× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঈদযাত্রায় সড়কে প্রাণ গেছে ৪৩৮ জনের : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৪ পিএম

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৬ পিএম

ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন

ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন

এবারের ঈদযাত্রায় সারা দেশে দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২১ জন। এ ছাড়া নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও  ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব তথ্য তুলে ধরেন।

সংগঠনের সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতি বছরের মতো এবারও প্রতিবেদনটি তৈরি করে। এতে বলা হয়, প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে। দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকসংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনদের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত, ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

এ সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮৭ জন চালক, ৩১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪০ জন পথচারী, ৭৫ জন নারী, ৪৭ জন শিশু, ২৭ জন শিক্ষার্থী, আটজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, চারজন শিক্ষক, একজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দুজন চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়ও আঞ্চলিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতালে) সড়ক দুঘটনায় আহত ৬৫৮ জনের মধ্যে যাচাই বাচাই করে ৬০৮ জন আহত রোগীর তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৪০ দশমিক ৫০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ ট্রাক -পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান-লরি, ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ কার মাইক্রো জিপ, ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ অটোরিকশা, ১২ দশমিক ১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৫৮ শতাংশ মহাসড়কে, ১০ দশমিক ২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৫০ দশমিক ৬২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬ দশমিক ১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে গত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে অবকাঠামো ভালো হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। গতিকে নিরাপদ করার মতো আইনিকাঠামো, দক্ষ চালক, মানসম্মত যানবাহনের অভাব রয়েছে। আইন প্রয়োগে দুর্নীতির কারণে জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার, ইজিবাইকের মতো যানবাহন অবাধে চলছে। এ ছাড়াও ছোট ছোট যানবাহন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।

তাই তিনি মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আইন প্রয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে গণপরিবহনগুলোতে নগদ অর্থ বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেন চালুর দাবি জানান তিনি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুরন্নেছা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, সংগঠনের সহসভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. মহসিন প্রমুখ। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা