× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সারাদেশে হিট এলার্ট জারি, যেন ‘লু হাওয়া’ বইছে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:০৯ পিএম

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪ ০১:১৫ এএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেন মরুর তপ্ত হাওয়া বইছে। ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ৯ জেলায় এই মূহুর্তে বইছে তীব্র তাপদাহ। বিশেষ করে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। কিছু কিছু এলাকায় জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থা দেখা দিয়ে। তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানা রোগবালাই। বিশেষ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে কয়েকটি জেলার হাসপাতালে। শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় হিট স্ট্রোকে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সাফা নামের ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর কথা জানিয়েছে তার পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট এলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক এড়াতে সবাইকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, সারাদেশে প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে কেউ অযথা ঘরের বাইরে যাবেন না। যারা বাইরে কাজ করেন অর্থাৎ শ্রমিক শ্রেণির মানুষরা পেটের দায়ে কাজ করেন। এই গরমের মধ্যে তারা যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে থাকেন তখন দেখা যাবে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রির ওপরে উঠে গেছে। তখন শরীরে কোন ঘাম থাকবে না। এমন হলে মাথাব্যথা, মাথা ঘুরানো, বমি বমি ভাব হতে পারে। তাতে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে, যাকে বলা হয়Ñ হিট স্ট্রোক। এতে মৃত্যুও হতে পারে। এরজন্যই সতর্কতা হিসেবে হিট এলার্ট জারি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকের জন্য একটাই উপদেশ অযথা ঘরের বাইরে ঘোরাফেরা করবেন না। যেতে হলে ছাতা নিয়ে যাবেন। আর বাইরে কাজ করার সময় কিছুক্ষণ পরপর ছায়াযুক্ত স্থানে চলে আসতে হবে। বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে লবণ দিয়ে পানি পান করলে ভালো হয়। ঘামের কারণে পানিশূন্যতার সঙ্গে লবণশূন্যতা হতে পারে। এজন্য প্রচুর পরিমাণ পানি, স্যালাইন, ডাব ইত্যাদি খেতে হবে। রাস্তাঘাটের আজেবাজে খাবার ও শরবত পান করা যাবে না। কেননা এতে জন্ডিসের মতো অসুখ বাসা বাধতে পারে।

তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী তিন দিনের মধ্যে তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। এমনকি তিনদিন পরও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাতে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শুক্রবার খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাটে ৪১, যশোর ও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ২, খুলনায় ৪০ দশমিক ৭, রাজশাহীতে ৪১, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ ও টাঙ্গাইলে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা তীব্র তাপ প্রবাহ। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ও আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আরো বাড়বে এ বিবেচনায় ৭২ ঘণ্টার জন্য তাপ প্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। ২১ এপ্রিলের পর কোথাও কোথাও তাপমাত্রা কিছুটা কমবে, আবার কোথাও বাড়বে। এর মধ্যে কোথাও বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। 

আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, এপ্রিল আমাদের দেশে উষ্ণতম মাস। এ সময় দিনের পরিধি অনেক বড় থাকে। এ অঞ্চলের ওপর এই মৌসুমে সূর্য কিরণ খাড়াভাবে পড়া এবং ভৌগলিক অবস্থান ও গঠনগত কারণে তাপমাত্রা বেশি থাকে। বিশেষ করে রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি থাকে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে কিন্তু এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এসব অঞ্চলে তীব্র তাপদাহ চলছে। 

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের যেসব জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা আজ শনিবারও অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তাও অব্যাহত থাকবে।  

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

চুয়াডাঙ্গা প্রতিবেদক জানান, শুক্রবার এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগেরদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ছিলো ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট এলার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। তাদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে, খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে বাড়ির বাইরে বের না হন।

স্থানীয় জানান, দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান, রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। 

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। বরং প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর তা ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা আশু মিয়া বলেন, প্রচন্ড গরমে মাঠের জমিতে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বেশিক্ষণ মাঠে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। অতিরিক্ত তাপের কারণে ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো সতর্কবার্তা নেই

এদিকে হিট এলার্ট জারি হলেও দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক শাহাদুল খবির চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত আপাতত নেই। তবে বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখছি। যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রয়োজন হয় সঙ্গে সঙ্গে আমরা বন্ধ করে দিব।

তাপে পুড়ছে রাজশাহীও

চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল। আগেরদিন ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবার ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, ‘বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ছে, যা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।’ 

রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে নানা তথ্য জানিয়ে রাজশাহীর সড়কে মাইকিং করা হয়েছে। দিনের বেলায় জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের না পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডায়রিয়া সহ সর্দি-কাশি ও জ্বরের রোগী বাড়ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ভেতরে এবং বারান্দায় তিল ধারণের ঠাঁই নাই। একই চিত্র হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। বহির্বিভাগেও শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ সিরিয়াল দেখা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২০০ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

রামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, আবহওয়াজনিত কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এই গরমে জ্বর সর্দি কাশি এবং ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারেÑ এটা মাথায় রেখে হাসপাতালে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।

বিপদে খেটে খাওয়া মানুষ

তীব্র দাবদাহে বেশি বিপদে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ। রোদের তীব্রতায় পিচঢালা সড়ক থেকে উষ্ণ তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। রিকশা ও অটোচালকদের সড়কে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। 

ঈশ্বরদী পৌর শহরের রেলগেট এলাকার রিকশাচালক আওলাদ হোসেন বলেন, রোদের তাপে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। মাথার ওপর ছাতা লাগানোর পরও গরম লাগছে। অতিরিক্ত রোদ আর গরমে বাইরে মানুষ কম, তাই ভাড়াও কম হচ্ছে। 

মহানগর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির শ্রমিক আজাহার আলী বলেন, গরমে টেকাই যাচ্ছে না, কাজ করবো কি? তবুও জীবিকার তাগিদে কাজ করছি। 

শহরের ফকিরের বটতলায় শরবত বিক্রেতা মো. পান্না বলেন, দুদিন যাবত রোদের তাপ ও গরম বেশি পড়ায় লেবুর শরবতের প্রতি মানুষের চাহিদা বেড়েছে। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। 

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও পরামর্শ

তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে কী ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয় এ সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, গরমে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বৃদ্ধরা। এ সময় জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ বেড়ে যায়। তা ছাড়া ডায়রিয়া, টাইফয়েড ও জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই ঘরের বাইরে বের হলে বা রোদে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে, লেবুর শরবত, স্যালাইন ও তরল খাবার খেতে হবে। তেল-মশলাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরে দীর্ঘক্ষণ রোদ লাগানো যাবে না। বাইরে বের হওয়ার সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে, সানগ্লাস ও ছাতা, মাথায় ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে। কিছুক্ষণ কাজ করার পর ছায়াযুক্ত স্থানে চলে যেতে হবে। একটানা কাজ করা যাবে না। এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগামী মৌসুমে প্রত্যেককে একটি করে গাছ লাগাতে হবেÑ এমন অঙ্গীকার পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে আসা দরকার।

হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যুর খবর

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক জানান, গতকাল সকালে উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা ২ নং ওয়ার্ড আনজিরমারটেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়িতে হিট স্ট্রোকে মোছাম্মৎ সাফা নামের ছয় মাস বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। সাফার বাবা নিজাম উদ্দীন বলেন, ভোরে মায়ের বুকের দুধ পান করার কিছুক্ষণ পর সে ঘুমিয়ে পড়ে। সে সময় ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। সকাল সাতটায় মেয়েকে কোলে নেওয়ার পর তার শরীর ঠান্ডা অনুভূত হলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আকতার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিভাবকদের ধারণা, অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে সাফার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে ডাক্তার সাবরিনা বলেন, হিট স্ট্রোকে শিশুটি মারা গেছে কিনা সেটা পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর এটা বলা যাবে। 

দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে যা বলা হয়েছে

শুক্রবার তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, যশোর ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

শুক্রবার ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারি পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন। গত বছর এ অঞ্চলে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। ১৯৯৫ এবং ২০০২ সালেও সমান তাপমাত্রা উঠেছিল, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, দেশে আবহাওয়ার রেকর্ড রাখা শুরুর পর এটাই সর্বোচ্চ।

আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসে দুই থেকে চারটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ এবং এক-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অতি তীব্র তাপপ্রবাহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠতে পারে।

ট্রাফিক পুলিশের জন্য বিশেষ উদ্যোগ

প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যেও নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের স্বস্তি দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক সদস্যরা যাতে হিটস্ট্রোকসহ পানিশূন্যতা, মাথাব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতায় না ভোগেন তার জন্য খাবার পানি ও স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ট্রাফিকের ৮টি বিভাগে এসব সরঞ্জাম দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাপদাহ যতদিন থাকবে ততদিন এই কার্যক্রম চলবে বলে ডিএমপির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা