উপজেলা নির্বাচন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৫ পিএম
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৫১ পিএম
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ফাইল ফটো
দেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা সংশোধন করে ডিজিটাল প্রচারের ব্যবস্থা এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আসছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেই প্রার্থীরা এই সুযোগ পাবেন। এতে প্রার্থীর নির্বাচন ব্যয় কমবে বলে কমিশনের ধারণা। বুধবার (৩ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে এই ধারণার কথা জানান।
তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তার আলোকে বর্তমান কমিশন পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবে। উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রচারের ব্যবস্থা করায় প্রার্থীদের খরচ কমে যাবে। ইউটিউটে, ফেসবুকে প্রার্থীরা কম ব্যয়ে প্রচার চালাতে পারবেন।’
উপজেলা নির্বাচন বিধিমালা ও নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধন করে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর জামানতের পরিমাণ বাড়িয়েছে। প্রার্থীর বায়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। এতে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্বাচনে ব্যয় বাড়বে। প্রার্থীর সংখ্যা কমতে পারে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচন ছেলেখেলা নয়। রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়, স্থানীয় সরকার পরিচালনার বিষয়। সেখানে বিধান ছিল, যেন যে কেউ চাইলেই প্রার্থী হতে না পারেন। এজন্য প্রার্থীর সমর্থনে ভোটারদের স্বাক্ষর নেওয়ার বিধান করা হয়েছিল। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। এছাড়া যারা সমর্থন দেন তারা অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হন। এ ধরনের অভিযোগ আছে। তাই আমরা সেটা তুলে দিয়েছি। তিনি বলেন, ওই বিধান প্রতিপালন করতে গিয়ে সমর্থন দেখানোর জন্য প্রার্থীরা ছলচাতুরির আশ্রয়ও নিতেন। প্রার্থী নিজেই ডান হাত, বাম হাত মিলিয়ে স্বাক্ষর করতেন। এটা অন্যায় করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করত। এ ধরনের বিধান কেন থাকবে যা ন্যায়ের পক্ষে না? তাই তুলে দিয়েছি।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন দেখে সুপারিশ রেখে যাবে ইসি
ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী কমিশনের জন্য বাস্তবায়নের সুপারিশ রেখে যাবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আমরা তাদের রিপোর্ট দেখেছি। ফরমালি বসতে পারিনি। আমাদের সময়ে তো আর জাতীয় নির্বাচন হবে না। কাজেই অনেক সময় আছে। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সামারি করার জন্য বলা হয়েছে। তারা আমাদের ভালো দিক এবং দুর্বল দিক কী দেখেছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। কমিশন সচিবালয় একটা খসড়া করেছিল। আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে পরবর্তী কমিশনের জন্য পরামর্শ রেখে যাব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখব। তারা যে সুপারিশ করেছে সেটা করা যায় কিনা সেটা আমরা দেখব। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ হিসেবে রেখে যাব।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে মো. আলমগীর বলেন, তারা একটা (প্রতিবেদনের) জায়গায় বলেছে, ভোটে কারচুপি হয়েছে বেশ কয়েকটা কেন্দ্রে। যেখানে কমিশন ব্যবস্থাও নিয়েছে। কমিশন অবহেলা করেছে, এমনটা বলেনি। তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি। তারা বলেনি যে, কমিশনের এমন সক্ষমতা ছিল অথচ ব্যবস্থা নেয়নি। অথবা এসব কেন্দ্রে জাল ভোট হয়েছে কিন্তু কমিশন বন্ধ করেনি। বরং কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তাদের রিপোর্টে বলা আছে। প্রশাসনে রদবদল করেছে এগুলোও আছে।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। এতে নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করে। বিএনপিসহ অন্য দলগুলো ভোট বর্জন করে। মূল প্রতিদ্দ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে। কিছু সহিংস ঘটনা ঘটে। রেলে অগ্নি সংযোগে প্রাণহানি হয়। তবে ভোটের দিন তেমন কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয়লাভ করে ফের সরকার গঠন করে।