প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৪:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৪ পিএম
বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা
বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার বাক্য পাঠ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘একটা মেজর ড্রামের ওপর বসে বাঁশি ফুঁ দিলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যায় না। একজন সামরিক বাহিনীর সদস্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে মানুষের মাঝে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব আসবে বলেই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার বাক্য পাঠ করেন। আর এটা নিয়েই বড়াই করে যাচ্ছে বিএনপি।’
বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা বলেন-২৫ মার্চ নাকি আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে গিয়েছিল। তাহলে যুদ্ধটা করল কে? বিজয় কে আনল? আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জিয়াউর রহমান তো বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেছেন। সামরিক অফিসার হিসেবে তিনি এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যে মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলেন, সেটা কে দিয়েছেন? আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। এটাও অকৃতজ্ঞরা ভুলে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন পাকিস্তানিদের পক্ষে চট্টগ্রামে মুক্তিকামী জনতার ওপর গুলি চালিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ভারতের বিরোধিতা করে বিএনপি নেতারা চাদর পোড়ায়। তাহলে বিএনপি নেতাদের বাসায় স্ত্রীদের যে শাড়িগুলো রয়েছে সেগুলো কেন পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে জীবন দিতে হয়েছে জিয়ার দায়িত্বে থাকা সেক্টরে।
তিনি বলেন, যারা আজ গণতন্ত্রের কথা বলে সেই বিএনপি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ তো এককদম এগোতে পারেনি। আমি বলি, এককদম এগোতে দেওয়া হয়নি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯ বছরই ছিল বাঙালি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের বছর। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাতে সময় পেয়েছেন মাত্র তিন বছর সাত মাস। যদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে তিনি গড়ে তোলেন এবং স্বল্পোন্নত জাতিসংঘের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায় করিয়ে দেন। এত অল্প সময়ে একটি প্রদেশ শোষিত বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন এবং একটি স্বাধীন দেশে রূপান্তরিত করে দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু। শুধু তাই নয় এ অল্প সময়ের মধ্যেই একটি সংবিধান আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন। যার মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিটি মৌলিক চাহিদার কথা উল্লেখ করা আছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ধ্বংস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করে এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। দুঃখের বিষয় হলো এতকিছুর পরও অনেকে বলছেন দেশে গণতন্ত্র নাই। বাংলাদেশের মানুষের নাকি কোনো উন্নতিই হয়নি। যারা এসব কথা বলে যাচ্ছে, এ ধরনের কিছু কর্মকাণ্ড আমরা স্বাধীনতার পর পর দেখেছি। একটি সদ্যস্বাধীন দেশ। এদেশ ছিল পরাধীন, যেখানে ৮০-৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। সেই মানুষকে বিজয় এনে দেওয়া একমাত্র বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে, সমর্থন দিয়েছে এবং পাশে দাঁড়িয়েছে আমরা তাদের সম্মাননা দিয়েছি। আমরা কৃতজ্ঞ জাতি এটার প্রমাণ আমরা বার বার দিয়েছি।
আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, দলের স্বাস্থ্য সম্পাদক ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি প্রমুখ।