× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভিয়েতনামি নারকেল চাষ জনপ্রিয় করতে চায় সরকার

প্রতিদিনের বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২২ ১৮:২১ পিএম

ভিয়েতনামি নারকেল গাছ

ভিয়েতনামি নারকেল গাছ

‘আগে আমরা নারকেল খাবো মানে হল একজনকে ডেকে আনতে হত, তিনি গাছে উঠতেন, সেখান থেকে কয়েকটা ডাব বা নারকেল পাড়তেন, তারপর খাওয়া হত। এটাই দেখে এসেছি। কিন্তু এখন আমার যে নারকেল গাছ সেখানে আমার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও নারকেলের ওপর বসে মজা নেয়, আনন্দ করে। কারণ নারকেল গাছ লম্বায় তাদের সমান।’

কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার গোপালপুরের কাজী মাহবুবুর রহমান মোহাম্মদ আবু সাঈদ আহমেদ চৌধুরী। তিনি যে নারকেল গাছটির কথা বলছেন, সেটি ভিয়েতনামি নারকেল হিসেবে পরিচিত। এই গাছ প্রচলিত নারকেল গাছের তুলনায় উচ্চতায় অনেক খাটো। আরো ফলনও বেশি। ২০১৬ সালে আবু সাঈদ চৌধুরি তার পুকুর পারে পরিত্যক্ত জমিতে ৫০টা ভিয়েতনামের চারা লাগান। এরপর ২০১৯ সালে প্রত্যেকটা গাছে ফুল আসা শুরু হয়। এর ৬/৭ মাস পর ডাব এবং নারকেল পেয়ে যান তিনি। এখন তিনি দুই একর জমিতে এই নারকেলের চাষ করছেন। সেখানে ৫০ টা গাছে ফল ধরছে আরা বাকিগুলো তিনি চারা তৈরি করেন বিক্রি করনে। একই সঙ্গে তিনি যেমন ডাব এবং নারকেলের ফলন করছেন তেমনিভাবে তিনি নতুন চারা তৈরির চেষ্টা করছেন। ফলে তার লাভ হচ্ছে দুইভাবে, ফল বিক্রি করে এবং ডাবের চারা বিক্রি করে।

আবু সাঈদ বলেন, ‘এই গাছ হাইব্রিড জাতের হওয়ার কারণে যত্ন একটু বেশি করতে হয়। বেলে-দোঁআশ মাটিতে ভালো হয়। আর আমার মনে হয় এই নারকেল গাছ অনেক পানি খায়। আমি গোবরের কমপোষ্ট সার দিচ্ছি। তবে আমার মনে হচ্ছে আরো ভালো যত্ন করলে গাছ বাঁচানো যাবে।’

একটা গাছ বিক্রি করে তিনি গাছ প্রতি ৫শ থেকে ৭শ টাকা পান। আর ডাব ও নারকেল প্রতিটি বিক্রি করেন অন্তত ৩০টাকায়।

বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, নারকেল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। তবে আমাদের দেশে বর্তমানে যে প্রচলিত নারকেলগুলো রয়েছে তা থেকে ফলন পেতে স্বাভাবিকভাবে ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগে। তাই নারকেলের ফলন যাতে তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় তাই নতুন এই সম্পূর্ণ ডোয়ার্ফ (খাটো) জাতটির আবাদের ব্যাপারে জোর দেয়া হচ্ছে। যথাযথ পরিচর্যা করলে নতুন জাতের এ নারকেল গাছ থেকে ২৮ মাসেই ফলন আসে। ফলনের পরিমাণ আমাদের দেশের জাতের থেকে প্রায় তিনগুণ।

উপযুক্ত পরিচর্যা করলে একটি গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ২৫০টি নারিকেল পাওয়া যায়। উন্নত এ জাতের সম্প্রসারণ করা গেলে আমাদের দেশের নারকেলের উৎপাদন প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

ভিয়েতনাম থেকে আনা খাটো নারকেল গাছের দুটি জাত রয়েছে: (ক) সিয়াম গ্রিন কোকনাট: এটি ডাব হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। এ জাতের ডাবের রং কিছুটা সবুজ, আকার কিছুটা ছোট , প্রতিটির ওজন ১.২-১.৫ কেজি। এ জাতের ডাবে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিলিটার পানীয় পাওয়া যায়। বছরে প্রতি গাছে ফল ধরে ১৫০-২০০ টি। (খ) সিয়াম ব্লু কোকোনাট: এটিও অতি জনপ্রিয় জাত। এটা উদ্ভাবন করা হয় ২০০৫ সালে। ভিয়েতনামে এ চারা কৃষকের খুবই পছন্দ। ফলের রং হলুদ, প্রতিটির ওজন ১.২-১.৫ কেজি, ডাবে পানির পরিমাণ ২৫০-৩০০ মিলি। ডাবের পানি খুব মিষ্টি এবং শেলফ লাইফ বেশি হওয়ায় এ জাতের ডাব বিদেশে রপ্তানী করা যায়। বছরে প্রতি গাছে ফল ধরে ১৫০-২০০ টি।

বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম বলেন, সরকারের প্রথম উদ্দেশ্য দেশীয় চাহিদা পূরণ করা। এবং এই চাহিদা পূরণ করার পর রপ্তানী করার চিন্তা সরকারের রয়েছে।

তিনি বলেন,ভিয়েতনামের নারকেল আমরা সারা বাংলাদেশে চাষ করতে চাই। আমরা একটা প্রকল্প নিয়েছি। আমাদের হর্টিকালচার সেন্টারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করা হচ্ছে। কৃষকদের চাহিদামত এটা সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এটা যাতে কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে রোপন করে এবং আমরা দেশের চাহিদা মেটাতে পারি। আমাদের উপকূলীয় এলাকায় এই নারকেল চাষের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারণ লবণাক্ত পানিতে অন্য কোন ফসল না হলেও নারকেল গাছ হয়। আমরা সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছি-দেশিয় চাহিদা পূরণ করার পর আমরা বিদেশি রপ্তানী করতে চাই।

আট-নয় বছর আগে বাংলাদেশে প্রথম এই নারকেলের চাষ শুরু হয়েছে। তবে সারা বাংলাদেশে কী পরিমান চাষ হচ্ছে সে হিসেব অধিদপ্তর দিতে পারেনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা