চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:০৪ পিএম
গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরের দিকে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এর পরপরই জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে নেয় জলদস্যুরা।
সোমালিয়ান জলদস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি হাইজ্যাক করার পর প্রথম দিকে জিম্মি নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিলেও গত তিন দিন ধরে তা বন্ধ রয়েছে। সবশেষ গত শুক্রবার যোগাযোগ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে নাবিকদের কথা হয়নি। মুক্তিপণ চেয়েও যোগাযোগ করেনি জলদস্যুরা।
তবে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসাইন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ না হলেও তাদের কাছে যে তথ্য আছে সেটি হলো- জাহাজে অনবোর্ড থাকা সব নাবিক সুস্থ আছেন।
শাখাওয়াত হোসাইন বলেন, ‘জাহাজটি এখনও আগের অবস্থানে রয়েছে। গতকালের মতো আজ এখন পর্যন্ত জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তারা সবাই সুস্থ আছেন, নিরাপদে আছেন।’
এর আগে গত শুক্রবার জিম্মি নাবিকদের তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয় জলদস্যুরা। স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি পান নাবিকরা।
সেদিন এমভি আব্দুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ছোট ভাই আবদুল্লাহ খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভাইয়া জাহাজের স্যাটেলাইট ফোন থেকে কল করেছিল। এক মিনিটের মতো কথা বলেছে। সবাইকে অল্প সময়ের জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দিয়েছে তারা ( জলদস্যু)।’
এদিকে জাহাজটির ২৩ নাবিকের পরিবারে উৎকণ্ঠা বেড়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি অভিযানের খবরে। ভারতের নৌবাহিনী এক্স বার্তায় জানিয়েছে, তারা জলদস্যুদের কবল থেকে মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন নামক বাল্ক ক্যারিয়ার উদ্ধার করেছে। অভিযানের সময় জাহাজে থাকা ৩৫ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে; উদ্ধার হয়েছেন ১৭ নাবিক।
এমন তথ্য প্রচারের পর বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা ভয়, ভারতীয় নৌবাহিনী যদি এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করে এবং যদি গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, তাহলে নাবিকদের বিপদ হতে পারে। ভারতীয় বাহিনী যদি অভিযান শুরু না-ও করে, জলদস্যুরা যদি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের ওপর চড়াও হতে পারে।
গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে দেড়টার দিকে জাহাজ থেকে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এর পরপরই জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে নেয় জলদস্যুরা।
এরপর সেখান থেকে জাহাজটিকে চালিয়ে ১৪ মার্চ জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সোমালিয়ার গারাকাদ বন্দরের কাছে নোঙর করে। এরপর শুক্রবার জাহাজটির নোঙর তুলে ফেলা হয় এবং দুপুর থেকে সেটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে জাহাজটি সোমলিয়ার গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়েছে জানা যাচ্ছে।