ফারুক আহমেদ আরিফ
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪ ১০:৫১ এএম
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৪ ১০:৫৬ এএম
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে গত ৫২ বছরে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে এক ডিগ্রি। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পরিবেশসহ দেশের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের জীবনচক্রের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে চাষাবাদে অতিরিক্ত সেচ দেওয়ার ফলে বাড়ছে খরচ। এছাড়া পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেক কীটপতঙ্গের মৃত্যু হচ্ছে। যে কারণে বেড়েছে ক্ষতিকর পোকামাড়কের প্রাদুর্ভাব।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশীদের নেতৃত্বে এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩৫টি আবহাওয়া স্টেশনের ৪৩ বছরের তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘চেঞ্জিং ক্লাইমেট অব বাংলাদেশ ট্রেন্ড অ্যান্ড চেঞ্জ ডিটেক্টেড ইন ওয়েদার অবজারভেশনস ফ্রম ১৯৮০ টু ২০২৩ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। ড. বজলুর রশীদের নেতৃত্বে এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানাসহ নরওয়ের তিন আবহাওয়া বিজ্ঞানী।
এমন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের সঙ্গে আজ বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছেÑ ‘জলবায়ু কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ প্রভাব’।
দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। তা ছাড়া ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ হলেও তা দিনে দিনে চরম ভাবাপন্ন হয়ে উঠছে। ফলে দেশের কৃষি, জনস্বাস্থ্য, মৎস্য, জীববৈচিত্র্যসহ সামগ্রিক ক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে আধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তি সন্নিবেশ করা হয়েছে। আমাদের সরকার আবহাওয়ার বিদ্যমান পর্যবেক্ষণাগারগুলোর সঙ্গে কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস সেবার মান উন্নয়নে আরও ৭টি নতুন কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপনসহ কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে। এ ছাড়াও ৫টি আবহাওয়া ভূপৃষ্ঠ পর্যবেক্ষণাগার, ১৩টি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ৩টি স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড রিসিভিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ও বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা প্রদানসহ নিরাপদ বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণে জয়দেবপুরে ১টি আধুনিক ডপলার রাডার স্থাপন করা হয়েছে এবং রংপুরে অপর ১টি ডপলার রাডার স্থাপনের কাজ চলমান আছে।
বিশ্ব আবহাওয়া দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বিজয় সরণির বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে (মাল্টিপারপাস হল) আয়োজিত সভায় অংশ নিবেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ।
গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে ড. বজলুর রশীদ বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি বেড়েছে। অল্প সময়ে এত তাপমাত্রা বৃদ্ধি বড় ধরনের অ্যালার্মিং। আগে মার্চ মাসে তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে যেত কিন্তু ১৯৮০ সাল থেকে তা ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করেছে। বর্তমানে অক্টোবরেও তাপপ্রবাহ থাকছে। গবেষণায় ৪টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের ধরন, সূর্যালোক ও মেঘের পরিবর্তন।
তিনি জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ফলে সরাসরি কৃষি খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বৃষ্টিনির্ভর ফসলগুলোতেও সেচ দিতে হচ্ছে। তাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পূর্বাঞ্চল) খান ফয়সল আহমদ বলেন, ফসলে সেচের জন্য ২৮ শতাংশ ভূ-উপরস্থ ও ৭২ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হয়। আউশ ও আমন মূলত বৃষ্টিনির্ভর ফসল। আগে মে-জুন থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতো। বর্তমানে সেই ধারাবাহিকতা নেই। হঠাৎ হঠাৎ খরা দেখা দেয়, ফলে যখন সেচের দরকার নেই তখন সেচ দিতে হচ্ছে। আমন বৃষ্টিনির্ভর ফসল হলেও সেখানে সেচ দিতে হচ্ছে। আশির দশকে ৮০ ফুট হাউজিং দিয়ে গভীর নলকূপে পানি তোলা হতো। বর্তমানে অনেক জায়গার হাউজিং ১২০ ফুট লাগছে। এসব কারণে বোঝা যায় অনেক জায়গায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।
সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবেশের সঙ্গে আমাদের খাপ খাইয়ে চলতে হবে। আমরা ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। সেচের জন্য অল্টারনেট ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রাইং (এডব্লিউডি) পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা বাড়ছে। বৃষ্টিপাত কম থাকলে তা মাটি পর্যন্ত চলে আসছে। এটি মনিটরিং করতে হবে। লবণসহিঞ্চু ধানের জাত চাষ করতে হবে। এটি অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও করতে হবে।
বাংলাদেশে সেচযন্ত্র ব্যবহারের সংখ্যা ও ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য দিয়েছেন বিএডিসি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ড. মোছাম্মৎ শাহিনারা বেগম। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমরা সেচের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছি। জলবায়ু পরিবর্তন মাটির পানির ভারসাম্য, বাষ্পীভবন এবং কার্যকরী বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের মাধ্যমে সেচের পানির চাহিদাকে প্রভাবিত করছে । ১৯৮০-৮১ সালে গভীর নলকূপ ছিল ১০ হাজার ১৩১টি, শ্যালো ছিল ২০ হাজার ৯৩১টি এবং লো লিফট পাম্প ছিল ৩৫ হাজার ৯৫১টি। ২০২২-২৩ সালে এসে গভীর নলকূপের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৯৬৪টি, শ্যালো ছিল ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৪টি এবং লো লিফট পাম্প ২ লাখ ৬ হাজার ৫৪৮টি। সেখানে ৪৩ বছরের ব্যবধানে দেখা যায়, গভীর নলকূপের সংখা বেড়েছে ২৩ হাজার ৮৩৭টি, শ্যালো ১৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫২৩টি এবং লো লিফট পাম্প বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৭টি।
ড. বজলুর রশীদ তার গবেষণায় জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পশুপাখির জীবনচক্রেও প্রভাব ফেলছে। অনেক প্রাণী এই তাপমাত্রার সঙ্গে মানানসই হতে না পারায় প্রজননে সমস্যা হচ্ছে। তাদের চিরাচরিত স্বভাবে পরিবর্তন আসছে। যেমন গেল শীতে ডিসেম্বর মাসে কোকিল ডাকতে শুরু করে। পরবর্তীতে কয়েকদিন পর আবার যখন শীতের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে তখন ডাক দেওয়া বন্ধ করে দেয়। কোকিল ডাকে বসন্তে কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের আবহাওয়ার যে পরিবর্তন হচ্ছে পাখিরা সেটির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, দশক থেকে দশকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। এতে ঋতুর পরিবর্তন সময়মতো হচ্ছে না। এতে পশুপাখি ও কীটপতঙ্গের জীবনচক্রেও পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। বনভূমি কমে যাওয়ার কারণে পাখিরা খাবার পাচ্ছে না। তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মাছসহ জলজপ্রাণীর খাদ্যসংকট ও জীবনধারণও হুমকির মুখে পড়েছে। জলজপ্রাণী ডিম দিলেও তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জোনাকিপোকারা খাবার না পেয়ে মারা যাচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ার কারণে পাখিদের খাদ্যচক্রেও পরিবর্তন এসেছে। অর্থাৎ জল ও স্থলের উভয় প্রাণীই তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রতিবেদনে ড. বজলুর রশীদ বলেন, অসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু মশা বেশি জন্ম নিচ্ছে। এতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে পোকামাকড় ও মশা নিধন কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ কীটতত্ত্ব সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমআরএইউ) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ ফসলে মাকড় বড় ধরনের আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। জলবায়ুগত পরিবর্তন ও কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের ফলে ধানের হলুদ মাজরা পোকা, কালো মাথা মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো মাজরা পোকা, বাদামি ঘাসফড়িং এই চারটি পোকার অস্বাভাবিক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে ৭৫১টি কীটনাশক কোম্পানি আছে। গত বছর ১ হাজার ৩০০’র বেশি কীটনাশকের ফরমুলেশন দেওয়া হয়েছে। প্রাণিজগতের ৬৫ শতাংশ হচ্ছে পোকামাকড়। এদের মধ্যে ৯৫ ভাগ উপকারী ও মাত্র ৫ শতাংশ ক্ষতিকর। মানুষের খাদ্যের ৩৫ শতাংশ আসে পোকামাকড়ের পরাগায়নের মাধ্যমে। মৌমাছির জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩১ ডিগ্রি। ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা দাঁড়ালে মৌমাছি চাক থেকে বের হয় না। আবার ৮ ডিগ্রির কম হলেও বের হয় না। এখন তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তাতে মৌমাছির জীবনও শঙ্কায়। আগের মতো যত্রতত্র মৌচাক দেখা যাচ্ছে না।
গবেষণায় ড. বজলুর রশীদ দেখতে পান শীতকালে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সূর্যালোক কমেছে। গত ৪৩ বছরে সবচেয়ে বেশি সূর্যালোক কমেছে রংপুর বিভাগে। তারপর ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগে। অপরদিকে মেঘের পরিমাণ বেড়েছে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনায়। তবে শীতের সময় গড় তাপমাত্রা বাড়লেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমেছে। পার্থক্য সবচেয়ে বেশি কমেছে ঢাকা বিভাগে, তারপর রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে। প্রতি দশকে ঢাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমেছে গড়ে শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই পার্থক্য কমেছে রাজশাহী ও ময়মনসিংহেও। বিভাগ দুটিতে কমেছে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কারণ হিসেবে তিনি বায়ুদূষণকে সামনে এনেছেন। কেননা দূষণের ফলে দিনের উল্লেখযোগ্য সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকছে। ফলে সূর্যালোক কম পাচ্ছে।
শীতকালে সূর্যালোক কম পেলে ধান উৎপাদনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এগ্রোমেট ল্যাবের সমন্বয়ক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ নিয়াজ মো. ফারহাত রহমান বলেন, সূর্যালোক কমে গেলেও কুয়াশার মাত্রা বেড়ে গেলে ফলনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ২০২২ সালে সূর্যকিরণের সঙ্গে আমনের ফলনের সম্পর্ক নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফলনের সঙ্গে সূর্যকিরণের একটি সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যে ফলন পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। কেননা ২০২২ সালের সূর্যকিরণ ২০১৮-২০২১ সালের মধ্যে বেশি ছিল। সূর্যকিরণ বেশি পাওয়া গেলে সালোকসংশ্লেষণ বেশি ত্বরান্বিত হবে। তাতে উদ্ভিদ ভালো খাদ্যগ্রহণ করতে পারবে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আমন ও আউশের জমির পরিমাণ কমেছে বলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক তথ্যে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ১৯৭১-৭২ সালে দেশে আমন চাষ হতো ৭ দশমিক ১৮৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে। ২০২১-২২ সালে তা নেমে আসে ৫ দশমিক ৭২০ মিলিয়ন হেক্টরে। অর্থাৎ ৫১ বছরে আমনের জমি কমেছে ১ দশমিক ৪৬৪ মিলিয়ন হেক্টর। একই সময়ে আউশের চাষের এলাকা তিন মিলিয়ন হেক্টর থেকে ২০২১-২২ সালে ১ দশমিক ১৫৯ মিলিয়ন হেক্টরে নেমে এসেছে।