এস এম রানা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২৭ পিএম
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৩৫ পিএম
জিম্মিদশা থেকে মুক্তির পর উপকূলের সন্ধান পাওয়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিক একসঙ্গেই দুবাই থেকে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে দুই নাবিক দুবাইয়ে নামবেন জানালেও মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নতুন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশমুখী পণ্য নিয়ে একসঙ্গে তারা তাদেরই জাহাজে করে বাংলাদেশে ফিরবেন।
মঙ্গলবার বিকালে দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দর থেকে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জাহাজ থেকে ক্রেনে কয়লা খালাস করা হচ্ছে। আর নাবিকরা জাহাজেই অবস্থান করে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন এসআর শিপিং লাইনসের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম। সেখান থেকে তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সবকিছু স্বাভাবিক গতিতে চলছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন এবং নিজ নিজ কর্মে নিয়োজিত আছেন।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই বাংলাদেশমুখী পণ্য পরিবহনের আদেশ পাওয়া গেছে। সব নাবিক একসঙ্গে জাহাজ নিয়ে বাংলাদেশ ফিরবেন।’
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি আগে থেকেই বাংলাদেশমুখী ট্রিপ খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। এখন সপ্তাহখানেকের মধ্যে কয়লা খালাস শেষ করে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হতে চায়। সব ঠিক থাকলে মে মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশে ফিরতে পারে জাহাজটি।’
৪ মার্চ ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। পথে ভারত মহাসাগর থেকে ১২ মার্চ জাহাজটি ছিনতাই করে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি ছিল ৩৩ দিন। এ সময় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি মুক্ত করে মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লাইনস। ১৪ এপ্রিল রাতে মুক্ত হয়ে আবার দুবাইয়ের পথে যাত্রা শুরু করে। ২১ এপ্রিল জাহাজটি দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছয়। পরদিন ২২ এপ্রিল রাতে বন্দর জেটিতে ভেড়ে। এরপর শুরু হয় কয়লা খালাস।
স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ। সেটাও এসআর শিপিং লাইনসের। এমভি জাহান মনি। ওই জাহাজে ছিলেন ২৫ নাবিক ও একজন নাবিকের স্ত্রী। তারা জিম্মির ১০০ দিন পর মুক্ত হয়েছিলেন মুক্তিপণের বিনিময়ে। এর প্রায় ১৪ বছর পর এমভি আব্দুল্লাহ একই দেশের জলদস্যুদের কবলে পড়ে। তবে এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের জিম্মি থাকতে হয়েছে মাত্র ৩৩ দিন। এমভি জাহান মনির চেয়ে তিনগুণ কম সময়ে এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকরা মুক্ত হতে সক্ষম হয়েছেন। দুটি জাহাজ মুক্ত করতে মালিকপক্ষকে মুক্তিপণ গুণতে হয়েছে। হেলিকপ্টার উড়িয়ে জাহাজের পাশে পানিরোধক ব্যাগে ডলারভর্তি করে ফেলতে হয়েছে। জলদস্যুরা সেই ডলার গুনে নিয়ে জাহাজ ছেড়েছে।