× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঋণখেলাপি

কৃষক জেলে ও মৎস্যজীবীদের মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ

ফসিহ উদ্দীন মাহতাব

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:২৪ পিএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-জেলে-মৎস্যজীবীরা স্বাবলম্বী হতে বিভিন্ন সময় ব্যাংক থেকে অল্প টাকা ঋণ নিয়ে থাকেন। ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেকেই খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধ করছেন। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বেশিসংখ্যক কৃষক, জেলে বা মৎস্যচাষি খেলাপির মুখোমুখি হচ্ছেন। সেই অজুহাতে টাকা আদায়ের নামে ব্যাংক থেকে তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা দেওয়া হচ্ছে।

মাত্র তিন হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধে বিলম্ব হলেই তারা সার্টিফিকেট মামলা ও হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এমনকি খেলাপি হওয়ার দায়ে কারাগারে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। আসল টাকা পরিশোধ করলেও অতিরিক্ত সুদের জালে আটকা পড়ছেন অনেকে।

বর্তমানে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১৯টি মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অথচ বড় বড় ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র। বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টিতে এলে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কৃষক-জেলে-মৎস্যজীবীদের ঋণ আদায়ের নামে অহেতুক হয়রানি করা যাবে না। এ প্রেক্ষিতে যাচাই সাপেক্ষে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে মন্ত্রিপরিষদ থেকে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে গত ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা সার্টিফিকেট মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পন্ন করতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভার কার্যপত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, অডিট আপত্তি থেকে বাঁচতে সার্টিফিকেট মামলা করছেন অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা। তবে অনেক কৃষকই ঋণ পরিশোধ করেছেন এবং অনেক গ্রাহক আসলের বেশি টাকা পরিশোধ করেছেন। তার পরও সার্টিফিকেট শাখা থেকে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। তবে ব্যাংকের আদায় বাড়ছে না। মামলার ভয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ব্যাংকে আসছেন না। অনেক গ্রাহক আসল টাকা পরিপোধ করে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন, কিন্তু সেগুলো পড়ে থাকছে বছরের পর বছর। সভায় জানানো হয়, সারা দেশে কৃষক-জেলে-মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ২৬ হাজার ১১৯টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৯৬২টির নিষ্পত্তি করেছেন জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা।

সভায় ঝিনাইদহ জেলার চিত্র তুলে ধরা হয়। এ জেলায় ৮৩৫ কৃষকের নামে ঝুলছে সার্টিফিকেট মামলার খড়্গ। মামলার কারণে অনেক কৃষক চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করতে নতুন করে এনজিওর ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন। গত মার্চ মাস পর্যন্ত ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ৮৩৫ কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেনারেল সার্টিফিকেট আদালতে ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার বিপরীতে মামলা ১৪৯টি, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সার্টিফিকেট আদালতে ২৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকার বিপরীতে ১১৪টি, শৈলকুপায় ৬২ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিপরীতে ১০৩টি, হরিণাকুণ্ডুতে ২৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার বিপরীতে ২৬টি, কালীগঞ্জে ৯৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার বিপরীতে ১৭৫টি, কোটচাঁদপুরে ৩৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকার বিপরীতে ১১টি এবং মহেশপুর সার্টিফিকেট আদালতে ২৬ লাখ ৭ হাজার টাকার বিপরীতে ২৭৫টি সার্টিফিকেট মামলা হয়েছে।

এসব কৃষকের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা ৬ কোটি ৯৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। মার্চ পর্যন্ত ৮টি মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ৯৯ হাজার ২৭০ টাকা আদায় হয়েছে। এ ছাড়া ১১টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসারের কাছে কৃষকদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলা করেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। তারা ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার জন্য ৩৮৮ কৃষকের নামে মামলা দিয়েছে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আদায়ের জন্য ৮টি, জনতা ব্যাংক ২৮ লাখ ১৩ হাজার টাকার জন্য ৪০টি, অগ্রণী ব্যাংক ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার জন্য ৮১টি, কর্মসংস্থান ব্যাংক ২৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার জন্য ২৮টি, ন্যাশনাল ব্যাংক ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার জন্য ১০টি, বিআরডিবি ৮৮ লাখ ৫ হাজার টাকার জন্য ৯১টি, পল্লী বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৬৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকার জন্য ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার ও নওসীনা আরিফ ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে চাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের নামে সার্টিফিকেট মামলা হচ্ছে। বিষয়টি খুবই অমানবিক। এজন্য ডিসিদের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা