× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

উৎসবের আগে আরেক উৎসব

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৯:২১ এএম

আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৫ পিএম

ঈদকে ঘিরে যমুনা ফিচার পার্কে কেনাকাটা এখন তুঙ্গে। গভীর রাত পর্যন্ত থাকছে ক্রেতাদের ভিড়। শুক্রবার বিকালে। প্রবা ফটো

ঈদকে ঘিরে যমুনা ফিচার পার্কে কেনাকাটা এখন তুঙ্গে। গভীর রাত পর্যন্ত থাকছে ক্রেতাদের ভিড়। শুক্রবার বিকালে। প্রবা ফটো

উৎসব যেন প্রতিদিনই। এ হচ্ছে কেনাকাটার উৎসব। আসল উৎসব, অর্থাৎ ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার আগে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন ঈদবাজারে ছুটছে মানুষ। প্রতিটি দিন, এমনকি মধ্যরাত অবধি ক্রেতা-বিক্রেতার নিত্য কোলাহলে অন্যরকম রূপ দেখা যাচ্ছে রাজধানীর। সাধ ও সাধ্যের হিসাব মিলিয়ে যে যার মতো প্রিয়জনের জন্য পছন্দের জিনিস কেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নগরবাসী। তাতে প্রতিটি প্রসিদ্ধ বিপণিবিতান ঘিরে তৈরি হচ্ছে উপচে পড়া ভিড়। প্রতিদিনের তীব্র যানজট যেন ঈদ বোনাস!

রাজধানী ঢাকা এখন দারুণ ঝলমলে সাজে সেজে রয়েছে। অফিস খোলার দিনে বিকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত ক্রেতায় ক্রেতায় গমগম করছে শপিং মল থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার ফুটপাথে গড়ে ওঠা দোকানপাট। আর ছুটির দিনের চেহারাটা চোখে না দেখলে বোঝার উপায় নেই। অভিজাত শপিং সেন্টারগুলোতে সারা দিনই পিঁপড়ার সারির মতো নানা মডেলের গাড়ি জট পাকিয়ে থাকে। এসব শপিং মলে ছুটির দিনে ঢোকা যেমন কঠিন, বের হওয়া যেন আরও কঠিন। ফুটপাথকেন্দ্রিক ঈদবাজারের কারণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার সড়কে রীতিমতো অচলাবস্থা দেখা দেয়। বাস, রিকশা, সিএনজির চাকা ঘণ্টার পর ঘণ্টা থমকে থাকে অগণিত মানুষের ভিড়ের চাপে। আর্থিক অবস্থা যার যেমনই হোক, বেশিরভাগ মানুষই এসব মার্কেটে ঢু মারছেন অন্তত সাধ্যের মধ্যে, যাতে ন্যূনতম সাধটুকু মেটাতে পারেন। অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে অবশ্য দরদামের চেয়ে বেশি পাল্লা চলে এক ব্র্যান্ডের সঙ্গে আরেক ব্র্যান্ডের। রঙ, ডিজাইন, দামÑ এসব মেলাতে মেলাতে সময় যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। তাই অনেকেরই এক দিনে কিছুই হয় না। তাদের কেনাকাটায় বেরোতে হয় প্রতিদিনই। এই কেনাবেচার ধুন্দুমার পরিবেশ রমজানের প্রায় শুরুর দিক থেকেই দৃশ্যমান। প্রতিটি ছুটির দিনেই শপিং মলগুলো ঘিরে মানুষের ভিড় যেন আরও গাঢ় হয়ে ওঠে। অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ অবারিত থাকার পরও সবকিছু দেখেশুনে, নেড়েচেড়ে দেখার পর কেনার অভ্যাসটা এখনও হারায়নি, বরং আরও বেড়েছে বলা যায়। 

শুক্রবার (২৯ মার্চ ) এমনই এক ঈদমুখী ছুটির দিনে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, গাউছিয়া-নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কেনাকাটার জমজমাট দৃশ্য। বেশ কয়েকটি নামকরা ব্র্যান্ডের পোশাকের আউটলেট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তরুণদের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

নগরীর বিভিন্ন শপিং মল, ফ্যাশন হাউসের শোরুমগুলো সাজানো হয়েছে নানা রঙের পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রীতে। এবার ঈদ লাগোয়া পহেলা বৈশাখের কথা চিন্তা করে পোশাকের রঙ আর নকশাতেও ভিন্নমাত্রা এনেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। পছন্দ নিয়ে সমস্যা না থাকলেও ক্রেতাদের অনেকেরই ক্ষোভ রয়েছে দাম নিয়ে। গতবারের তুলনায় এবার দাম বেশি বলে জানিয়েছেন তারা। পরিবারের শিশুদের জন্য ঈদ পোশাক ছাড়াও জুতা কেনার দিকে ঝোঁক দেখা যাচ্ছে বেশি। শিশুরা নতুন পোশাকে ঈদে আনন্দ করলেই আসল সুখÑ এমনটা বলেছেন তাদের অভিভাবকরা।

নারীদের ঈদ পোশাকে এবার আধিক্য দেখা যাচ্ছে লাল, হলুদ, গোলাপি, কালো ইত্যাদি রঙের। ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট, মিরর ওয়ার্ক, আরি সুতার কাজের নকশা রয়েছে ট্রেন্ডে। বিগত কয়েক বছর ভারত আর পাকিস্তানের বাহারি পোশাক কেনার ধুম থাকলেও এবার সেই স্রোতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর তৈরি সুতি আর কম কারুকাজের পোশাকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা। সৌন্দর্যের চেয়ে স্বস্তিতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা। ছেলেদের পোশাকে চলছে চিকেনকারি আর সিকোয়েন্সের কাজ করা পাঞ্জাবির ট্রেন্ড। তবে হালকা কাজের সুতি ও সফট সিল্কের পাঞ্জাবি তরুণরা পছন্দ করছেন বেশি। সাদা, আকাশি, ধূসর, শ্যাওলার মতো ম্যাট রঙগুলো রয়েছে ট্রেন্ডে। পাঞ্জাবির পাশাপাশি একরঙা আর চেক শার্টও কিনছেন অনেকে। শো-রুমের পাশাপাশি অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগও রেখেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। সময় আর শ্রম বাঁচাতে কোনো কোনো ক্রেতা কেনাকাটার জন্য বেছে নিচ্ছেন অনলাইন মাধ্যমকেও। 

জমজমাট যমুনা ফিউচার পার্ক 

চোখধাঁধানো শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কে গতকাল শুক্রবার ছিল ক্রেতাদের ঠাসা ভিড়। প্রতিটি শোরুম ক্রেতায় সয়লাব হয়ে যায়। তাদের সামাল দিতে দোকানিরা হিমশিম খাচ্ছিলেন। অন্যদিকে ক্রেতাদের যানবাহন সামাল দিতে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদেরও বিশেষ বেগ পেতে হচ্ছে। 

সরেজমিনে যমুনা ফিউচার পার্ক ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষই সপরিবারে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। দোকানদাররা বলছেন, বেচাকেনায় ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। রমজানের শেষ ১০ দিন বেচাকেনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এখন পর্যন্ত বিক্রির পরিমাণ তাদের প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা বেশি। বাকি কয়েক দিনে সেটা আরও অনেক বাড়বে। 

শপিং মলটিতে রয়েছে আড়ংয়ের শোরুম। সেখানে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার অবস্থা ছিল না। কোনো পোশাক পছন্দ হলে দেখা যাচ্ছে সাইজ মিলছে না। এমনকি বিল পরিশোধের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও ক্লান্ত হয়ে পড়েন অনেকে।

টপ টেনের শোরুমেও দেখা যায় ক্রেতাদের বিপুল ভিড়। এই শোরুমে প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, শাড়ি থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের পোশাক, জুতা, কসমেটিকস পাওয়া যায়। দোকানটির ম্যানেজার জুবায়ের হোসেন জানান, নারীদের আগানোর ও সাদা বাহার ড্রেসগুলো ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। সব পণ্যেই দেওয়া হচ্ছে ৭ শতাংশ ডিসকাউন্ট। গত বছর ডিসকাউন্ট ছিল ৮ শতাংশ। শোরুমটিতে ভিয়েতনামি জুতা বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ থেকে ১৪০০০ টাকায়। তা ছাড়া বাচ্চাদের পোশাকের মধ্যে সারারা, গারারা ও নাইরাকাট খুব বিক্রি হচ্ছে এ বছর। এসবের দাম ৩০০০ থেকে ৯০০০ টাকা পর্যন্ত। রয়েছে ইন্ডিয়ান শার্ট ও পাঞ্জাবি। এসব পাঞ্জাবি ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ভারতীয় পাঞ্জাবির বিপুল সমাহার রয়েছে ব্র্যান্ড কিউ শোরুমে। দোকানটির ম্যানেজার শমসের আলী জানান, ফাইজান নামের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ১০ হাজার টাকায়। গত বছরের চেয়ে দাম বেশি হলেও বিক্রি ভালো। মফিদুল হক একটি পাঞ্জাবি, একটি শার্ট ও প্যান্ট কিনেছেন। তিনি বলেন, দাম বেশি হলেও পোশাকের মান ভালো। পরে আরাম পাওয়া যায়। প্রতিবছরই দুয়েকবার শপিং মলটিতে আসা হয়। দোকানদারদের ব্যবহারও ভালো। ক্রেতা হিসেবে বাড়তি চাপ পোহাতে হয় না। 

যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং মলটিকে কেন্দ্র করে কুড়িল বিশ্বরোডটিতে ট্রাফিক জ্যামের পরিমাণ প্রচুর বেড়ে যায়। এসব গাড়ির সিরিয়াল ঠিক রাখতে নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যস্ততা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। 

রিং রোড-কৃষি মার্কেট

মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর মার্কেটের সামনে এবার অস্থায়ী ভ্যানে দোকানপাট নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ওই মার্কেটের আশপাশের বিভিন্ন রাস্তায়ও অস্থায়ীভাবে পোশাক, জুতা ও প্রসাধনীর পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানই ওই অঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ভরসার জায়গা। প্রতিদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ভিড় করছেন এসব দোকানে। 

কৃষি মার্কেটে ভিড় ঠেলে মেয়ে নাজিফাকে নিয়ে কেনাকাটা করছিলেন রুমকি আক্তার। তিনি বলেন, অন্য মার্কেট থেকে কৃষি মার্কেটে কম টাকায় মধ্যবিত্তদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাপড়চোপড় কেনা যায়। তাই ছুটির দিনে তিনি মেয়ের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন। মানুষ বেশি থাকায় তাকে অনেক দেখেশুনে কিনতে হচ্ছে।

কৃষি মার্কেটের রাসেল শাড়িসের বিক্রয়কর্মী মোমিন বলেন, আমাদের মার্কেটে মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষরা বেশি আসেন। এবার এখন পর্যন্ত কেনাকাটা মোটামুটি ভালো। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বেচাকেনা তত বাড়বে।

এই মার্কটের আরেক ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের মার্কেট পুড়ে যাওয়ার আগে যত মানুষ আসত এখন তার অর্ধেকও আসে না। কারণ আমরা এখন ভ্যান কিংবা অস্থায়ীভাবে খোলা জায়গায় দোকান নিয়ে বসি। অস্থায়ীভাবে বসায় বেশি মালামাল নিয়ে বসা যায় না। ফলে ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো সবকিছু কিনতে পারেন না। তারপরও যা বেচাকেনা হচ্ছে খারাপ না।

কৃষি মার্কেটের পাশেই রিং রোডে অবস্থিত টোকিও স্কয়ারে রয়েছে নানা দামি নানা ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশীয় ব্র্যান্ডের দোকান। এ ছাড়াও এই সড়কের দুই পাশজুড়ে রয়েছে মাইক্লো, ইয়োলো, ইনফিনিটি, রিচম্যান, জেন্টেল পার্ক, আর্ট, ইজি, লোটো, লা-রিভ, কে ক্রাফট, বাটা, বে এম্পোরিয়াম, এপেক্সসহ নানা ব্র্যান্ডের দোকান। সবখানেই ভিড় উপচে পড়া। মধ্যবিত্তের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরা আসছেন এখানে। 

ফুটপাথে ফিক্সড প্রাইস 

অন্যবারের মতো এবার জমে উঠেছে রাজধানীর ফুটপাথগুলো। তবে দোকানিদের দাবি, বেচাবিক্রি অন্যবারের তুলনায় কম। গুলিস্তানের জীবন বীমা কর্পোরেশন ভবনের প্রবেশমুখে চৌকি পেতে বাচ্চাদের পোশাকসামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন ইয়ামিন হাওলাদার। তিনি জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে ক্রেতা অনেক কম। ঈদের আগের এই সময়ে কাস্টমার থাকে প্রচুর। গত বছর এ সময় দিনে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা বিক্রি হতো। সেখানে এখন সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান তার দোকানে প্যান্ট-শার্টের দাম ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। ফুটপাথে তুলনামূলক অল্পদামে পছন্দের পোশাক, গয়না, জুতাসহ অন্য প্রসাধনীসহ সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান ফুটপাথ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেয়েদের পোশাক, শিশুদের পোশাক, প্রসাধনী, পুরুষদের পোশাক যেমনÑ জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ক্যাপ, লুঙ্গি, মানিব্যাগসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন। কম বাজেটের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দ হয় এমন বাহারি নকশা ও রঙের সব পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে ফুটপাথের দোকানেও। তাই ক্রেতাদের কোনো না কোনো জিনিস পছন্দ হচ্ছে আর কিনেও নিচ্ছেন। গুলিস্তানের টিশার্ট ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া জানান, তার দোকানে ১৫০ থেকে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত গেঞ্জি রয়েছে। ৬৫০ টাকার গেঞ্জিই শোরুমগুলোতে বিক্রি হয় ৯০০ টাকা থেকে হাজার টাকায়। আমাদের খরচ কম তাই কম লাভে বিক্রি করি। 

গুলিস্তানের ফুটপাথের দোকানগুলোর প্রায় প্রতিটিতে কাগজে লেখা রয়েছে ‘এক দাম’। আবার কোথাও কোথাও ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘ফিক্সড প্রাইস’। দোকানিরা জানান, এখন দামাদামি করার সময় নেই। তাই একদাম ঠিক করে দিয়েছেন। 

পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের বেগম বাজার থেকে ছোট্ট শিশু ও পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন জীবন নামের এক কাপড়ের দোকানের কর্মচারী। তিনি বলেন, শুক্রবার তাই ঈদের কেনাকাটা শেষ করার জন্য বের হয়েছি। জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তাই ফুটপাথ থেকে পছন্দের পোশাক কেনার জন্য এসেছি। 

গুলিস্তানের ফুটপাথে ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে শার্ট বিক্রি করছেন সাজ্জাদ হোসেন। নিজেকে ওই দোকানের সেলসম্যান পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, তার দোকানে হাফ হাতা লিলেনের শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ টাকায়। এ ছাড়া বাচ্চা আইটেমের শার্ট পাওয়া যায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। আর বড়দের শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তিনি বলেন, আমাদের সেল বেশি তাই প্রফিট একটু কম করি। এবার বেচাবিক্রি একটু স্লো। সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা সবকিছুতেই কাটছাঁট করছেন। আগে একটি শার্ট বিক্রি করলে লাভ হতো ৭০ টাকা। এখন একটি শার্ট বিক্রিতে লাভ হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আমরা আগের চেয়ে পোশাক বেশি দামে কিনলেও বেশি দামে বিক্রি করতে পারি না।

এখানে পোশাক কিনতে আসা নিলুফা বলেন, আমি একটা গার্মেন্টসে চাকরি করি। ফুটপাথের মার্কেটগুলোই আমাদের ভরসা। বাচ্চাদের পোশাকসহ প্রায় সব ধরনের জিনিসই এখান থেকে কম দামে কিনতে পারি। এবার মোটামুটি কম দামেই সব পাচ্ছেন বলে জানান তিনি। 

ভিড়ে হাঁটা যায় না নিউমার্কেটে 

নিউমার্কেটে দিনে-রাতেও কখনোই ক্রেতাদের ভিড়ে হাঁটা যাচ্ছে না। রাস্তায় যানজট তৈরি হচ্ছে। একজন ব্যবসায়ী জানান, শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখবেন। কাল থেকে এ সময় আরও বাড়বে। রাত ১টা পর্যন্তও দোকানপাট খোলা থাকবে। ঈদের বাজার আরও জমে উঠবে। 

নিউমার্কেটে ঈদ কালেকশনে এবার আছে আলিয়া কাট গাউন, আরিয়া কাট ঘারারা, পাকিস্তানি আগানূর। গাউছিয়া মার্কেটের বিক্রেতা রনি বলেন, ক্রেতা যারা আসছে আলিয়া কাট গাউন, আলিয়া কাট ঘারারা নিয়ে তাদের আগ্রহ বেশি। তবে আলিয়া কাট নাম দিয়ে বিক্রি হলেও এই পোশাকটা মূলত প্রচলিত নকশার ঘারারা ও গাউন। প্রতিবার পোশাকগুলোর নতুন নাম দেওয়া হয় ক্রেতাদের কাছে পরিচিতির জন্য।

আড়ংয়ে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো

প্রতিবারের মতো এবারও দুই ধরনের পোশাক এনেছে আড়ং, যার একটি রেগুলার ও অন্যটি এক্সক্লুসিভ। দেশীয় সিল্ক, মসলিনের মতো দামি ফেব্রিকের সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি, পাঞ্জাবি সবই রয়েছে এই কালেকশনে। ঈদে এক্সক্লুসিভ কালেকশনের অন্যতম আকর্ষণ হাতের সুচিকর্ম।

আড়ংয়ের লালমাটিয়া আউটলেটে তিন বোন মিলে শপিং করতে এসেছেন তাসমিয়া জাহান। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসমীয়া বলেন, এখানে সবকিছু একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ ছাড়াও যেকোনো অনুষ্ঠানের কেনাকাটায় আড়ংয়ের কথা মাথায় আসে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জামাকাপড়ের মূল্যটাও বাড়ছে।

শিশুদের জন্যও রয়েছে নানা আয়োজন। সরেজমিনে আড়ংয়ের মেয়ে শিশুদের বাহারি রঙের স্কার্ট, কামিজ, থ্রিপিস এবং ছেলে শিশুদের জন্য টি-শার্ট, শার্ট, পাঞ্জবি-পায়জামার নতুন নতুন কালেকশন রয়েছে। এসব পোশাকের দাম ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা