প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৪ পিএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:১১ পিএম
ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যান্ড ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে বক্তৃতা রাখছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। প্রবা ফটো
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেভাবে উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে তাতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যেভাবে কাজ করছি, সেই হিসেবে আশা করি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা সফলতা অর্জন করতে পারব। কেননা আমাদের বিজ্ঞানীরা বীজের নানান জাত উদ্ভাবন করে চলেছেন। এতে জলবায়ু সহিষ্ণুতা ধান থেকে শুরু করে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ফসলের উদ্ভাবন তারা করে চলছেন।
‘ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যান্ড ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ এসব কথা বলেন। ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ (এফএফবি) ও ম্যাশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি (এমএসইউ) যৌথভাবে সম্মেলনটির আয়োজন করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএফবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফ হোসেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এমএসইউর সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. জর্জ স্মিথ, এমএসইউর কলেজ অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোচেসের ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ড. করিম মেরিদিয়া প্রমুখ।
মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে এতে জলবায়ু পরিবর্তনে কোনো প্রভাব আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘খরার ফলে মাটির আর্দ্রতা কমতে পারে। আমাদের যে মাটির স্তর সেখানে যে বন্যা হয় তা কিন্তু খারাপ না। কেননা বন্যায় কিছু ক্ষতি হলেও যে পরিমাণ পলি বহন করে নিয়ে আসে। এতে দীর্ঘকালীন উৎপাদনের জন্য মাটির উর্বরতা বাড়ে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভাগ্যের ওপর বিশ্বাসী হলেও বিজ্ঞানীরা যে গবেষণা করছেন তা কিন্তু কম না। কেননা গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এতে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। তাই গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। একসময় মোটা ইরি চাষ হতো বর্তমানে লম্বা ও চিকন ধান চাষ হচ্ছে। এগুলো খুবই সুস্বাদু। কৃষকের মাঠে কাজ করতে করতে পিঠের চামড়া কালো হয়ে যায় অথচ ছেলে-মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তারা এ সময় জমির ধারে কাছে যুক্ত হয় না কিন্তু যখন অফিসার হয়ে যায় তখন কিন্তু ঠিকই বুঝে তার প্রতিষ্ঠার পেছনে তার কৃষক বাবার অবদান। সেজন্য আমরা কৃষির কাছে ঋণী, কৃষিই আমাদের প্রাণ, কৃষির মাধ্যমেই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।’
বক্তৃতায় জর্জ স্মিথ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি চ্যালেঞ্জ যা এখন আর নির্দিষ্ট কোনো দেশের সীমানায় আটকে নেই। এর প্রভাব মোকাবিলায় পারস্পারিক সহযোগিতা দরকার। এই ফোরাম আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া, বৈচিত্র্যময় দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে।’
ড. করিম মেরাদিয়া বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্যব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব, এবং এর ফলে নানাবিধ সমস্যা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানা। অভিযোজনের বিভিন্ন কৌশলগুলোর প্রভাব পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য আরও নির্ভর বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।’
সেমিনারে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।