ), রাঙ্গাবালী উপজেলার সঙ্গে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার মধ্যে পানপট্টি-কোড়ালিয়া রুট, ভোলা লালমোহন উপজেলার সঙ্গে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মধ্যে নাজিরপুর-কালাইয়া রুট, নোয়াখালী (চেয়ারম্যানঘাট-হাতিয়া) এবং তজুমদ্দিন ভোলা (মনপুরা-ভোলা)।

গত রবিবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়- বিআইডব্লিউটিসি নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে। নতুন রুট চালু হলে টিসির আয় বাড়বে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা