× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভের শঙ্কা

আলাউদ্দিন আরিফ

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১২:০৯ পিএম

আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৪ ২১:৪৬ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

ঈদের ছুটির আগে তৈরি পোশাকসহ শিল্প-কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ। আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ ও রাজধানীর মিরপুর, মালিবাগসহ তৈরি পোশাক কারখানা অধ্যুষিত অঞ্চলে শিল্প পুলিশের কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের অন্যান্য ইউনিটকেও সতর্ক রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের বিষয়গুলো নিয়ে সভা হয়েছে। সেখানে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের সরকারি সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

শিল্প পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহাবুবর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বড় ধরনের শ্রমিক আন্দোলনের শঙ্কা নেই। তবে কোনো পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছি। সেখানে শিল্প-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কর্মকর্তা ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ও শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিল্প পুলিশ, বেপজা কর্তৃপক্ষ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তসহ-সংশ্লিষ্টরা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।’ 

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার পাঠানো প্রতিবেদনে ঈদের আগে বেতন-বোনাসের দাবিতে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বেতন-বোনাসের দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনকে পুঁজি করে কোনো কোনো মহল স্বার্থ হাসিলের সুযোগ নিতে পারে।’ ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর শিল্প পুলিশসহ পুলিশের সকল ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সদর দপ্তর থেকে। 

এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে ‘ডলার সংকট, বৈশ্বিক মন্দাসহ নানা কারণে তৈরি পোশাক শিল্পে মারাত্মক সংকট চলছে। অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে বড় ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।’ 

শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, দেশে আরএমজি ও নন-আরএমজি মিলিয়ে মোট কারখানা ৯ হাজার ১৭৭। মোট শ্রমিক ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ২১ জন। বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৬১৭। আর বিকেএমইএর তালিকাভুক্ত কারখানা ৬৮৫টি। এ ছাড়া বিটিএমসির ৩৩৭টি, বেপজার ৩৪৮টি কারখানা ও ২২টি পাটকল রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস ঈদের আগে পরিশোধ করতে হবে। কোনো কারখানায় বেতন-বোনাস বকেয়া পড়লেই শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসতে পারেন।

ঈদের এখনও বেশ কয়েকদিন বাকি, এর মধ্যেই বকেয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। গত ২৮ মার্চ বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ, পূর্ণ বোনাস ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরের জৈনা বাজারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন গুলশান স্পিনিং মিলসের শ্রমিকরা। তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত আট পুলিশ সদস্য ও প্রায় ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

এদিকে শনিবার লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বেঙ্গল সু ইন্ডাস্ট্রিজের শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। তারা রায়পুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নেন। সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। ঈদের ছুটি শুরুর আগে বেতন-ভাতার দাবিতে আরও কিছু এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঈদের ছুটির আগেই তৈরি পোশাকসহ সব শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে। একেক প্রতিষ্ঠান একেক সময় পরিশোধ করবে। নির্ধারিত কোনো সময় নেই। তবে ঈদের ছুটির আগে পাওনা সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে এবং দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ঈদের আগে বা ঈদের সময় কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। বেতন-ভাতা ও বোনাসের দাবিতে যাতে শ্রমিকরা আন্দোলনে না নামেন তা মালিকপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। কোনো কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিকপক্ষকে নিতে হবে।’

ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধ প্রসঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক মোশারেফা মিশু বলেন, ‘প্রায় প্রতিবছরই ঈদের আগে শ্রমিদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হয়। সভা-সমাবেশ করতে হয়। অনেক শিল্প মালিক ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করেন না। ফলে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হন। বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই শ্রমিকদের হিমশিম অবস্থা। তার ওপর বেতন-বোনাস না হলে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা