× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ

ঈদের আগে নাবিক-জাহাজ ফেরাতে তোড়জোড়

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ২১:২৭ পিএম

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৪ পিএম

ঈদের আগে নাবিক-জাহাজ ফেরাতে তোড়জোড়

ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ ঈদের আগেই ফিরিয়ে আনতে তোড়জোড় চলছে। বুধবার (২০ মার্চ ) জলদস্যুদের পক্ষ থেকে ফোন পাওয়ার পর থেকে এই আশা তরান্বিত হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কিছু বলছে না জাহাজের মালিকপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবকিছু স্বাভাবিক গতিতে এগোলে দ্রুত জিম্মি দশার অবসান হতে পারে। 

২৩ নাবিকসহ জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই হয় ১২ মার্চ। পরে ৪৫৫ নটিক্যাল মাইল জলপথ পাড়ি দিয়ে নৌযানটিকে নিজেদের জলসীমা সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানায় বিদেশি নৌবাহিনী। একপর্যায়ে এমভি আব্দুল্লাহকে উপকূলের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়। জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ। কিন্তু জিম্মি নাবিক কিংবা জাহাজের মালিকপক্ষ কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করছিল না জলদস্যুরা। ছিনতাইয়ের আট দিন পর বুধবার তারা ফোন করে বলে নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সূত্র আরও জানায়, যারা যোগাযোগ করেছে তারা কি আদৌ জলদস্যুদের পক্ষের কেউ নাকি ভিন্ন কেউ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অপকৌশল নিয়েছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করছে সরকার ও মালিকপক্ষ। একইভাবে জলদস্যুদের তরফ থেকেও জানার চেষ্টা থাকতে পারে, তাদের এজেন্ট প্রকৃত জাহাজমালিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে কি না। অর্থাৎ উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা তৈরির বিষয়টি বড় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আস্থা তৈরির পরই কেবল বড় পরিসরে আলোচনা বিস্তৃত হতে পারে। তবে সেই আস্থা তৈরির জায়গায় উভয় পক্ষ পৌঁছেছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। তাই এখন মূলত মুক্তিপণ নিয়ে দর-কষাকষির বিষয়টি আলোচনায় থাকতে পারে। 

তবে জাহাজের মালিকপক্ষের মুখপাত্র মিজানুল ইসলাম আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার তিনি শুধু বলেছেন, ‘আলোচনা চলছে। আলোচনা সফল হলেই বলা যাবে নাবিক ও জাহাজ কখন দেশে ফিরছে।’ জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আলোচনা চলছে। তাই বিশদ কিছু বলা যাচ্ছে না।’ 

যেসব কারণে ঈদের আগে মুক্তির আশা 

কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন, জিম্মি নাবিকদের পরিবার এবং জাহাজের মালিকপক্ষের কেউ কেউ ধারণা করছে, ঈদের আগেই জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব হতে পারে। যেসব যুক্তি তারা সামনে আনছে, এর মধ্যে রয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা মুসলিম। জিম্মি নাবিকরাও মুসলিম। এখনই একই জাহাজে জিম্মি ও জলদস্যু একই সঙ্গে সেহরি ও ইফতার করছে। সামনে ঈদ। জিম্মি নাবিকরা ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ঈদের আগেই মুক্ত হতে। এই আকুতি মালিকপক্ষ যেমন জানে, তেমনি জলদস্যুরাও জানে। ধর্মীয় কারণে জলদস্যুরা তাদের দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। 

দ্বিতীয় আশার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ২০১০ সালে এমভি জাহান মনি জিম্মি হওয়ার আরও বিলম্বে  জলদস্যুরা যোগাযোগ করেছিল। এবার একটু দ্রুত করেছে। তাই আলোচনাও এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে কিছুটা আগে। এ ছাড়া আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার অনেক বিষয়ে কথা বলতে সহজ হবে। এতে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। সময়ও কিছুটা কম লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

তৃতীয় কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, জাহান মনি জিম্মি হওয়ার পর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে সামরিক চাপ ছিল না। এবার এমভি আব্দুল্লাহর ক্ষেত্রে সামরিক চাপ তৈরি হয়েছে। সোমালীয় পুলিশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ও ভারতীয় নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতির খবরটি জলদস্যুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি ভাবতে বাধ্য করবে নিশ্চয়। তাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুতসময়ের মধ্যে মুক্তিপণ নিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করে দেওয়াও হতে পারে জলদস্যুদের কৌশলগত কাজের একটি। 

তিনটি কারণ পর্যালোচনার পর ধারণা করা হচ্ছে, জলদস্যুরা এবার দ্রুতই মুক্তিপণবিষয়ক আলোচনা শেষ করতে পারে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর স্বল্পসময়ের মধ্যেই যদি জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তাহলেই এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি শেষ হতে পারে। 

জাহান মনির চেয়ে কম সময়ে জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের আশাবাদ প্রকাশ করে ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘জাহান মনির ক্ষেত্রে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এবার কিছুটা কম সময় লাগবে বলে আশা করছি। কারণ জলদস্যু ও জিম্মি দুই পক্ষই মুসলিম, রমজান মাস এবং ঈদের মতো ধর্মীয় উৎসবের বিষয়গুলো বিবেচিত হতে পারে। আবার মুক্তিপণ পেলে সামরিক চাপের মুখে থাকা জলদস্যুরা সময় দীর্ঘায়িত করার ঝুঁকি নেবে না- এটা ধারণা করা যায়।’   

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা